বর্ণালী রায়; দক্ষিণ দিনাজপুরঃ ভোটার লিস্টে নাম তুলে দেওয়ার জন্য টাকা দাবী, ঘটনায় অভিযুক্ত বি.এল.ও। অভিযুক্ত বি.এল.ও-র নাম স্বপ্না মৈত্র, তিনি পেশায় একজন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। জানা গেছে বালুরঘাট শহরের নতুন ১৭নং ওয়ার্ডের সাহেবকাছাড়ির মনিমেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় বুথ অভ্যন্তরস্থ এলাকার বাসিন্দা পুতুল দাস-এর বাপের বাড়ি জলপাইগুড়িতে এবং শ্বশুর বাড়ি বালুরঘাটের সাহেবকাছাড়ি পাড়ায়। এও জানা গেছে পুতুল দাস প্রায় বেশ কয়েক বছর ধরেই নিজের নাম ভোটার তালিকায় তুলবার চেষ্টা করছিলেন। যদিও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের অভাবে বা আবেদন পদ্ধতির ভুলের জন্য হয়ত তার নাম ভোটার তালিকায় উঠছিল না। উল্লেখ যে মনিমেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫১নং, ৫২নং, ৫৩নং তিনটি বুথ রয়েছে। অভিযোগ ঐ ৫২নং বুথের দায়িত্বে থাকা বি.এল.ও স্বপ্না মৈত্র পুতুল দাস-এর নাম ভোটার তালিকায় তুলে দেওয়ার জন্য পুতুল দাস-এর শাশুড়ী রিনা দাস-এর কাছ থেকে ২০০০ টাকা দাবী করেন। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে পুতুল দাস-এর নাম ভোটার তালিকায় উঠেছে। গৃহবধু পুতুল দাস বলেন আমার বাপের বাড়ি জলপাইগুড়ি এবং শ্বশুর বাড়ি বালুরঘাটে, আমার বিয়ে হওয়া দশ বছর হয়েছে। তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনে অভিযোগ করে বলেন ভোটের নাম উঠছিল না এবার ভোটের নাম উঠেছে বলে ২০০০ টাকা চাইছে বুথের বি.এল.ও। তিনি বলেন শুনেছি নাম উঠেছে এখন টাকা দিলে ভোটার কার্ড দিবে। এই ঘটনা চাউড় হতেই বালুরঘাট জুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। সাধারণ মানুষদের বক্তব্য ভোটার তালিকায় নাম উঠাতে সহায়তা করা বি.এল.ও-দের কাজ, সেখানে কি করে একজন বি.এল.ও টাকা দাবী করতে পারে সাধারণ মানুষদের কাছে। অপরদিকে অভিযোগ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত বি.এল.ও স্বপ্না মৈত্র বলেন পুতুল দাস-এর নাম উঠেছে, আমার বাড়িতে এসে বলেছিল, মিষ্টি খাওয়ার পয়সা তোমরা যা দেবে-তাই দেবে, মিষ্টি খাওয়ার পয়সা নিশ্চয় ৫ হাজার, ১০ হাজার বা ১৫ হাজার না। তিনি টাকা চাওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন পুতুল দাস আমার পার্টের নন, উনি ৫৩নং পার্টের, আমি ৫২ পার্টে কাজ করছি। স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে অভিযুক্ত স্বপ্না মৈত্র একজন বিজেপি কর্মীও। গত বিধানসভা নির্বাচনে এলাকায় বিজেপির হয়ে তাকে দলীয় প্রচার করতেও দেখা গেছে। এই ঘটনা সামনে আসতেই ঘটনা প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়ায় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের সভাপতি প্রদীপ্তা চক্রবর্তী বলেন যেখানে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী সবসময় গুরুত্ব প্রদান করে আসছেন মহিলাদের ভোটাধিকার প্রদানের বিষয়ে, সেখানে একজন গৃহবধুকে ভোটার তালিকায় নাম তুলবার জন্য টাকা দিতে হবে এটা কখনোই মানা যায় না। তিনি বলেন ঘটনার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। অপরদিকে অভিযোগ প্রসঙ্গে বালুরঘাট মহকুমার মহকুমাশাসক সুমন দাশগুপ্ত-র বক্তব্য গুরুতর অভিযোগ, তদন্ত করে দেখা হবে এবং অভিযোগ প্রমাণ হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।