জলাধারের কিনারায় : ফাতেমা খাতুন মুক্তা।

0
619

সমুদ্র সৈকতের বিস্তৃত বালুচরে দাঁড়িয়ে,
হারিয়ে যাওয়া সময়ের যোগফল ভেঙ্গে,
অগত্যা তুমি প্রস্থান করো ধীরে ধীরে।
ধোঁয়াশায় আচ্ছন্ন পৃথিবীটা যখন নিরবতায় মগ্ন,
তখন তুমি পাথরের বুকে মাথা ঠুকে ঠুকে
ভবিষ্যতের স্বপ্নে বিভোর হও কেন বলতে পারো?
কখনো কখনো মনে হয়
তুমি যেন পুরোপুরিই বিকারগ্রস্ত,
একদিকে ভাঙনের খেলায় মেতে উঠো,
অন্যদিকে ভালবাসার সন্ধানে চারিদিকে হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকো জীবনের স্বাদ,
হয়তো আসবে কেউ না কেউ
হয়তো পাবেই কাউকে না কাউকে।
আর এভাবেই
কি এক বুনো মোহে মোহগ্রস্ত হয়ে
একমনে উঁচুতে পুঁতে যাচ্ছো
ভালোবাসার বর্ণিল তোরণখানি।
অন্ধকার কোনো শীতল কূপের গভীরে
যেমন একটি স্ফটিক জ্বলজ্বল করে,
তোমার মনেও একটি গভীর স্মৃতির ছায়া
আজও প্রজ্জ্বলিত –
যে ছায়াটাকে আমি মুছতে পারিনি কখনো মুছতেও চাইনা।
দীর্ঘ নিরবতার পর পৃথিবী ধ্বংসের আগে
হয়তো আমাদের আবারো কথা হবে,
অযাচিত প্রেমের মোহ কেটে
বয়সের ভারে
যবুথবু জরাগ্রস্ত শরীরে তুমি কাছে আসবে।
যেহেতু কোনো একদিন
আমরা ভালোবেসেছি দু’জন দু’জনকে,
পথভ্রষ্ট আরাধনায় আনাড়ি দুজন
বেশতো ছিমছাম পরিচ্ছন্ন ভালবাসায়
মেতেছিলাম ক্ষণকাল তাই না !
আর সে টানেই তুমি আসবে আমার অতি কাছে
এটাই আমার বিশ্বাস।
দেখে নিও
দীর্ঘ নৈঃশব্দ্যের পর সম্পর্কটা জেগে উঠতেই
জোরদার হতেই
হয়তো আমি চলে যাবো চিরকালের জন্যই;
তখন
তুমি শুনতে পাবে তীরবর্তী জলাধারের মৃদু গল্প,
তখনও আমি অপেক্ষায় থাকবো,
তোমার অপেক্ষায়;
আমি অদৃশ্য মানবী হয়েই বাকি জীবন দাঁড়িয়ে রবো সেই জলাধারের কিনারায়।

স্থান : সাভার,
ঢাকা, বাংলাদেশ।