নিজস্ব প্রতিনিধি,বাসন্তী—শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার বাসন্তী ব্লকের ফুলমালঞ্চ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা।গত রবিবার রাত থেকে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে এলাকায় কার হাতে ক্ষমতা থাকবে সেই নিয়ে শুরু হয় গোলাগুলি,বোমাবাজী এবং অগ্নি সংযোগের মতো ঘটনা। আর এই গোলাগুলিতে মঙ্গল বার সকালে মৃত্যু হয় সাহাবুদ্দিন সরদার (২৭)নামে এক তৃনমূল কর্মী সমর্থকের। পাশাপাশি যথেচ্ছ গোলাগুলিতে দুটি গোরু গুলিবিদ্ধ হয় এবং অগ্নি সংযোগ বেশ কয়েকটি বাড়ী পুড়ে যায়। পুলিশ ঘটনায় অভিযুক্ত তিন জন কে গ্রেফতার করেছে।বুধবার সকালে গুরুতর জখম একটি গরুর মৃত্যুও হয়। আর এমনই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে এলাকার সাধারণ মানুষজন রয়েছেন আতঙ্কে।পাশাপাশি এলাকায় রয়েছে চরম চাপা উত্তজনা।বুধবার সকালে সাহাবুদ্দিনের মৃতদেহ এলাকায় আনার সময় বাসন্তীর শিমূলতলা মোড়ে প্রচুর লোকজন জমায়েত হতে থাকে।পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বাসন্তী থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী শিমূলতলা মোড়ে গিয়ে লাঠী উঁচিয়ে ভীড় করে জমায়েত হওয়া লোকজনদের কে হঠিয়ে দেয়। এরপর বেলা বাড়ার সাথে সাথে এলাকায় পুনরায় যাতে করে কোন উত্তেজনা পরিস্থিতি তৈরী না হয় তার জন্য এদিন সকাল থেকেই বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জোনাল)ইন্দ্রজিৎ বসু নেতৃত্বে র্যাফ,কমব্যাট ফোর্স সহ প্রচুর মহিলা পুলিশ এলাকায় তৎপরতার সাতে ঢহলদারী করতে থাকেন।অন্যদিকে সাহাবুদ্দিনের মৃতদেহ তার বাড়ীতে পৌঁছালে প্রচুর লোকের জমায়েত হয় এবং সাথে সাথে মৃতদেহ কবরস্থ করেন।বাসন্তী ব্লকের মূলতৃণমূল সংগঠনের সভাপতি মন্টু ওরফে আব্দুল মান্নান গাজী বলেন “এই ঘটনায় যারা দোষী তাদের কে অবিলম্বে গ্রেফতার করে শাস্তিদিক পুলিশ প্রশাসন এবং এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার আবেদন করেন”।
অন্যদিকে মৃতের স্ত্রী তসলিমা সরদার বলেন “আমার স্বামী কাশ্মীরে সোনা পালিশ করার কাজ করতো। কোন রাজনৈতিক দল করে না। বাড়ীতে এসেছিল ধান কাটার জন্য। মঙ্গলবার সকালে ধান কাটতে যাওয়ার সময় ওকে একা পেয়ে খুন করে,যেহেতু আমার বাবা জাকির সেখ মূল তৃণমূল দল করে বলে। আমি দোষীদের উপযুক্ত শাস্তীর দাবী করছি।”
এদিন দুপুরে ফুলমালঞ্চ পঞ্চায়েতের লেবুখালি মাদ্রাসার মোড়ে চলে আসেন ডিআইজি(প্রেসিডেন্সী রেঞ্জ) রাজেশ কুমার যাদব এর নেতৃত্বে অন্যান্য পুলিশ আধিকারীকরা।তাঁরা এলাকা পরিদর্শন করেন এবং ঘটনার বিবরণ শোনেন। পরে সেখানে আবার হাজীর হয় পাঁচ সদস্যের এক সিআইডি’র প্রতিনিধির দল। তাঁরা সেখানে গিয়ে ছবি তোলেন এবং ঘটনার নমূনা সংগ্রহ করেন। যদিও সিআইডির প্রতিনিধি দলটি প্রথমে বাসন্তী থানায় গিয়ে গ্রেফতার হওয়া তিনজন কে ঘটনা সম্পর্কে জেরা করে জিঞ্জাসাবাদ শুরু করেন।
বুধবার সকাল থেকে অগ্নিগর্ভ বাসন্তীতে শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যমাত্রা রেখে ব্যাপক পুলিশি তৎপরতা শুরু হওয়ায় এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা শান্তির আশায় চাতকের মতো অপেক্ষায় রয়েছে।