চয়নিকা ও অনামিকা দুই বোন । দুইজনের বয়সের মধ্যে দেড় বছরের পার্থক্য । চয়নিকার একাদশ শ্রেণী ও অনামিকার দশম শ্রেণী । দুই বোনের মধ্যে খুব মনের মিল । তাদের দৈনন্দিন জীবনের টক-ঝাল-মিষ্টির গল্পগুজব নিয়ে দুজনেই উচ্ছ্বসিত । চয়নিকা ও অনামিকা এক স্কুলেই পড়ত । কিন্তু চয়নিকা মাধ্যমিক পাশ করার পর বিজ্ঞানে নম্বর কম থাকায় ঐ স্কুলে একাদশ শ্রেণীতে বিজ্ঞান বিভাগ পায়নি । যার জন্য বাবা-মা এক কিলোমিটার দূরের গার্লস স্কুলে তাকে ভর্তি করে দিয়েছেন । চয়নিকার এ্যাথলেটে খুব আগ্রহ । রানে ও লং জাম্পে ভীষণ পারদর্শী । দুবার রাজ্যভিত্তিক প্রতিযোগিতায় রানে চয়নিকার দ্বিতীয় স্থান । অনামিকার স্কুল বাড়ির পাশেই । বাবা-মা’র প্রবল ইচ্ছা, তাঁদের দুই মেয়ে ডাক্তার হোক । দুই মেয়েকে ডাক্তারি পড়াবার জন্য তাঁদের প্রয়াসের খামতি নেই । কিন্তু চয়নিকা ও অনামিকার পুথিগত বিদ্যায় প্রচন্ড অনাগ্রহ । পড়ার ধৈর্য কম । পড়তে বসলেই দুনিয়ার ওলট-পালট চিন্তা । পড়াশুনায় গাফিলতির জন্য রেজাল্টও খারাপ । চয়নিকার মাধ্যমিক রেজাল্ট দেখে বাড়িতে তার বাবা-মা বিষন্ন । তাঁরা ভাবছেন, বড় মেয়েকে বাইরের রাজ্য থেকে পয়সা দিয়ে ডাক্তারি পাশ করিয়ে আনবেন । তুলনামূলকভাবে ছোট মেয়ে অনামিকা পড়াশুনায় একটু ভাল । কিন্তু তার নাচে সব সময় ধ্যান । নাচ, সাঁতার কাটা ছাড়া পড়াশুনায় লবডঙ্কা ।
বাবা, গণপতি সাঁধুখা, শহরের ডাকসাইটে নামী ডাক্তার । জেনারেল মেডিসিনে এম-ডি । হাত-যশ সাংঘাতিক । যার জন্য দূর দূর গ্রাম থেকে অনেক রোগী সাঁধুখা ডাক্তার বাবুকে দেখাতে আসেন । গণপতি ডাক্তার বাবুর রোগী দেখার চেম্বার শহরের “নলীনাক্ষ মেডীক্যাল স্টোর” ঔষধের দোকানে । সেখানে সকাল থেকে রোগীদের লাইন । গণপতি বাবু ঠিক সাড়ে সাতটায় চেম্বারে ঢোকেন । চেম্বারে রোগী দেখা শেষ হলে তিনি হাসপাতালে ছোটেন । মা হাই স্কুল শিক্ষিকা । মায়ের স্কুল চার কিলোমিটার দূরে । অটোতে যাতায়াত । শহরে তাদের বড় বাড়ি । সর্বক্ষণের কাজকর্মের জন্য সহর্ষ মিত্র । সর্বদাই সে উৎফুল্ল । কোনো কাজে না নেই । তবে লিখে না দিলে বাজার থেকে সেই জিনিস আসবে না । ভুলে যাওয়াটা তার দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ । তাছাড়া রান্নার ও বাসন-ঘর মোছার আলাদা আলাদা মাসি । চয়নিকা ও অনামিকা একটা বড় রুমে দুপাশে দুটো খাটে থাকে । পড়ার ঘর আলাদা ।
