বেআইনি ভাবে পাট্টা হস্তান্তর করে সরকারি জমিতে অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ হরিশ্চন্দ্রপুরে।

0
252

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদাঃ- বেআইনি ভাবে পাট্টাতে পাওয়া জমি হস্তান্তর করে সেই সরকারি জমিতে অবৈধ ভাবে বাড়ি তৈরির কাজ চলছে।এমনকি ওই জমিতে থাকা সরকারি ক্যানেল বুঝিয়ে দিয়ে তার উপরে চলছে বাড়ি তৈরীর কাজ। এমনই চিত্র ধরা পড়েছে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লক এলাকার আইটিআই কলেজ সংলগ্ন হরিশ্চন্দ্রপুর বাজারপাড়া এলাকায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায় এই এলাকার বাসিন্দা মৃত পিন্টু দাসের পাট্টা তে পাওয়া জমি তার ছেলে ননতু দাস বেআইনি ভাবে শেখ বাবুল নামে এক ব্যক্তিকে বিক্রি করে দিয়েছে। এখন ওই জমিতে শেখ বাবুল নামের ওই ব্যক্তি প্রকাশ্য দিবালোকে সরকারি জমির উপর পাকা বাড়ি নির্মাণ করছে। এছাড়া ওই জমির সামনে দিয়ে একটি সরকারি নয়নজুলি রয়েছে । ওই নয়নজুলি দিয়ে আইটিআই কলেজ, পার্শ্ববর্তী গ্রামীণ হাসপাতাল, এবং বাজারপাড়া সহ একাধিক এলাকার জল নিষ্কাশন হয়। কিন্তু কার্যত দেখা যাচ্ছে প্রশাসনের নাকের ডগায় সরকারি জমির ওপর অবৈধ নির্মাণ করার পাশাপাশি নয়নজুলিও ভরাট করে দেওয়া হচ্ছে। নিশ্চুপ রয়েছেন ভূমি সংস্কার আধিকারিকের দপ্তর থেকে শুরু করে ব্লক প্রশাসন।এলাকাবাসীর প্রশ্ন কি ভাবে পাট্টা হস্তান্তর করে সরকারি জমির উপর বাড়ি নির্মাণ করা যায় এই নিয়ে এলাকাবাসী হতচকিত। দিনের-পর-দিন প্রকাশ্য দিবালোকে কিভাবে সরকারি জমি চুরি হয়ে যাচ্ছে অথচ কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিকরা। এলাকাবাসীর অভিযোগ এই ধরনের অবৈধ কাজের পিছনে এলাকার ভূমি সংস্কার আধিকারিকের মদদ রয়েছে। অধিকারীদের সঙ্গে মিলিত ভাবে যোগসাজশ করে এই ভাবে দিনের বেলায় সরকারি পাট্টা দেওয়া জমি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। আবার সেই জমির সামনে থাকা সরকারি নয়নজুলি ও ভরাট হয়ে যাচ্ছে।

যেখানে পাট্টা দেওয়া জমি কখনোই হস্তান্তর বা বিক্রি করা যায় না। পাট্টা পাওয়া জমিতে কৃষক চাষ করতে পারে অথবা কোনো গরিব মানুষ কে সরকার বাড়ি তৈরি করে দিতে পারে। কিংবা সরকারি কোনো প্রকল্প গড়ে তোলা যায়। কিন্তু এই ভাবে দিনে-দুপুরে সরকারি জমি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। এবং প্রশাসন নীরব দর্শকের মত ভূমিকা নিচ্ছে তাতেই এলাকার মানুষ সন্দিহান এর পিছনে ভূমি সংস্কার দপ্তরের বড় হাত রয়েছে। এমনকি ওই দপ্তরের বড় বড় আধিকারিকরা এই সমস্ত মাফিয়া চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বলে দাবি এলাকার বাসিন্দাদের। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ হরিশ্চন্দ্রপুরএর সব থেকে বড় জমি মাফিয়া ভূমি সংস্কার আধিকারিক নিজে। না হলে এই ভাবে দিনে-দুপুরে সরকারি জমি দখল হতো না। যদিও পুরো বিষয়টি এলাকার বিধায়ক তজমুল হোসেনের নজরে আসতেই তৎপর হয়েছে বিধায়ক, ভূমি সংস্কার আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলে অবৈধ কাজের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিধায়ক তজমুল।

যদিও এ প্রসঙ্গে চাঁচল মহকুমা শাসক কল্লোল রায় জানিয়েছেন বিষয়টি নিয়ে এখনও অভিযোগ পাইনি তবে এই বিষয়ে ওঠা অভিযোগ সরকারি স্তরে খতিয়ে দেখা হবে। বিডিও কে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, অভিযোগের সত্যতা থাকলে প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে এ বিষয়ে ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিকদের জিজ্ঞেস করা হলে ক্যামেরার সামনে কোনো মন্তব্য করতে চাননি, যদিও তারা জানান এ বিষয়ে তাঁরা কেউ জানেন না। এমনকি কোথাও সরকারি জমি দখল হচ্ছে এই খবর ও তাদের কাছে নেই। সব মিলিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুরের সরকারি জমি দখল কেন্দ্র করে পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে উঠেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here