বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী মানসী সেনের সহিত সঙ্গীতের অতীত, বর্তমান ও তার সঙ্গীত সাধনার দিন গুলি কেমন ছিল, তা নিয়ে একান্ত আলোচনায় সব খবর নিউজ পোর্টাল এর প্রতিনিধি সুমন ভূঞ্যা।

0
3608

“সারা জীবন সঙ্গীতের সেবা ও সাধনা করে যেতে চাই……………মানসী সেন”
একাধারে লেখিকা আর একাধারে গুনী সঙ্গীত শিল্পী। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এক ছোট্ট গ্রাম এগরায় জন্মগ্রহন। পারিবারিক অসীম স্নেহে বড় হতে থাকা। গানের টানেই মাধ্যমিক পাশের পরেই কোলকাতা পাড়ি দেওয়া। রবীন্দ্রভারতীতে মার্স্টাস ডিগ্রী শেষ করা। পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে চলতে থাকে গানের তালিম। আধুনিক, ক্লাসিকেল, শাস্ত্রীয়, রবীন্দ্র সঙ্গীত সব ধরনের গানে পারদর্শী হয়ে ওঠা। বহু গুনী মানুষের সহচর্যে তার শিল্প সত্ত্বা লালন পালন ও বাঁচিয়ে রাখা। অসংখ্য প্রতিকূলতা সত্ত্বেও প্রিয় বন্ধু বান্ধব ও জীবন সাথী স্বামীর পরম সহচর্যে ও ভালোবাসায় তার সুরের রাজ্যে অবাধ বিচরনের অনুকুল পরিবেশ গড়ে দেয়। এর পর ধীরে ধীরে টলি ছেড়ে বলিতে পা দেওয়া। এর পর যশরাজ চোপড়ার স্ত্রী মিসেস পামেলা চোপড়ার প্রোডাকসান হাউসে সফলতা ও সুনামের সহিত দীর্ঘ দিন কাজ করা। বহু মেগা সিরিয়াল, আর্ট ফিল্ম, হিন্দী সিনেমায় তিনি প্লেব্যাক করেছেন। এহেন গুনী ও দরদী শিল্পী মানসী সেন তার সেই চলতে থাকা কর্ম জীবনের কিছু অভিজ্ঞতার ডালি তুলে ধরলেন সব খবরের এর প্রতিনিধি সুমনের সামনে…………
প্রঃ – গানের প্রতি ভালোবাসা বা পরিচয় কি ভাবে?
উঃ – আমার বাবা ছিলেন একজন ডাক্তার। আর. জি. কর. -এ মেডিকেল পড়ার সময় উনার সিনিয়র গ্রেট কম্পোজার শ্ৰী নচিকেতা ঘোষ, পুরবী দত্ত, জয়া বিশ্বাস, এনাদের দেখে মিউজিকের প্রতি অনুপ্ৰাণিত হন। পরবর্তীকালে তারই ফল আমার এক টুকরো সঙ্গীত সাধনা।
প্রঃ – প্রথম গুরু কে? কি ভাবে পথ চলা শুরু হল, একটু যদি সংক্ষেপে বলেন………

উঃ – পারিবারিক ভাবে আমার বাপের বাড়ির সকলেই সঙ্গীতমুখী মানুষ। তাই প্রথম গুরু সেই অর্থে আমার বাপের বাড়ি। আর অফিসিয়ালি প্রথম গুরু শ্রী অরবিন্দ মন্ডল। পরে শ্ৰী অনন্ত মাইতি, শ্রীমতী মিনতি অগাস্থি। আমি এগরার মেয়ে। অনেক যত্ন আর.ভালোবাসায় ওখানকার মানুষ আমাকে উৎসাহ দিত। পারিবারিক পরিচয়ের ভিত্তিতেই আমার এক দাদা তথা পালক পিতা দেবু দা (কমলেশ নায়েক) তার স্নেহের ছায়াতেই অনেক ভাবেই দিশা দেখান। শুরু হয় সাবডিভিশান থেকে ডিস্ট্রিক কম্পিটিশানে নাম লেখানো এবং ফাস্ট হওয়া। তারপর আকাশবানীর পরীক্ষায় প্রবেশ এবং ঈশ্বরের কৃপায় ওখানকার শিল্পী হওয়া।
কোলকাতায় আমার আশা মাধ্যমিক দেওয়ার পর। ক্লাস Xii – MA পর্যন্ত রবীন্দ্র ভারতী ইউনিভারসিটি আমার শিক্ষা। আমার শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তালিম পন্ডিত শ্ৰী কুবের সেনগুপ্ত এর কাছে। বিমান মুখোপাধ্যায় , পুরবী দত্ত, অভিজিত বন্দোপাধ্যায়, অনল চট্টোপাধ্যায় প্রমুখরাও আমার শ্রদ্ধেয় গুরু অন্যান্য সঙ্গীত শিক্ষায়।

