বীরভূম, সেখ ওলি মহম্মদঃ- রাত পোহালেই পয়লা জানুয়ারি l তার আগে বছরের শেষ দিনে দুবরাজপুর ব্লকের সদাইপুর থানার বক্রেশ্বর নীল নির্জন জলাধারে পর্যটকদের ভিড় l শীত আস্তেই রাশিয়ার সাইবেরিয়া থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে পরিযায়ী পাখির দল মিলিত হয় নীল নির্জন জলাধারে l আর সবুজ বনানীর পাশে বক্রেশ্বর থার্মাল পাওয়ারের এই জলাধারকে ঘিরেই পর্যটনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বীরভূমে। তাই পরিযায়ী পাখিদের দেখতে বেশ কয়েক বছর ধরেই এখানে ভিড় জমান পর্যটকেরা, সামিল হন বনভোজনে ,আনন্দে মেতে ওঠেন তারা l বক্স আর মাইকের দাপাদাপিতে শব্দ দূষণ যেমন বাড়ছিল তেমনি কমছিল পরিযায়ী পাখিদের আনাগোনা l গত দু’বছর করোনাকালে বন্ধ ছিল সবকিছু, পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হতেই পর্যটকদের ভীড় এই নীলনির্জন জলাধারে l তাই শব্দ দূষণের পাশাপাশি পরিযায়ী পাখিদের যাতে কোন অসুবিধা না হয় সে কথা মাথায় রেখে দুবরাজপুরের বনদপ্তর নীল নির্জন চত্বরে মাইক না বাজানোর আবেদন করে। শুধু তাই নয় জলাধারে পাখিদের কাছে বোটিং না করারও আবেদন জানানো হয়।
দু বছর টানা করোনাকালীন পরিস্থিতিতে কোন পর্যটক না আসায় জীবন-জীবিকা অনেকটাই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এবছর করোনার প্রভাব কিছুটা কমায় পর্যটকেরা ফের আসতে শুরু করেছে নীল নির্জনে। তাই জলাধারে পাখিদের কাছাকাছি না নিয়ে গেলেও বটিং করিয়ে কিছুটা লাভের মুখ দেখছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
বছরের শেষ দিন ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে বক্স বাজিয়ে আনন্দ করার ইচ্ছা ছিল ,কিন্তু বন বিভাগের কর্মীদের আবেদনে সাড়া দিয়ে নীল নির্জনে পরিযায়ী পাখিদের কথা ভেবে বক্স না বাজিয়ে অভিভাবকরা শুধু গলায় গাইলেন গান। আর তার তালেই নাচলো ছাত্রীরা। পরিবেশ সচেতনতায় সাধারণ বাসিন্দা থেকে পর্যটকদের সচেতন করার কাজে বন বিভাগের উদ্যোগে খুশি নীল নির্জনে বেড়াতে আসা পর্যটকরাও।
প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করতে পাখিদের জুড়ি মেলা ভার। তাই বক্রেশ্বরের নীল নির্জনে ঘুরতে আসা পর্যটকদের কাছে সচেতনতা বার্তা তুলে ধরছেন বনকর্মীরা। আর এভাবেই শব্দ দূষণের পাশাপাশি রক্ষা করা যাবে পাখিদেরও। আগামী দিনে নীল নির্জন পাখির কলতানে হয়ে উঠবে মুখরিত এমনটা আশা করা যায়।