স্কুল থেকে ত্রৈমাসিক পরীক্ষার রিপোর্ট কার্ড দিলো । বিষয় ভিত্তিক মার্কের নিরিখে দুজনের মার্কের ক্ষেত্রেই আশানুরূপ মার্কের অনেক নীচে । দুই মেয়ের প্রাপ্ত নম্বরের কার্ড দেখে তাদের স্কুল-শিক্ষিকা মা রীতিমতো ক্ষুব্ধ । মেয়েদের ত্রৈমাসিক রেজাল্টের কার্ড দেখে মায়ের ক্ষোভ, ঊর্ধ্বগামী । সকালবেলায় বাড়িতে তুলকালাম । হইচই, শোরগোল । বিশ্রি নম্বর পাওয়ার জন্য মা তাঁর দুই মেয়েকে বকে ক্ষান্ত হলেন না, দুজনকে চর থাপ্পড় পর্যন্ত মারলেন । তারপর তাদের বাবাকে নালিশ । গণপতি সাঁধুখা মেয়েদের প্রাপ্ত নম্বরের রিপোর্ট দেখে তাজ্জব ! এইরকম পড়াশুনার হাল হলে, তিনি মেয়েদের কিভাবে ডাক্তারি পড়াবেন ? তিনিও ক্ষোভে ফেটে পড়লেন । মেয়েদের উপর অনেকক্ষণ চোটপাট । বকাঝকা । রেগে তিনি মারতে শুধু বাকী রাখলেন । ঠিক সেই মুহূর্তে গণপতি বাবুর মোবাইল বেজে উঠলো, “স্যার, আটাশ জন রুগীর নাম লেখা হয়ে গেছে । সবাই ডাক্তার বাবুর জন্য ছটফট করছেন । আটটা বেজে গেছে । আপনি সত্বর চেম্বারে আসুন, স্যার” ।
গণপতি সাঁধুখা উত্তরে বললেন, “সবাইকে বসতে বলুন, আমি এক্ষুণি আসছি” । তারপর মেয়েদের দিকে তাকিয়ে বললেন, “এখনও সময় আছে । পড়াশুনায় মন দাও । তিড়িং-তিড়িং করে লাফালে আর দৌড়ালে ডাক্তার হওয়া যাবে না । ডাক্তার হতে গেলে খাটতে হবে । তাই বলছি, নাচ ও অ্যাথলিটে পেট ভরবে না । ওগুলো বন্ধ রেখে পড়াশুনায় মন দাও” । একগুচ্ছ উপদেশ দিয়ে গণপতি ডাক্তার বাবু হন্তদন্ত হয়ে চেম্বারে ছুটলেন ।
স্নান খাওয়া-দাওয়া সেরে মা স্কুলে বেরিয়ে গেলেন । মা সাধারণত চয়নিকাদের আগে স্কুলের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে যান । তারপর চয়নিকা ও অনামিকা দুজনে একসঙ্গে বাড়ি থেকে বের হয় । বকা খাওয়ার জন্য, মা বেরিয়ে যাওয়ার পর চয়নিকা ও অনামিকা অন্য মতলব আঁটলো । আজ স্কুলে না গিয়ে শহর ছাড়িয়ে জলাশয়ে নৌকায় চড়ে দুজনে এলোপাথাড়ি ঘুরবে । প্রকান্ড জলাশয় । মৎস্যজীবিদের ডিঙি নৌকা জলাশয়ের পাড়েই বাঁধা থাকে । তাঁরা অল্প পয়সায় প্রয়োজনে সারাদিন ঘোরায় । তাই দুজনে ফন্দি আঁটলো স্কুলে না গিয়ে জলাশয়ে নৌকাবিহার করবে । স্কুল, পড়াশুনা, ইত্যাদিতে তারা বিরক্ত । তার উপর আজ বাবা-মায়ের বকুনিতে আরও বিমর্ষ ।
সাজগোজ করে মুখে মাস্ক লাগিয়ে দুজনে হাঁটতে হাঁটতে প্রায় শহরের শেষ মাথায় ।