প্রঃ – গুরু অনন্ত মাইতি সম্পৰ্কে যদি কিছু বলেন। শুনেছি আপনার নজরুল সঙ্গীত সাধনায় উনার এক বিশাল অবদান রয়েছে?
উঃ – গুরু অনন্ত মাইতি’র স্নেহযত্নেই আমার নজরুল গীতির প্রতি অনুরাগ ।ইম্প্রোভাইজেশন কি করে আরোপিত হয়ে নান্দনিক মাত্রা আনে,তা উনার কাছেই জানা ।

প্রঃ- আলাপের দিন গুলো থেকে আপনার মুখে প্রায়ই গুরু বোন রত্না দি’র কথা অনেকবার শুনেছি। উনার সম্পৰ্কে যদি কিছু বলেন………

উঃ –  রত্নাদি (আইচ ভৌমিক)তখন এম এ ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রী,আর আমি ইলেভেনে। আমার মা নিশ্চিন্ত মনে ওনাকে আমার লক্ষ্য নজরের ভার দিলেন – কোথায় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের তালিম নেব । উনিই নিয়ে গেলেন গুরু শ্রী কুবের সেনগুপ্তর কাছে।

প্রঃ – মূলত কি ধরনের গান গাইতে ভালোবাসেন?
উঃ – আমি মেলোডি গান শুনতে এবং গাইতে ভালোবাসি।
পুরোনো বা নতুন যাই হোক না কেনো,যা ইফেকটিভ শোনাবে এবং অবশ্যই সেটা সুরুচি সম্পন্ন হতে হবে। যার মধ্যে “আমায় দেখো” টা না থেকে একটা “শিল্পকলা” থাকবে।
প্রঃ – বর্তমান দিনের গান আর পুরোনো দিনের গান…এই যে বিভাজনটাকে ঠিক কি ভাবে দেখেন?

উঃ – পুরানো এবং নতুন গানের মধ্যে বিভাজনটা নিশ্চয় আছে। আগে শিল্পের জন্য এবং শিল্পীর ওজন অনুযায়ী গান তৈরি হত। এখনতো তা হয় না। এখন আগে গান তৈরি হয়, পরে তা কন্ঠ শিল্পীরা যে যার মতন বেছে নিয়ে গাইতে থাকেন। আগের দিনে ভয়েস থ্রোয়িং নিয়ে চর্চা করতেন (যে ভাবে বাচিক শিল্পীরা করে থাকেন), এখন সে প্রয়াস অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নেই। ভোকাল টোনে কিভাবে সাইনটিফিকলি থ্রোয়িং করার দরকার এখন সেই অনুশীলন নেই। এটা আমার কাছে অন্ততঃ হতাশার। চেহারা না দেখলে আলাদা করে গলা চেনাও যায়না বেশীর ভাগই ! তারপর সাদামাটা হোক আর রেওয়াজী গলাই হোক , গানের কাব্যিক দিকের ‘মেলোড্রামায়’ স্বকীয়তা দেখা যায় না, কায়দা কানুন তার তাগিদে আর ভালো সাউন্ড সিস্টেম- এ সবই ঢাকা পড়ে যাচ্ছে ।
প্রঃ – ভালো কথা, ভালো সুর সে ভাবে আর তৈরি হচ্ছেনা। খামতি টা কোথায়?

