নিজস্ব সংবাদদাতা,ক্যানিং – ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে দালালরাজ অব্যাহত এমনই অভিযোগ রোগী ও তাদের পরিবার পরিজনদের।শুক্রবার দুপুরে তেমনই এক দালালের খপ্পরে পড়লেন বেশ কয়েকজন রোগী।এদিন ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে আউটডোরে চক্ষু বিভাগে চিকিৎসার জন্য প্রচুর রোগীরা লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন।অভিযোগ সেই সময় চক্ষু বিভাগের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন জনৈক অনিল সরদার নামে এক যুবক।লাইনে দাঁড়িয়ে তিনি চক্ষু বিভাগের রোগীদের চোখে টর্চ মেরে পরীক্ষা নিরীক্ষা করছিলেন বলে রোগীদের দাবী।এমনকি রোগীদের হাত থেকে চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে দেখভাল করে ইচ্ছা মতো নির্দেশ জারী করছিলেন।চক্ষু পরীক্ষা নিরীক্ষা করার আগেই ওই যুবক চশমা নেওয়ার নির্দেশ দেয় বেশকিছু রোগীকে। এমনকি তিনি সেই চশমা তৈরী করে দেবেন বলে জানায় রোগীরা।
শুক্রবার ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে চক্ষু চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন বাসন্তীর মোকামবেড়িয়ার শঙ্কর আইচ,ক্যানিংয়ের ছোট দুমকী গ্রামের শান্তনু ঘোষ সহ অন্যান্যরা।
শঙ্করের অভিযোগ ‘১০/১২ দিন আগে ওই যুবক চক্ষু ডাক্তারের কাছে বসে চশমা করে দেওয়ার নাম করে ২০০ টাকা নিয়েছিলেন। ভেবেছিলাম উনি ডাক্তার। এখন বুঝতে পারছি উনি দালাল।আজও চমশা পেলাম না’।
অন্যদিকে অপর আর এক রোগী শান্তনু ঘোষ জানিয়েছেন ‘শুক্রবার সকাল ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে আউটডোরের চক্ষু বিভাগে এসেছিলেন চক্ষু পরীক্ষা করার জন্য এসেছিলেন ক্যানিংয়ের দুমকীর শান্তনু ঘোষ। তার দাবী অনিল সরদার নামে ওই ব্যক্তি চক্ষু বিভাগের চিকিৎসকের সামনে ইচ্ছামতো নির্দেশ দিচ্ছিলেন। আমাকেও চিকিৎসক দেখার আগেই উনি ধমক দিয়ে বলেন চশমা নিতে হবে এবং আমিই চশমা করে দেবো।তখনই ওই যুবকের কাছে জানতে চাই আপনি কি চিকিৎসক?ওই যুবক বলে আমি ট্রেনিং দিয়ে এখানে এসেছি। সেই সময় আউটডোরে কর্তব্যরত চক্ষু চিকিৎসকও বলেন ওনাকে ট্রেনিং দিয়ে রাখা হয়েছে।চিকিৎসক আমার চক্ষু পরীক্ষা নিরীক্ষা না করেই প্রেস্কিপশন লিখে দেয়।তিনি আরো বলেন হাসপাতালে চলছে দাদালরাজ। আমি এবং আমার মতো রোগীরা যাতে করে দালালদের হাতে না পড়তে হয় এবং মহকুমা হাসপাতালে দালালরা যাতে প্রবেশ করতে না পারে সেই বিষয়ে মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগও জানিয়েছি।’
ঘটনা প্রসঙ্গে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সুপার ডাঃ অপূর্বলাল সরকার জানিয়েছেন ‘যদি এমন ঘটনা ঘটে তা কোন মতে বরদাস্ত করা হবে না। লিখিত অভিযোগ পেলেই খতিয়ে দেখে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ’
অন্যদিকে ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক পরেশরাম দাস জানিয়েছেন ’দীর্ঘদিন ধরে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে দালাল রাজ চলছিল। সেটা বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।যার জন্য ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে সিভিক ভলেন্টিয়ার এবং সিভিল ডিফেন্সের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। শুনছি আবারও দালালরাজ সক্রিয় হয়েছে।যদি প্রমাণ পাওয়া যায় দালালদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।