হঠাৎ রাস্তার উপরে কিছু মানুষের জটলা । একজন বয়স্ক মানুষ সাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে প্রচন্ড হাঁপাচ্ছেন । শ্বাস নিতে তাঁর কষ্ট । তাছাড়া খুক্খুক্ কাশি অনবরত ! তাঁকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে, তিনি বাজার থেকে ফিরছিলেন । সাইকেলের হ্যান্ডেলে বাজারের ব্যাগটাও গড়াগড়ি খাচ্ছে । ভদ্রলোকের বয়স আন্দাজ মতো সত্তরের কাছাকাছি অথবা সত্তর পার হয়ে গেছে । তাঁর ঐরূপ শারীরিক দশা দেখে বয়স্ক মানুষটিকে বাঁচানোর ব্যাপারে রাস্তার উপরে দন্ডায়মান মানুষগুলির কোনো হেলদোল নেই । যতোটুকু চয়নিকা জানতে পরলো, বয়স্ক মানুষটির বাড়ি শহরের পাশের গ্রাম দুর্লভপুরে । সেখান থেকে বাজারে এসেছিলেন, ফেরার পথে রাস্তায় এই বিপত্তি । কিভাবে রাস্তার উপর সাইকেল থেকে পড়ে গেলেন সে ব্যাপারে উপস্থিত সকলেই নীরব ।
চয়নিকা ও অনামিকা তাদের মুখের মাস্ক টাইট করে বেঁধে বয়স্ক মানুষটিকে রাস্তা থেকে তুলে দাঁড় করালো । দন্ডায়মান লোকগুলির চিৎকার, ছোঁবেন না । বুড়োটার নির্ঘাত “করোনা” রোগ । তাঁর বুক ধড়ফড় করছে । সমানে বুড়োটা কাশছে । করোনায় আক্রান্ত মানুষটিকে ধরলে তোমাদের বিপদ !
চয়নিকা চিল্লিয়ে বললো, বিপদ জেনেও চোখের সামনে বয়স্ক মানুষটাকে মরতে দেখতে পারবো না। আমাদের যা হয় হবে, আমরা মানুষটিকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাই । এই মুহূর্তে তাঁকে সঠিক চিকিৎসা করানো দরকার । সুতরাং আমাদের দৃঢ় সিদ্ধান্ত, তাঁর সঠিক চিকিৎসা ।
অনামিকা ডান কাঁধ ও চয়নিকা বাম কাঁধে বয়স্ক মানুষটিকে নিয়ে হাঁটতে শুরু করলো । তারপর রাস্তায় টোটো পেয়ে ছুটলো কাছাকাছি নার্সিং হোমে । নার্সিং হোমের মালিক নিজে নার্সিং হোমে বসেছিলেন । সেই মালিক এগিয়ে এসে সটান জানিয়ে দিলেন, আমরা “করোনা” রোগী ভর্তি নিতে পারবো না । চয়নিকা যতোবার বোঝাতে চাইলো রোগী করোনায় আক্রান্ত কিনা সেটা এখনও অনিশ্চিত, তা সত্বেও নার্সিং হোমের মালিক কিছুটা ধমকের সুরে বললেন রোগীকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে ভদ্রলোক করোনায় আক্রান্ত । চয়নিকা ও অনামিকা আর কথা বাড়ালো না । রোগীর অবস্থা ক্রমশ অবনতির দিকে । তারা আবার ছুটলো শহরের নামকরা হাসপাতালে । পাঁচশ বেডের মহাকুমা হাসপাতাল । সেখানে ইমার্জেন্সিতে তুললো বয়স্ক মানুষটাকে । সেখানেও শিথিলতার চূড়ান্ত । দুজন অল্প বয়সের ডাক্তার রোগীকে চেক করে বললেন, “রোগীর রোগ করোনা পজিটিভ । সুতরাং তাঁকে করোনা হাসপাতালে ভর্তি করানো জরুরি” । তাই ইমার্জেন্সির ডাক্তার বাবু নির্দেশ দিয়ে বললেন, “পাশের গেট দিয়ে ঢুকলেই আমাদের করোনা হাসপাতাল । সেখানে রোগীকে নিয়ে যান ।“