উঃ – ভালো সুর, ভালো কথা দিয়ে গান এখনও তৈরি হচ্ছে , শুধু সেগুলো সঠিক ভাবে প্লেস হচ্ছে না। অনেকটা তোয়াজ করা বিনিয়োগ।
প্রঃ – ট্যালেন্ট এর অভাব নাকি সময়ের সঙ্গে তাল মেলানোর চেষ্টা?

উঃ – ট্যালেন্ট এখন অনেক বেশীই। তাল মেলানোর চেষ্টাতো চিরদিনই ছিলো থাকবে – সেটাই প্রাসঙ্গিক। কিন্তু শিল্পটা এখন শুধুই তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ার প্রোডাক্ট হয়ে যাচ্ছে, ক্লাসিক হতে পারছে না।
প্রঃ – গানতো একটা আধাত্মিক ব্যাপার, সাধনার।  প্রতি দিন কতটা অনুশীলন দরকার?
উঃ – ভারতবর্ষ আধ্যাত্মবাদের দেশ গো,যেখানে সৃষ্টি রামায়ন , মহাভারত। Spirituality আছে বলেই তো লতা মঙ্গেশকর, জাকির হুসেন, প্রমুখরা আজও কিংবদন্তী। প্রতি দিন কতক্ষন অনুশীলন করা দরকার, তার থেকেও দরকার অনুধাবন করা। সারাক্ষনই তার অনুরনোন থাকতে হবে। শাস্ত্ৰীয় সঙ্গীত প্রাক্টিস করার চেয়ে শোনার সময় বেশী দেওয়া দরকার।
প্রঃ – গান নিয়ে কি ভাবে কাটে আপনার সারা দিন?
উঃ – সৌভাগ্যবশত আমার স্বামী আমার দীক্ষা গুরু।  তাই আমি সারা দিনই সঙ্গীতময় থাকলে উনি খুব খুশি থাকেন।
কিন্তু মুশকিলটা আমি নিজে। বড় একান্নবর্ত্তী পরিবারে বিয়ে হওয়া এবং বাড়ির বড় বৌমা হওয়ার কারনে আমাকে গোটা সংসারটাকে আগলে রাখতে হয়েছে। সেখানে অনেক সদস্যের দায়িত্ব ধর্ম।
এ দেশের আর পাঁচটা মেয়ের মতো ওই দিক থেকেও সমাদরে রাখতে চেয়েছি। তাই দুটো নিয়ে আমার সারাদিন।
তাছাড়া খুব ছোটো খাটো লেখার জগত ও আছে আমার। অগোছালো ভাবে কিছু লিখতাম। এক দিন আলাপ হলো ‘অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়’-এর (সাহিত্যক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় এর ছেলে) সাথে বর্ত্তমান পত্রিকার অফিসে। উনার উৎসাহে তথ্যকেন্দ্রে লেখা শুরু করি। তার কিছু দিন পরেই পরিচয় হয় জয় গোস্বামীর সাথে। চেষ্টা থাকে সরলীকরনে কিছু লেখার।

প্রঃ – আপনার অনেক এলবাম রয়েছে, আপনি প্লেব্যাক সিঙ্গারও। কিছু যদি বলেন এ নিয়ে।
উঃ – হ্যাঁ, এলবাম কয়েকটা করেছি, কিছু রিমেক গান, আবার নতুন গানেরও। শেষ যেটা, পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আট খানা গান।
প্রঃ – পুলক বাবুর সঙ্গে আপনার পরিবারের একতা মধুর সম্পর্ক ছিল। তাঁর হঠাত্ এ ভাবে চলে যাওয়াটা কতটা হৃদয় বিদারক ছিল আপনার কাছে?
উঃ – পুলকদার চলে যাওয়া টা একটা বিরাট শূন্যতা।
প্রঃ – সঙ্গীত জগত কি তার অভাব অনুভব করেন আজকের দিনে????
উঃ – ওই রকম সহজ সাবলীল শব্দের ফুলদানি আর পরিমিতিবোধের প্রমান সত্যিই আজ নেই । আজ অধিকাংশই বক্তব্যের বাক্স । যেখানে ছন্দের চেয়ে ছন্নছাড়া র প্রকোট বেশী । আধুনিকতা এবং প্রাসঙ্গিকতা, এই সবকিছুকেই শালীনতা কিম্বা ছন্দের প্রতিক্রিয়ায় বাঁধার নাম পুলকদার বন্দোপাধ্যায়।

