এবাদুল হক( ১৯৬০-২০২১) একইসঙ্গে কবি ,গল্পকার ও নাট্যকার ।কবিতা ও গল্পে সমান সিদ্ধহস্ত ।প্রথম জীবনে প্রচুর নাটক লিখেছেন। নিজের লেখা নাটকে অভিনয় করেছেন। তার লিখিত পূর্ণাঙ্গ ও একাঙ্ক নাটকের সংখ্যা প্রায় কুড়ি বাইশ এর উপর তবে নাটক লেখা ছেড়ে কবিতা ও গল্প লেখায় বেশি মনোযোগ দেন। সমসাময়িক কালে তিনি উপন্যাসও লিখতে শুরু করেছিলেন
তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ :-
১. কবিতা কাকলি। ২.সূর্যাস্তের আগে ও পরে
৩.নাগকেশরের ফুল
৪. বাউল জল
৫. অগ্নিজল
৬.পলাতক ছায়া
৭. এক গ্লাস জলের ছায়া
৮. পেপারব্যাক নারী
১৯৭৬ সালে নবম শ্রেণীতে পাঠরত অবস্থায় তিনি সম্পাদনা করেন “প্রলয় “নামক পত্রিকা ।ওই বয়সে শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা নিয়ে এসে তিনি এ পত্রিকায় ছাপেন। এক বছর পর পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যায়। দ্বিতীয় পত্রিকা “রামধনু “এক বছর প্রকাশিত হয় ,তার পর বন্ধ হয়ে যায় ।তৃতীয় পত্রিকা আবার এসেছি ফিরে ১৯৭৯ সাল থেকে এখনো প্রকাশিত হয়ে চলেছে ।প্রায় ৪২ বছর ধরে তিনি পত্রিকাটি সম্পাদনা করছেন ।নিজ অর্থে পত্রিকা সম্পাদনা করেন, কোন বিজ্ঞাপন থাকেনা এই পত্রিকাতে। নিজের প্রচুর গল্প নাটক লেখা থাকলেও তিনি তা নিজ পত্রিকায় প্রকাশ করতে সঙ্কোচ বোধ করেন। নতুন লেখকদের জায়গা করে দেওয়াই তার মূল উদ্দেশ্য ছিলো।
১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর পশ্চিমবঙ্গ সরকার সারা বাংলার যুব উৎসব প্রতিযোগিতায় রাজ্যে প্রথম পুরস্কার লাভ করে “আবার এসেছি ফিরে” সাহিত্য পত্রিকাটি। ২০১২ সালে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা অ্যাকাডেমি থেকে এই “আবার এসেছি ফিরে” পত্রিকাটি শ্রেষ্ঠ লিটিল ম্যাগ পুরস্কার পায়।
২০১৯ সাল থেকে “এবং পুনশ্চ “নামে আর একটি সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা করে আসছিলেন।
ব্যক্তিগত দুর্ঘটনা জনিত কারণে কিছু বছর যাবৎ তিনি অত্যন্ত অসুস্থ ছিলেন। কিন্তু তাঁর অদম্য মনোবলকে কোনোদিন তাঁর সাহিত্য সৃষ্টিকে প্রভাবিত করতে পারেনি। আজ সকালে তিনি হৃৎরোগে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬০ বছর।
তরুন কবি ও গবেষক লিটন রাকিব বলেছেন-“আর মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। আবার এসেছি ফিরে এবং পুনশ্চ পত্রিকার সম্পাদক এবাদুল হককে সকাল এগারোটায় কোভিড কেড়ে নিয়েছে। মুর্শিদাবাদ তথা তিনবাংলা দীর্ঘ দিনের এক সাহিত্য যোদ্ধাকে হারাল। তরঙ্গ সাহিত্য পরিবার এবাদুলদার প্রয়াণে শোকসন্তপ্ত।তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি এবং পরিবারকে সমবেদনা জানাই।”
লেখক তরুন কবি ও গবেষক, সম্পাদকঃ তরঙ্গ পত্রিকা।