চয়নিকা ও অনামিকা রোগীকে নিয়ে পাশের বিল্ডিংয়ের করোনা হাসপাতালে উপস্থিত । সেখানেও সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের বিরক্তকর কথাবার্তা । ভর্তি করাতে হলে, রোগীর করোনা পজিটিভ সার্টিফিকেট ও রোগীর আধার কার্ড লাগবে । নতুবা কিছুতেই ভর্তি নেওয়া যাবে না । অনামিকা যতোবার বোঝাচ্ছে, রোগী রাস্তায় অসহায়ভাবে পড়েছিলেন । রোগীকে বাঁচানোর জন্য তারা রাস্তা থেকে রোগীকে তুলে এনেছে । তারা বয়স্ক মানুষটাকে বাঁচাতে চায় । প্লিজ ভর্তি করে নিন । পরে তারা সমস্ত কাগজপত্র জোগাড় করে হাসপাতালে জমা দেবেন । আগে রোগীকে বাঁচান । কিন্তু কিছুতেই তাদের কথায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কর্ণপাত করছেন না ।
বয়স্ক মানুষটার খুব কষ্ট । কথা বলতে পারছেন না । শ্বাসকষ্ট ষোলোআনা । বুক ধড়ফড় । শুধু খুক্খুক্ কাশি । বেলা প্রায় দুটো । অথচ হাসপাতালের বিমাতৃসুলভ আচরণের জন্য রোগীর চিকিৎসা শুরু করানো গেলো না ? উদ্বিগ্নতায় চয়নিকা দিশেহারা । কী করবে ভেবে কূল কিনারা পাচ্ছে না । অসহায়তায় ভূগছে দু-বোন । কিন্তু যেভাবে হোক তাঁকে করোনা হাসপাতালে ভর্তি করাতেই হবে । ফেরত নিয়ে গেলে তাঁকে বাঁচানো কষ্ট ! তাই পুনরায় করোনা হাসপাতালের কর্তৃপক্ষকে হাতজোড় করে চয়নিকা বললো, “স্যার, মুখ তুলে তাকান । আমাদের রোগীকে বাঁচান” ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভয় দেখালেন, “আপনারা হাসপাতাল ছেড়ে বেরিয়ে না গেলে আমরা দারোয়ান ডেকে আপনাদের বাইরে বের করে দিতে বাধ্য হব । আপনারা আমাদের কাজের ক্ষতি করছেন” ।
অনামিকা রেগে গিয়ে চোখ গরম করে ঝাঁঝালো গলায় বললো, “আপনারা তো ডাক্তার, সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তি । অথচ আপনাদের এটা কী ধরনের পাষন্ডহৃদয় ? চোখের সামনে লোকটাকে মরে যেতে দেখছেন । কিন্তু তাঁকে বাঁচাবার কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না” ।
অনামিকার কথায় বিরক্ত হয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দারোয়ান দিয়ে তাদের গেটের বাইরে বের করে দিলেন ।
চয়নিকা কিংকর্তব্যবিমূঢ় । কি করবে বুঝে উঠতে পারছে না ।
চয়নিকার মাথায় হঠাৎ অন্য চিন্তা ভর করলো ।
অনামিকাকে বসিয়ে রেখে সে ছুটলো শহরের থানায় । সেখানে বড় বাবুর চেম্বারে এস-ডি-পি-ও নিজে বসেছিলেন । থানার বড় বাবুর কাছে গিয়ে চয়নিকা হাতজোড় করে বললো, “স্যার, আপনারা একটু সক্রিয় ভূমিকা নিলে একটা “করোনা” আক্রান্ত রুগিকে বাঁচানো সম্ভব” !