গীতিকার পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে..
প্রঃ – আপনার সঙ্গীত জীবনের র্টানিং পয়েন্ট কি?
উঃ – মহা সমুদ্রে আমার মতন একজনের সঙ্গীত জীবনের টার্নিং.পয়েন্ট ভাবলে একটু লজ্জাই লাগে।
প্রঃ – আপনি মিসেস চোপড়ার প্রোডাকশানে দীর্ঘ দিন কাজ করেছেন। আপনার মুম্বাই পাড়ি দেওয়া আর সেই কর্ম জীবনের অভিজ্ঞতা যদি একটু সংক্ষেপে বলেন।

উঃ – মুম্বাইতে চোপড়া প্রোডাকশানের “মেরি আওয়াজ শুনো” তে আমায় যাওয়া এবং জয় হওয়া। তখন আমি সদ্য বিবাহিত একুশ বছরের মেয়ে। আমার জীবনের সে সময়টা একটা স্বপ্নের সুদিন ছিল। ভাবতে পারিনা একটা ইন্টার ন্যাশানাল কর্মযোগ্যে আমি কোন আসন পাব। আমার স্বামী, আমার বাবার ঐকান্তিক আগ্রহে আমার সেই যাত্ৰা।
মিসেস চোপড়া (পামেলা জী) , সঞ্জীব কোহেলী জী, অন্নু কাপুর জীর গভীর স্নেহ আর সহচর্য্যে আমার আজও বুক ভরানো। জ্ঞান ও গুনীর এবং শৃ ঙ্খলার এক মার্গ দর্শন।
প্রঃ – মুম্বাই থেকে কেন ফিরে এলেন?
উঃ – মুম্বাই থেকে ফেরত আসার.কারনও আমি নিজেই। স্বামীর চাকরি ওখানে জুটল না। বেঙ্গল লজে দীর্ঘ দিন থেকে খরচা চালানো , অথবা ঐ বয়সে আত্মীয় পরিজন হীন ঐ শহরে একা ঐ হোটেলে পড়ে থাকার সাহস বা সামর্থ্য সেদিন ছিল না। আমার স্বামীর দেওয়া অবাধ স্বাধীনতা উপেক্ষা করেই চলে এসেছিলাম তখনকার মতো। আজ হলে হয়তো হতো না। এর পরের পর্ব পা রাখলো আমার মা হয়ে ওঠার ভূমিকায়। আমার কোলে এলো,আমাদের ছেলে ‘শ্রমণ’ ।
পরে আবারও ওদের ডাকে গিয়েছিলাম। আমি, আমার ছেলে সহ স্বামী এবং পাপু (প্রদ্যোত দে সরকার, খুব ভালো গায়ক)। সেবার হঠাৎ ই গুলশান কুমার খুন হলেন। আর ওদের প্রোজেক্ট পিছলো। আবার ফিরলাম। আর ওদের প্রোজেক্ট এগলো না। আমারও যাওয়া হলো না। (এই প্রোজেক্ট থেকেই আজকের সুনিধি চৌহান। ওর পরের বছরই আমি ছিলাম ঐ প্রোজেক্ট এ।

