সুরশ্রী রায় চৌধুরীঃ-করোনা সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করতে আমরা সব রকম চেষ্টাই চালাচ্ছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আয়ুষ মন্ত্রক এর উপর যেমন ভরসা রাখতে বলেছেন। তেমনি মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিনে একটি কমলা লেবুর খাওয়ার ও পরামর্শ দিয়েছিলেন। আর সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ মুড়ি, মুড়কির মতো ভিটামিন সি খেতে শুরু করলো। বাজারে ভিটামিন সি এর চাহিদাও বেড়ে গেলো।
কিন্তু জানেন কি ঠিক কতটা ভিটামিন সি প্রয়োজন আমাদের শরীরে। ডাক্তারেরা জানাচ্ছেন একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের শরীরে দিনে ৯০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি প্রয়োজন। যা আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা থেকে পূরণ হতে পারে। একটা মাঝারি কমলালেবু ৭৭ শতাংশ ভিটামিন সি পূরণ করতে পারে। এক কাপ রান্না করা ব্রকোলি থেকে ১১০ শতাংশ ভিটামিন সি পাওয়া যায়। কাঁচা লঙ্কায় ১২১ শতাংশ, একটি মাঝারি মাপের পেয়ারায় ১৪০ শতাংশ, অাধকাপ হলুদ বেলপেপারে ১৫২ শতাংশ। যদি খালি পেটে পাতিলেবুর রস গরম জলে খাওয়ার অভ্যাস থাকে তাহলে ৯০ শতাংশ ভিটামিন সি পেতে পারেন।
আসলে ভিটামিন সি সাধারণ ফ্লু ভাইরাসের সংক্রমণ কমায় না। রোগ হওয়ার পর তার প্রকোপ কম করতে সাহায্য করে। অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে ভিটামিন সি।আর এই তথ্যকে সাধুবাদ জানাচ্ছে সাংহাই মেডিক্যাল এসোসিয়েসন এর তরফে চাইনিজ জার্নাল অব ইনফক্সেস ডিজিজে প্রকাশিত এক প্রবন্ধ যেখানে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন কোভিড১৯ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীকে যদি বেশি পরিমানে ভিটামিন সি দেওয়া হয় শিরার মাধ্যমে তাঁর ফুসফুসের কার্যকরীতা কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা আছে। তাতে কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্র তথা ভেন্টিলেশনের প্রয়োজন কিছুটা কমাতে পারে। এক রিভিউ স্টাডি থেকে জানা গেছে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে থাকা রুগীর ৮ শতাংশ ভয়াভয়তা কমতে পারে। আর ভেন্টিলেশনের প্রয়োজন কমতে পারে ১৮ শতাংশ। আর এ সবই রয়েছে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পর্যায়। অন্য একটি সমীক্ষায় জানা গেছে শিরার মধ্যে দিয়ে ভিটামিন সি বেশি মাত্রায় দিলে সোয়াইন ফ্লুর মত সংক্রমণের প্রকোপ কমতে পারে। কিন্ত এ সবই ভিটামিন সি প্রয়োজন অনুযায়ী শিরায় প্রয়োগ করা যা ডাক্তার বাবুদের পক্ষেই সম্ভব। বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ সুকুমার মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, অতিরিক্ত পরিমান ভিটামিন সি খেলে হিতে বিপরীত হতে পারে। পেটের সমস্যা হতে পারে। তাই সুস্থ থাকতে পরিমিত ভিটামিন সি খান তাতে আপনার স্কিন ও চুল ঝলমল করবে।