প্রত্যেক ধর্মে যেমন অনেক অজানা গল্প কথা থাকে, ঠিক তেমনই খ্রিস্টান ধর্মেও অনেক অজানা গল্প লুকিয়ে আছে। অনেক ঘটনাও আছে। যেমন বড়োদিনের দিন যে খ্রিস্টমাস বা ক্রিসমাস ট্রি আমরা দেখি কাহিনি রয়েছে তাকে ঘিরেও।
এই ঝাউগাছের মতো দেখতে পিরামিডের মতো গাছ নিয়ে এত কিছু করা হয়, এত সাজানো হয় এই গাছটির ব্যাপারে কিন্তু ইতিহাস অন্য কথা বলছে। ইতিহাস বলছে, যিশুখ্রিস্ট নিজে কোথাও কিছুই বলে যাননি যে বড়োদিন পালন করতে গেলে এই গাছটিকে সাজাতে হবে বা লাগবে।
কারণ , বিশেষজ্ঞদের মতে, তিনি ছিলেন ঈশ্বরের দূত। মানুষের মঙ্গল করাই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। তাঁর সারা জীবন ধরে তিনি সেটিই করে গিয়েছে। তার জন্য তাঁকে অকালে প্রাণ দিতে হয়েছে। ফলে তাঁর পক্ষে নিজের জন্মদিন পালন সম্পর্কে এই সমস্ত আড়ম্বরের কথা বলা সম্ভব ছিল না। এমনকী তাঁর মৃত্যুর বেশ কয়েক শতক পরে তাঁর জন্মদিন এত ধুমধাম করে পালন করা শুরু হয়। প্রাথমিক ভাবে মহান মানুষের মৃত্যুদিনই স্মরণীয় এই রীতি বা প্রথা মেনে তাঁর মৃত্যুর পর থেকে মৃত্যুদিবসই উদযাপন করা হতো।
কিন্তু এই গাছ সাজানোর রীতিও মানুষ পালন করে আসছে বহু শতক ধরে। সেটা কী ভাবে হল ?
এর পিছনে রয়েছে একটি অন্য কাহিনি। জার্মানিতে এক সময় শীতকালে এই বিশেষ গাছটি দিয়ে ঘর সাজানোর রীতি প্রচলিত ছিল। ১৭৫০ সালে এই গাছ দিয়ে ঘর সাজানোর নিয়ম প্রথম দেখা গিয়েছিল ট্রাসবুর্গ শহরে। তার কয়েক বছর পর ১৭৭১ সালে জোহান উলফগাং বহন গেটে নামের এক জন বিখ্যাত লেখক বড়োদিনের ছুটি কাটাতে জার্মানি ঘুরতে এসেছিলেন। সেখানে এসেই তিনি স্ট্রাসবুর্গ শহর ঘুরে দেখেন। তখনই শীতের মরশুম যেহেতু তিনি তাই প্রতি বাড়িতে বড়োদিনের সময় ক্রিসমাস ট্রিও সাজানো দেখেন। এই সজ্জায় তিনি খুবই মুগ্ধ হন। পাশাপাশি তিনি শীতকালের এই গাছের সাজ এবং বড়োদিনকে একাকার করে ফেলেন। তিনি ভুল করে বড়োদিন উপলক্ষ্যে এই সাজ ভাবতে থাকেন। তারপর তাঁর ‘দ্য সাফারিং অব ইয়ং ওয়েরথার’ বইতে এই গাছের কথা লেখেন। এর পর কেটে যায় বেশ কয়েক বছর। ১৮২০ সালে তাঁর সেই বইয়ের লেখা নিয়ে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী দেশগুলিতে শুরু হয় হইচই।
অন্য দিকে, ওই বছরই জার্মান রাজকুমার অ্যালবার্টের সঙ্গে বিয়ে হয় রানি ভিক্টোরিয়ার। রাজকুমার অ্যালবার্ট বিয়ের পর ইংল্যন্ডকে চেনান ক্রিসমাস ট্রি দিয়ে বড়োদিন পালনের প্রথা।
এর পর আরও কয়েক বছর কেটে যায়, ১৮৪৮ সাল। এক মার্কিন সংবাদপত্রে বড়োদিনের মরসুমে ক্রিসমাস ট্রি-র ছবি ছাপা হয়। তার পর থেকে ক্রমশ জনপ্রিয়তা বাড়ে ক্রিসমাস ট্রি। শীতকাল ক্রিসমাস ট্রি এবং বড়োদিন একে ওপরের সঙ্গে জড়িয়ে যায়।
সংগৃহীত।
সূত্র – ইন্টারনেট