প্রঃ – জীবনে এমন কোন স্মৃতিময় ঘটনা (ভালো হোক বা মন্দ হোক) যেটা আজও মনকে আলোড়িত করে?
উঃ – ক) আমার বাবার হঠাৎ চলে যাওয়া।
খ) 2016 -তে রবীন্দ্র সদনে আমার একক প্রোগ্রাম এটা বড় সমাদরের।
প্রঃ – কিছু মনে করবেন না, আজকাল গানের কথা গুলো.কেমন যেন সস্তা হয়ে যাচ্ছে, কেন এমন হচ্ছে? সে ভাবে সৃষ্টি হচ্ছে না বলে না কি ভালো শ্রোতার অভাব?
উঃ – মানুষের শিক্ষার সঙ্গে যদি দীক্ষা না মেলে, আর Vulgarity -এর বিনাশ যতক্ষন না আটকানো যায়, সমস্ত সংস্কৃতিই সস্তা হতে থাকবে।
প্রঃ – বর্তমান দিনে গানের যে রিয়েলিটি শো গুলো হচ্ছে, এগুলোকে কেমন চোখে দেখেন? প্রতিভার কি সঠিক মূল্যায়ন হচ্ছে?
উঃ – আমি ভালো চোখে দেখছি না। এতগুলো ছেলে মেয়ে যে উৎসাহ নিয়ে এত সময় দিয়ে লেগে থাকে, এক বছরের পরে ওদের কজনের কোন দিকে মূল্যায়ন হয় আমি বুঝি না। আর রেকর্ড গানটাকে পরম যত্নে যারা প্রেজেন্ট করছে, তাদের নিজস্বতাকে টেনে বার করে কোন কাজের জগতে প্রতিষ্ঠার বাতিগুলো নিজস্বতার মান নির্নয় করছে?
বড় দুঃখ হয় গো,মানুষ দৃষ্টান্ত হতে চায়না, চায় তাৎক্ষনিক প্রতীক হতে ! এতে মূল্যায়ন হয় না, হয় মন ভজায়ন।
প্রঃ – কোন কোন টেলিফিল্মে কাজ করেছেন?
উঃ – সে তো অনেক। তিথির অতিথি, তমসারেখা, শ্রীচৈতন্য, একফালি চাঁদ, সুখ, বামা খ্যাপা, চারুলতা – আরও অনেক।
প্রঃ – কর্মসূত্রে আপনি বহু গুনি মানুষের সান্নিধ্য পেয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম প্রিয় কয়েকজনের নাম বলুন?

উঃ – পামেলা চোপড়া ,সঞ্জীব কোহলি, শ্রী সলিল চৌধুরী,পুলক বন্দোপাধ্যায়,অভিজিৎ বন্দোপাধ্যায়, অন্নু কাপুর ।

প্রঃ – এমন কোন অপ্রীতিকর ঘটনা যেটা ভেবে আজও মন তিক্ত হয়ে ওঠে?

উঃ – আমার সহজ মনের সরলীকরণ অনেকের কাছেই অনেক জটিল অঙ্কের ,-যেটা আমাকে যন্ত্রণা দেয়, “মানুষের মেলায়’- ‘ব্যাক্তিত্ব’ হীন , সংকীর্ণ জীবই দেখতে পাই।
প্রঃ – আজকাল অনেকেই দ্রুত সাফল্য লাভের জন্য সটকার্ট পথ খোঁজে, এটা কতটা ভয়াবহ?
উঃ – সাফল্য বিষয় টা অধিকার না হয়ে অর্জন করার মাধ্যমে আসে,তাহলে তার কোনো সর্টকার্ট পথে আসে না, সাধনা এবং দর্শন বিহীন যে কোনো বিষয়ই ভয়াবহ ।
প্রঃ – এই ইনডাস্ট্রিতে টিকে থাকার জন্য কতটা লড়াই করতে হয়?
উঃ – অ্যাডজাস্টমেন্ট ও বিষয় মুখী হয়ে থাকার লড়াই ।
প্রঃ – মনের মধ্যে কোন অভিমান বা ক্ষোভ?
উঃ – অভিমান একটাই-সরল এবং সংস্কারপন্থী হওয়ার জন্য সংস্কৃতির জগতে আমি উপেক্ষিতা।
প্রঃ – মুম্বাই থেকে আবার ডাক এলে যাবেন?
উঃ – নিশ্চয়ই যাবো ।
সাবিত্রী চ্যাটার্জি সঙ্গে
প্রঃ – লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে কখনো একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়েছে?
উঃ – না লতাজীর সাথে একসঙ্গে কোনো কাজ ছিল না, উনি তো আমদের ডাইরেক্টর ছিলেন ।
প্রঃ – এমন কোন স্বপ্ন যা আজও মনের মধ্যে লালন পালন করে চলেছেন?
উঃ – স্বপ্ন একটাই- নির্মলভাবে ভালোবেসে যাওয়া ।
প্রঃ – আপনার মধ্য একটা দারুন গুণ রয়েছে–মিশুকে আর সরলতা……
উঃ – আমার মিশুকে এবং সরলীকরণের মানসিকতা অন্যের কাছে জটিল অঙ্কও এনে দেয়। একটা ছোট্ট শিশুর বুকে চমকে ওঠার মত ।
প্রঃ – গান ছাড়া আর কি কি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন?
উঃ – গান ছাড়া অন্য কিছু নয়, গান মাখানোই আমার সবকিছু । একটু আধটু লিখতে ভালোবাসি । আমার অপটু হাত থেকে পটু হয়ে ওঠা সংসার আর সম্পর্ক গুলোকে আদরে ধরে রাখার ব্যাস্ততাও থাকে।

