নিজস্ব সংবাদদাতা,পূর্ব মেদিনীপুর:- সন্ধ্যা নামলেই ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পাঁশকুড়া প্রবেশ করলে মনে হবে আপনি কোন শিল্পাঞ্চলে প্রবেশ করেছেন।সারা মাঠজু্ড়ে কেবল আলো আর আলো।আপনার মনে জাগবে কৌতুহল! বিষয়টা কি? মাঠের চারিদিকে এতো আলোরশোভা কেন! না এটা কোন শিল্প এলাকা নয়।পাঁশকুড়ার মহৎপুর,নারান্দা,নেকড়া,নস্করদিঘি, শিমূলহান্ডা সহ একাধিক গ্রামে চিত্রটা একই।স্থানীয়দের কাছে বিষয়টি অজানা নয়,তবে বহিরাগত মানুষদের কাছে বিষয়টি রীতিমতো কৌতুহল জাগবে এলাকায় মাঠের আলো জ্বলার কারন কারন বিষয়ে।মূলত তই সমস্ত গ্রামগুলি ফুল চাষের জন্য বিখ্যাত।বিশেষকরে চন্দ্রমল্লিকা চাষ এই এলাকায় ব্যপকহারে হয়ে থাকে।এই পাঁশকুড়া এলাকার চন্দ্রমল্লিকা ফুল রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও নেপাল,ভূটান সহ বিদেশের মাটিতেও পাড়ি দেয় পাঁশকুড়ার চন্দ্রমল্লিকা।তবে প্রশ্ন জাগবে মাঠের আলোর রহস্যটা কি!
মোটের ওপর বলা যায়,পাঁশকুড়া এলাকায় কৃষকেরা সম্প্রতি বেশকয়েক বছর নিজেরাই কৃষিতে বিজ্ঞানের প্রয়োগ অজান্তেই করে ফেলেছিলেন।মূলত চন্দ্রমল্লিকা চাষে কৃষকেরা এই আলোক পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন।প্রশ্ন জাগবে কিভাবে এই চাষে কৃষকেরা আলোর প্রয়োগ ঘটিয়ে চাষে একপ্রকার বিপ্লব আনলো! মূলত এলাকার অনেক কৃষকের বাড়ির সামনেই চন্দ্রমল্লিকার বাগান রয়েছে।চাষিরা লক্ষ্যকরেন,ফুল আসার সময়ে বাগানের দুটি ভিন্নরূপ।যখন বাগানে ফুল ভরপুর,তখন বাড়ির সামনে যে অংশে আলো পড়ছে সেই অংশে ফুল কুঁড়ি অবস্থায় রয়েছে।ফুল চাষিদের কাছে বিষয়টি অবাককর লাগে।তারা কারন উৎঘাটনের চেষ্টা করেন বিভিন্ন কৃষি আধিকারিক সহ বিধান চন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষদের সাথেও।এরপর বিষয়টি বোধগম্য হয় চন্দ্রমল্লিকা ফুলের চাষে আলোর ব্যবহারে বিজ্ঞানের ব্যবহার প্রসঙ্গে।চন্দ্রমল্লিকা ফুল গাছ আলোক সহনশীল।রাতে আলো পেলে গাছের বৃদ্ধি যেমন ব্যহত হবে পাশাপাশি ফুল আসতেও সময় নেবে।তাই এই আলোকপদ্ধতি ব্যবহার ঘটিয়ে যে সময় ফুলের দাম থাকেনা,সেই সময় আলো জ্বালিয়ে ক্ষেতে চন্দ্রমল্লিকার বৃদ্ধি ব্যহত করা হয়।ফলে ফুল আসতে কিছুটা দেরীতে আসলে যে সময় বাজারে ফুলের দাম বা বিয়ের লগন থাকে সেই সময় বাজার ধরতে পারে কৃষকেরা।এই আলোক পদ্ধতি ব্যবহার করে স্থানীয় কৃষকেরা অজ্ঞাতেই কৃষিতে বিজ্ঞানের প্রয়োগ ঘটিয়ে একপ্রকার চাযে বিপ্লব ঘটিয়েছেন মহৎপুরের চন্দ্রমল্লিকা চাষিরা।এই আলোক পদ্ধতি মহৎপুর ছাড়িয়ে এখন একাধিক গ্রাম বা পার্শ্ববর্তী ব্লকের কৃষকেরাও এই পদ্ধতি ব্যবহার করছেন ফুলচাষির।আর এই আলোক পদ্ধতিতে চন্দ্রমল্লিকা ফুলপর চাষ দেখতে বহু মানুষ ভিড় জমান পাঁশকুড়া এলাকায়।মূলত কৃষকেরা অজ্ঞাতেই বিজ্ঞানের প্রয়োগ ঘটিয়ে রীতিমতো ফুলচাষে নতুন দিগন্ত এনে দিয়েছেন। এমনই এক ফুল চাষি মহৎপুর গ্রামের দেবেন্দ্র নাথ জানা।তিনি বলেন লাইট জ্বালিয়ে অসময়ের ফুল ফোটানো যায় তাই দামও বেশি পাওয়া যায়, তাই এই ধরনের আমাদের উদ্যোগ।
Home রাজ্য দক্ষিণ বাংলা মাঠে বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালিয়ে বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে চন্দ্রমল্লিকা ফুল চাষে লাভবান হচ্ছে পাঁশকুড়ার...