নিজস্ব সংবাদদাতা, নদীয়া:- ভারতবর্ষে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমকালে 1943 সালের 25 শে মে কমিউনিস্ট পার্টির শাখা সংগঠন হিসাবে ‘ভারতীয় গণনাট্য সংঘ’ বা ইংরেজিতে ইন্ডিয়ান পিপলস অ্যাসোসিয়েশন IPTA প্রতিষ্ঠিত হয়। ফ্রান্সের দার্শনিক রমাঁ রলাঁর পিপলস থিয়েটারের প্রভাব গণনাট্যের আদর্শে প্রভাব ফেলেছিল। তিনি এই ধরনের থিয়েটারের বিশিষ্টতায় তিনটি বিষয়ের উপর জোর দিয়েছিলেন। প্রথমত, সাধারণ দর্শকের প্রাণের কথা তাঁদের সহজবোধ্য প্রমোদের মাধ্যমেই বলতে হবে। এই সাধারণ দর্শক হচ্ছে সর্বব্যাপক জনসাধারণ, শ্রমিক, কৃষক, সাধারণ মানুষ। দ্বিতীয়ত, শুধু আনন্দ দেওয়া নয়, দর্শকদের উজ্জীবিত করে তাদের নতুন জীবনভাবনায় প্রাণীত করতে হবে। তাদের জীবন সমস্যা, তার কারণ এবং তা থেকে মুক্তির চিন্তা ও উপায় –সেগুলি বুঝিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব পিপলস থিয়েটারকে নিতে হবে। তৃতীয়ত, এই থিয়েটারকে উদ্দেশ্যমূলক হতে হবে। জীবনের আনন্দের মাধ্যমে দর্শককে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চেতনাসম্পন্ন করার মধ্য দিয়েই এই থিয়েটারের উদ্দেশ্য ছিল।
সূচনার দিন থেকেই ছিলেন বিখ্যাত নাট্যকার বিজন ভট্টাচার্য। তার প্রথম নাটক আগুন পরবর্তীতে জবানবন্দি নবান্ন জীবন কন্যা অবরোধ মরাচাঁদ একের পর এক জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে সাড়াফেলা নাটক রচনা আজও খ্যাতির শীর্ষে।
পরবর্তীতে বামফ্রন্ট সরকার এরাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন জেলা ভিত্তিক গণসংগঠনের শাখা স্থাপন হয়। শুধু থিয়েটার নাটক নয়, নাচ গান আবৃত্তি নানা বিষয়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো জেলা ভিত্তিক। রাজ্য ক্ষমতার পালা বদল হওয়ার পর বেশ খানিকটা ধাক্কা খায় গণনাট্য সংঘ। তবে এখনো তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, সাধারণ মানুষের চেতনা গড়ে তোলার কাজ করে থাকেন গণনাট্যের মাধ্যমেই।ভারতীয় গণনাট্য সংঘের ৮ম জেলা সম্মেলন উপলক্ষে গতকাল সন্ধ্যায় কৃত্তিবাস জনকল্যান কেন্দ্রের সামনে প্রকাশ্য মঞ্চে স্থানীয় রেড ভলেন্টিয়ার সদস্যদের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং শান্তিপুর গণনাট্য শাখা সংগঠনের পক্ষ থেকে একটি নাটক উপস্থাপিত হয়েছে । জেলা এবং জেলের বাইরে থেকে আগত 18 টি দলের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় কৃত্তিবাস জনকল্যাণ কেন্দ্রে।