নেশামুক্ত সমাজ গঠন করতে কল্যাণপুরে অভিনব উদ্যোগ প্রজাপিতা ব্রহ্মাকুমারী ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের।

0
441

এিপুরা – তেলিয়ামুড়া, রাহুল দাস:- নেশা আমাদের সমাজকে বিষিয়ে তুলছে। বিরাট অংশের যুবসমাজ এই নেশার করাল ছায়ায় নিজেদের এবং সমাজের বড় ক্ষতির সম্মুখীন করছে। বিভিন্নভাবে নেশা প্রতিরোধ করার জন্য উদ্যোগ জারি থাকলেও আমাদের সমাজ কোনোভাবেই নেশার করাল ছায়া থেকে মুক্ত হতে পারছে না। বিশেষ করে ত্রিপুরা রাজ্যের বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর এই সরকারের প্রধান, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব ত্রিপুরা রাজ্যকে নেশা মুক্ত রাজ্য গঠনের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা নিয়েছেন। সরকার নেশা প্রতিরোধে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, প্রতিনিয়ত প্রশাসন নেশার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। বেশ কিছু সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সমূহ সমাজকে নেশা মুক্ত করার অভিপ্রায় নিয়ে নানান কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখছে তবুও নেশার বাড়বাড়ন্তে উদ্বিগ্ন সভ্যসমাজ, উদ্বিগ্ন আগামী দিনের জন্য যারা ভাবে তারা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে বর্তমানে ৮৫শতাংশ রোগ হয় মানসিক দুশ্চিন্তার কারণে, একটা অংশের মানুষ এই দুশ্চিন্তা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে বা কৃত্রিম সুখের জন্য তামাক, মদ, হিরোইন প্রভৃতি বিভিন্ন ধরনের নেশার ছায়ায় নিজেকে বিলিয়ে দিচ্ছেন এবং নানান প্রকারের কঠিন শারীরিক রোগ যেমন ক্যানসার, যক্ষা ইত্যাদি বর্তমান সমাজের নিত্য সঙ্গী হয়ে উঠছে।
বরাবরই সমাজের নানান প্রকারের সমস্যা নিরসন করে মানব সমাজকে সঠিক মার্গ দর্শন করানোর ক্ষেত্রে প্রজাপিতা ব্রহ্মাকুমারী ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয় দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বলাবাহুল্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাজকর্ম বারবার প্রমাণ করে সমাজকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ রাখতে তাদের উদ্যোগ অন্যদের পথ দেখায়।
এ রকমই এক মহতী উদ্যোগ পরিলক্ষিত হল কল্যাণপুরে। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন কল্যাণপুরে চলছিল ৫৬ প্রহরব্যাপী হরিনাম সংকীর্তন অনুষ্ঠান ।এই হরিনাম সংকীর্তনে কল্যাণপুরের ঐতিহ্য অনুযায়ী হাজার হাজার বিভিন্ন ধর্মের নরনারীরা হরিনাম সংকীর্তন এর আসরে সামিল থাকেন।
এবারও তার অন্যথা হয়নি, আর এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আবহকে পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে সমাজকে নেশা মুক্ত করার জন্য রীতিমতো স্টল খুলে প্রচার কর্মসূচী এবং নেশা বিরোধী সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করে আলোড়ন তৈরি করল প্রজাপিতা ব্রহ্মাকুমারী ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দাঁড়িয়ে মানুষকে বিভিন্ন বিষয় যেমন হাতে কলমে বোঝালেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যকর্তারা ঠিক তেমনি বড় বড় প্রচার সামগ্রীর সাহায্যে মানুষের কাছে প্রচার তুলে দেওয়া হল নেশার বিরুদ্ধে।
এই অভিনব কর্মসূচি সম্পর্কে আমাদের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম কর্মকর্তা আগরতলার দীলিপ দেবনাথ জানান আগামীদিনে সুস্থ সবল সুন্দর এবং নেশামুক্ত সমাজ গঠনের উদ্দেশ্যেই তাদের এই প্রচার।
যারা নেশা থেকে মুক্ত হতে পারছেন না তাদের জন্য প্রজাপিতা ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাজযোগের মাধ্যমে বিনামূল্যে নেশা মুক্ত কেন্দ্র স্থাপন করেছেন বলেও জানিয়েছেন দিলীপ বাবু।
সব মিলিয়ে চলাচলে হরিনাম সংকীর্তন এর আবহের মাঝে প্রজাপিতা ব্রহ্মাকুমারী ঈশ্বরীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর নেশা মুক্ত সমাজ গঠনের লক্ষ্যে আয়োজিত সচেতনতামূলক সারা জাগানো কর্মসূচি উপস্থিত সকলের প্রশংসা কুড়িয়ে নেয়।