প্রকাশ কালি ঘোষাল, হাওড়া : পরিশেষে সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করতে চলেছেন হাওড়া সদর বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি সুরজিৎ সাহা। কিছুদিন ধরেই তৃণমূলে যোগদান নিয়ে ধোঁয়াশা রেখে চলছিলেন হাওড়া সদরের প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি সুরজিৎ সাহা ।
আজকে তিনি তার শাসক দলে যোগ দেওয়ার খবর সত্যি বলেই স্বীকার করলেন। তিনি স্পষ্ট জানান আগামীকালকে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করছেন। তার যোগদান নিয়ে যে খবর পাওয়া যাচ্ছে তা সত্যি। তিনি আরো জানান দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে তিনি বিজেপির সৈনিক হিসাবে কাজ করেছেন। দল যেভাবে তাকে যা যা নির্দেশ দিয়েছিল তখনই তা পালন করেছেন। অথচ দু বছরও হয় নি বিজেপিতে আসা অমিতাভ চক্রবর্তী ও শুভেন্দু অধিকারী তার বিজেপি করার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। তিনি সমাজসেবা করতে এসেছেন। কোনো রাজনৈতিক বৈরিতা নেই কারোর সঙ্গে। তাই বিজেপিতে থাকাকালীন শাসক দলের নেতৃত্বের সঙ্গে যে মত পার্থক্য ছিল তা নিতান্তই রাজনৈতিক। তিনি বিজেপিকে কটাক্ষের সুরে বলেন চকচকে রাস্তা, ঝকঝকে আলো। মানুষ বলছে তৃণমূলই ভালো। তিনি দাবি করেন রাজ্যের মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নকে সমর্থন জানিয়েছেন তাই সেই উন্নয়নের মধ্যে সামিল হয়ে নতুন দলের নেতৃত্বের সঙ্গে সংঘবদ্ধ হয়েই কাজ করবেন আগামীদিনে।
প্রসঙ্গত কিছুদিন আগেই বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর তৈরি হাওড়া পৌর নিগমের নির্বাচনের কমিটি তৈরি নিয়ে বিবাদে জড়ান সুরজিৎ সাহা। শুভেন্দুকে সারদার টাকা প্রকাশ্যে নিতে দেখা গেছে বলে তার ব্যাখ্যা চান তিনি। পাশাপাশি হাওড়া সদরে শুভেন্দু অধিকারী তার নিজের ছড়ি ঘোড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ তোলেন তিনি। এরপর ওই দিনই তাকে দল থেকে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করে রাজ্য বিজেপি। তার পরবর্তীকালে হাওড়া সদরের নতুন কনভেনর নিয়োগ করে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। সুরোজিতের দল ছাড়ার পরই তার ঘনিষ্ঠ বিজেপি সদরের সাধারণ সম্পাদক বিমল প্রসাদ দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন। সম্প্রতি সদরের বিজেপি মহিলা নেত্রী ইন্দু সিংও বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করে। হাওড়া সদরে একেরপর এক বিজেপি নেতৃত্ব ও কর্মীরা শাসক দলে যোগদান করায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন হাওড়ার বিজেপি নেতৃত্ব। দল থেকে বহিষ্কার হওয়ার পরে অনেকদিন ধরেই তার শাসক দলে যোগদান করা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে ছিল। আজকে সেই জল্পনার অবসান করে তিনি শাসক দলে আগামীকাল যোগদান করবেন তা জানালেন সুজিত সাহা। একেই গত বিধানসভা নির্বাচনে হাওড়া বিজেপি প্রবলভাবে ধরাশায়ী হওয়া কর্মীদের মধ্যে মনোবল তলানিতে ঠেকেছে , তার উপরে এক এক করে নেতৃত্ব স্থানীয় কর্মী তৃণমূলে চলে যাওয়ায় আগামী দিনে বিজেপি কি প্রকারে তাদের অস্তিত্ব ধরে রাখে তার দিকে তাকিয়ে আপামর হাওড়াবাসী ।