প্রঃ – গায়িকা মানসী সেন আর গৃহিনী মানসী সেন – স্বামী, সন্তান, পরিবার আপনাকে কি ভাবে দেখে খুশি হন?

উঃ – গায়িকা আর গৃহিণী মানসী সেনের কোনো বিবাদ নেই । আমার স্বামী ও সন্তান দুজনেই খুব ইনোসেন্ট, ভীষণভাবে মিউজিক্যাল । আমার স্বামী খুশি হন, যদি আমি সংসারের বদলে সংগীতে সময় দিই । আর ছেলে তো সংগীতের মধ্যেই আছে ।
কিছু ছোট ছোট জিজ্ঞাসা………
* ফুচকা খেতে ভালোবাসেন?
উঃ – তেমন পছন্দ করিনা ।
* প্রিয় অভিনেতা ?
উঃ – উত্তম কুমার , রঞ্জিত মল্লিক , জিৎ থেকে অমিতাভ বচ্চন, আমির খান,অনিল কাপুর,হৃত্বিক রোশন ।
* প্রিয় অভিনেত্রী ?
উঃ – সাবিত্রী চ্যাটার্জি, অনুভা গুপ্তা,থেকে মাধুরী দীক্ষিত, প্রীতি জিন্টা ।
* প্রিয় গায়ক ?
উঃ – কিশোর কুমার, হরিহরন
* প্রিয় গায়িকা?
উঃ – লতা মঙ্গেশকর, সাধনা সরগম ।
* মিউজিক ডিরেক্টর ?
উঃ – প্রিয় মিউজিক ডিরেক্টর তো বহু জন,বিরাট তালিকা। কারন এক একজনের বিভিন্ন রূপায়ন ।
* প্রিয় খাওয়ার ?
উঃ – বাড়িতে তৈরি শাক সবজির সাধারণ পদ এবং ডিম -মাছ-পাঁঠার মাংস । টিফিনে মুড়ি।
* পছন্দের বেড়ানোর জায়গা?
উঃ – যেখানে কৃত্তিমতা নেই, সেখানেই বেড়াতে ভালোবাসি।
* ভুতের রাজা এসে তিনটি বর দিতে চাইলে কি কি চাইবেন?
উঃ – ভূতের রাজার তিনটে বর পেলে (ক) আবার মানবজন্ম, (খ) আমার এই একই পরিবারের সদস্যদের ফিরে পেতে ,(গ) সংগীতেরই সেবা করতে।
অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই সব খবর নিউজ পোর্টালের তরফ থেকে, অামাকে সময় দেওয়ার জন্য। আপনার অনেক অনেক সাফল্য কামনা করি। আরো অনেক অনেক ভালো গান আপনার কাছ থেকে আমরা পেতে চাই। আমাদের সকলের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা সর্বদাই আপনার সঙ্গে থাকবে। মঙ্গলময় ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।।