সরকারি প্রকল্পের ঘোষণায় ওয়াল ভরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়, দিনমজুরি করে উপার্জনের টাকায় স্ত্রী সুধা আর ছেলে স্বাগতর পেটে কিছু দানা ঢোকাতে পারলেও মাথা গোঁজার ভালো ঠাঁই দিতে পারেননি সুনীলবাবু।

0
315

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদাঃ- মাথার উপর টিনের চালা দিয়ে ভিতরে আসা রোদ-আঁধারে দিন-রাতের ঠাহর হয়। চারপাশের ছেঁড়া পলিথিন পেরিয়ে ভিতরে ঢোকা জল-বাতাস বলে দেয় ঋতুর সময়কাল। জানুয়ারির প্রথমে আকাশে আঁধার ঘনালেও গা হিম করা বাতাস বইছে। আচ্ছাদনের ভিতরে থাকা শরীরগুলো কুঁচকে থাকে রাতভর। তাই রবিবাসরীয় সকালে সব কাজকর্ম ছেড়ে পলিথিনের ফুটোগুলোয় টেপ লাগাতে ব্যস্ত গৃহকর্তা। টেপ লাগিয়ে কি ঠাণ্ডা আটকানো যাবে? প্রশ্ন করতেই তাঁর উত্তর, ‘মাথা গোঁজার ঘরই নেই তো ঘরকন্না! নতুন পলিথিন কেনার টাকা কোথায় পাব? দাঁড়ান দাদা, রোদ থাকতে থাকতে ফুটোগুলো বন্ধ করি।’
সরকারি প্রকল্পের ঘোষণায় ওয়াল ভরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভোটপাখিদের ঠোঁটে কিচিরমিচির করে সেসব কথাই। পাড়ায় পাড়ায়, মহল্লায় মহল্লায় প্রকল্পের মাইক ঘোষণায় আকাশ ফাটে। কিন্তু কপাল ফাটে না চাঁচল ১ নম্বর ব্লকের খরবা গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তরপাড়ার বাসিন্দা সুনীল বসাকের। সারাদিন দিনমজুরি করে উপার্জনের টাকায় স্ত্রী সুধা আর ছেলে স্বাগতর পেটে কিছু দানা ঢোকাতে পারলেও মাথা গোঁজার ভালো ঠাঁই দিতে পারেননি সুনীলবাবু। এখন যেখানে দিন-রাত কাটাচ্ছেন, তার থেকে অনেক গৃহস্থের গোয়াল ঢের ভালো। আজ আমাদের ক্যামেরায় সেই সুনীলবাবুর দুর্দশার ছবিই উঠে এল।
ভাঙা আস্তানায় ভাঙা মনে সুনীলবাবু জানালেন, ‘দিনমজুরি করে কোনওমতে তিনটা পেট চালাই। কিন্তু এই বাজারে এই উপার্জনের টাকায় ঘর করার কল্পনা স্বপ্নেও আসে না। সরকারি ঘরের কথা শুনেছি বটে, কপালে জোটেনি। কী করলে ওই ঘর পাওয়া যায়, তার সঠিক পথও জানা নেই।’ সুনীলবাবুর দুর্দশার কথা জানা থাকলেও সরকারি ঘর কিংবা অন্য কোনও প্রকল্পের সুবিধে তাঁরা কীভাবে পাবেন, তা জানা নেই প্রতিবেশীদেরও। চাঁচল টিভি নিউজের সামনে তা স্বীকার করেছেন তাঁরা। কিন্তু প্রশাসন কিংবা জনপ্রতিনিধিদের বক্তব্য? শোনাই যাক…