আমার অনিচ্ছাতেই.. চারপাশের নৈঃশব্দ্যের দেওয়ালটা ক্রমশ সুদীর্ঘ হয়ে চলেছে।
অন্ধকারের এক প্রগাঢ় কালো ছায়া অতি সন্তপর্ণে গ্রাস করে নিতে চাইছে আমার আমিত্বকে।
আমার অনিচ্ছাতেই.. বিবর্ণ ঠোঁটের কোণে মেকি হাসিটা সাজিয়ে পথ চলি প্রতিদিন,
একটা মুখোশ ছিঁড়তেই সাথে সাথে আরেকটা স্যানিটাইজ করে তৎক্ষণাৎ সেঁটে নিই অভ্যেসের ঘোরে,
যাতে বাইরের খোলা বাতাসে আমার বিভৎস রূপটা বেরিয়ে না পড়ে।
আমার অনিচ্ছাতেই.. আজকাল খুব যত্নে প্রলেপ লাগাই বুকের জমাট বাধা ক্ষতে,
ব্যালকনিতে বাহারী ক্যাকটাস’গুলোর গায়ে নিয়ম করে হাত বুলিয়ে দিই আদরে,
আমার মতো ওরাও যেন অবহেলিত।
আমার অনিচ্ছাতেই.. ইচ্ছের ফেনিল বুদবুদ’গুলোকে সূঁচাগ্রের সুতীক্ষ্ণ আঘাতে
রক্তাক্ত করি রোজ,
আমি শিখে গেছি, …আমি শিখে গেছি কিভাবে নিজেকে অণু পরমাণুতে ভেঙেও
অস্তিত্বের লড়াইতে টিকে থাকা যায়।
ঠিক যেমন’টা বালিয়াড়ি’র বুকে গজিয়ে ওঠা এক’টুকরো সবুজ।
আমার অনিচ্ছাতেই…নিজেকে প্রতিরাতে সান্ত্বনার চাদরে মুড়ে,
সুখের আরাম কেদারায় শুয়ে রাখতেই, আজও ঘুমের মধ্যে বারে বারে ফিরে যাই আমার ফেলা আসা মেয়েবেলায়,
ফিরে যাই.. পুরোনো রঙচটা বাড়িটায়, গ্রামের মেঠো পথে,
যেখানে এখনো দেখতে পাই,
বাবা আমার হাতটা শক্ত করে ধরে এগিয়ে দিচ্ছে স্কুলের গেটে।
দেখতে পাই বুড়ো বটের ছায়ায় আমার ছড়ানো ছিটানো স্মৃতি’দের ছায়া’নীড়।
ঘুম ভাঙতেই ভরসার চশমা’টা খুলে দেখি ভোর হতে এখনো অনেক দেরি।
______________________________ _____
কলমে : সুচেতা বিশ্বাস চৌধুরী