অন্যদিকে অনামিকা তার বান্ধবীকে ফোন করলো । অনামিকা জানে, বান্ধবীর জামাইবাবু একজন ডাকসাইটে সাংবাদিক । ঘটনাটা সংবাদ মাধ্যমে প্রচার করলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের যদি টনক নড়ে । তাই বান্ধবীকে ফোন করলো । ফোনে বান্ধবীর মাধ্যমে তার জামাইবাবু সাংবাদিককে ডাকলো হাসপাতালে । সেই বান্ধবীর জামাইবাবুর তৎপরতায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবজ্ঞা ফলাও করে টিভি চ্যানেলগুলিতে প্রচার পেলো ।
থানার বড় বাবু ও এস-ডি-পি-ও উভয়ে চয়নিকার সাথে করোনা হাসপাতালে উপস্থিত ।
হাসপাতালে সীট থাকা সত্বেও রোগীকে ফেরানো হচ্ছে কেন তার সদুত্তর দিতে পারলেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ । থানার বড় বাবু সরাসরি অনুরোধ করলেন, রোগীকে ভর্তি করে নিতে এবং তাঁর যথাযথ চিকিৎসা শুরু করতে ।
তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চোখ ছলছল করে থানার বড় বাবুকে বললেন, রোগীর এই মুহূর্তে অক্সিজেন দরকার । আমাদের স্টকে এক ফোঁটাও অক্সিজেন নেই । কিভাবে রোগীকে বাঁচাবো ?
বান্ধবীর জামাইবাবু সঙ্গে সঙ্গে বললেন, কথাটা আগে বললে রোগীকে এইভাবে মৃত্যুযন্ত্রণা পোহাতে হোতো না । আমি দশ মিনিটের মধ্যে অক্সিজেনের ব্যাবস্থা করছি স্যার । সাংবাদিক জামাইবাবু বেরিয়ে যাওয়ার আগে শহরের এস-ডি-ও সাহেব এসে উপস্থিত । তিনি বললেন, আমার গাড়িতে দুটো অক্সিজেন রয়েছে । আপনাকে এখন আর ছুটে যেতে হবে না । তারপর হাসপাতালের ডাক্তার বাবুর দিকে তাকিয়ে পরিস্কারভাবে জানিয়ে দিলেন, “উপরের অর্ডার, রোগীর সুচিকিৎসা । চিকিৎসার অভাবে রোগীর অঘটন ঘটে গেলে তার দায়িত্ব আপনাদের । সুতরাং যা করবেন ভেবেচিন্তে করুন । বাচ্চা দুটির কাতর আবেদনে সাড়া না দিয়ে খুব অন্যায় করেছেন । জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই সমাজে কটা মানুষ এই বাচ্চা মেয়েদের মতো কাজ করে । আমার মেয়ে হলে, এই মেয়ে দুটির জন্য আমি গর্বিত হতাম” । তারপর চয়নিকা ও অনামিকার দিকে তাকিয়ে বললেন, “ওয়েল ডান, মাই সন । উই আর প্রাউড অফ বোথ অফ ইউ” । তারপর তিনি হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেলেন ।
বাড়ি ঢুকে ঘটা করে স্নান করলো দুজনে ।
তাদের মা অবাক ! সন্ধ্যাবেলায় মেয়েদের এত স্নানের ঘটা কেন ?
হঠাৎ শহরের বিখ্যাত শল্য চিকিৎসক, তীর্থঙ্কর বাবু ফুলের তোড়া নিয়ে গণপতি সাঁধুখার সাথে তাদের বাড়ি হাজির । ডাক্তার বাবুকে দেখে চয়নিকার মা বললেন, “আমাদের কী পরম সৌভাগ্য, আপনার মতো খ্যাতিমান ডাক্তার বাবুর পায়ের পদধূলি আমাদের বাড়িতে পড়লো” !
উঁহু বৌদি, আপনি আপনার মেয়েদের ডাকুন ?
—————-০—————
এ১০এক্স/৩৪, কল্যাণী-৭৪১২৩৫ (ভারত)