তৃণ্ময় বেরা, ঝাড়গ্রাম:- জঙ্গলমহল উৎসবের যেসব শিল্পী অনুষ্ঠান করবেন ও স্টলে যাঁরা থাকবেন তাঁদের করোনার নেগেটিভ রিপোর্টের পাশাপাশি উৎসবে ঢুকতে গেলে দর্শকদেরও নেগেটিভ রিপোর্ট লাগবে। অথবা সঙ্গে থাকতে হবে প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ নেওয়ার শংসাপত্র। নাহলে জঙ্গলমহল উৎসবে ঢুকতে পারবেন না মানুষজন। পাশাপাশি এবার জঙ্গলমহল উৎসবে শুধুমাত্র ঝাড়গ্রাম জেলার শিল্পীরা অনুষ্ঠান করবেন। জেলার বাইরের কোনও শিল্পী অনুষ্ঠান করতে পারবেন না। শনিবার ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক জয়সি দাশগুপ্ত প্রেস বিজ্ঞপ্তি আকারে তা জানিয়ে দিয়েছেন। করোনা বিধি মেনে উৎসব করার জন্য কি কি পদক্ষেপ নিয়েছেন জেলাশাসক তাও জানিয়ে দিয়েছেন।
সপ্তাহ খানেক ধরে ঝাড়গ্রাম জেলায় করোনার সংক্রমণ বেড়েছে। জেলার মধ্যে শহরে করোনার সংক্রমণ বেশি। গত সোমবার শহরে লকডাউন হয়েছিল। তাছাড়া চলতি সপ্তাহে সরকারি অফিসগুলি একদিন অন্তর খোলা থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জেলা প্রশাসন। এমন আবহে ঝাড়গ্রাম শহরে জঙ্গলমহল উৎসব হওয়ায় হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিল বাম যুব নেতা প্রতীক মৈত্র। শুক্রবার বিকেলে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন ব্রেঞ্চ মামলার নিষ্পত্তি করে জানিয়েছিলেন, এই নির্দেশ দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঝাড়গ্রামের জেলাশাসককে সিদ্ধান্ত নিতে হবে উৎসব করার পরিস্থিতি রয়েছে কিনা। জানা গিয়েছে, সেই মত এদিন জেলাশাসক জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে জানিয়ে দিয়েছিলেন জঙ্গলমহল উৎসব হবে। এমনকি তা করোনা বিধি মেনে হবে। বাইরের শিল্পীরা অনুষ্ঠান করতে পারবেন না। পাশাপাশি এদিন রাজ্য সরকারও করোনা বিধি মেনে খোলা আকাশের নীচে মেলা করার অনুমতি দিয়েছে। তারপরই জেলাশাসক প্রেস বিজ্ঞপ্তি করে জানিয়ে দিয়েছেন, অষ্টম বর্ষ জঙ্গলমহল উৎসব করোনা বিধি মেনে ১৭-১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত হবে। শুক্রবার হাইকোর্টের নির্দেশের পরও উৎসব প্রাঙ্গণে প্রস্তুতির কাজ চলছিল। এদিন উৎসব প্রাঙ্গণে জোরকদমে চলছে প্যান্ডেলের কাজ। শহরের ননীবালা বয়েজ মাঠে হবে জঙ্গলমহল উৎসব। প্রশাসন সূত্রে খবর, এবার কারিগরি হাটের ধরন বদালাচ্ছে। আগে কারিগরি একটি ঘেরা জায়গার মধ্যে হত। এবার চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে খোলামেলা অবস্থা থাকবে। বাতাস চলাচল করতে সেরকম জিনিস দিয়ে প্যান্ডেল করা হবে। দর্শকদের ৪৮ ঘণ্টা আগের অ্যান্টিজেন টেস্টের নেগেটিভ রিপোর্ট বা আরটিপিসিআর টেস্টের ৭২ ঘণ্টা আগের নেগেটিভ রিপোর্ট সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। অথবা সঙ্গে থাকতে হবে প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ নেওয়ার শংসাপত্র। পাশাপাশি দর্শক থার্মাল গান দিয়ে চেকআপ করা হবে। মাঠের মধ্যে দু’শোজ নের বেশি একসঙ্গে থাকতে পারবেন না। উৎসবস্থলে প্রবেশ ও বেরোনোর জন্য আলাদা দু’টি পৃথক গেট থাকবে। অনুষ্ঠানস্থলে স্যানিটাইজার ও নিয়মিত স্যানিটাইজেশন করা হবে।অনুষ্ঠান স্থলের বাইরেও ভিড় নিয়ন্ত্রিত করা হবে। জেলাশাসক জয়সি দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘যেহেতু একাধিক জেলায় এবার উৎসব হচ্ছে। তাই আমরা আগে থেকেই সমস্ত প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। একদম ছোট করে কোভিড বিধি মেনে জঙ্গলমহল উৎসব করা হবে।’’ সংক্রমণের ব্যাপারে জেলাশাসক বলেন, ‘‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’’