মনিরুল হক, কোচবিহার: শস্যবিমার আবেদনকারীদের একাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়ার অভিযোগ তুলে ব্যাঙ্কের একটি শাখায় তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন কৃষকদের। আজ দিনহাটা ২ নম্বর ব্লকের নয়ারহাট এলাকায় উত্তরবঙ্গ ক্ষেত্রীয় গ্রামীণ ব্যাঙ্কের একটি শাখায় ওই ঘটনা ঘটেছে। আন্দোলনকারী কৃষকদের নিয়ন্ত্রণ করতে এক সময় সাহেবগঞ্জ থানার পুলিশকে পর্যন্ত ছুটে আসতে হয়।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, মাস খানেক আগে শস্য বিমার জন্য আবেদন করেছিলেন স্থানীয় কৃষকরা। সম্প্রতি আবেদনকারী কৃষকরা তাঁদের ব্যাক্তিগত একাউণ্ট চেক করতে গিয়ে জানতে পারছেন একেকজনের একাউন্ট থেকে সাড়ে তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত কেটে নেওয়া হয়েছে। যেখানে এই শস্য বিমার টাকা রাজ্য সরকার দিয়ে থাকে, সেখানে তাঁদের একাউন্ট থেকে কেন ওই টাকা কেটে নেওয়া হল, তা জানতে চেয়ে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন আন্দোলনকারী কৃষকরা। বিষয়টি নিয়ে কৃষি দফতরের স্থানীয় কেপিএস এবং ব্লক কৃষি আধিকারিকের সাথেও কথা বলেন। এরপরেই তাঁরা ব্যাঙ্কের গেটে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।
স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য মজিদুল পাটোয়ারি বলেন, “এখানে আন্দোলনকারীরা সবাই কৃষক। এক মাস আগে শস্য বিমার জন্য আবেদন করেন এই কৃষকরা। সম্প্রতি সকল আবেদনকারীর একাউন্ট থেকে শস্য বিমার নামে হাজার টাকা কেটে নেওয়া হয়। যেখানে সরকার এই বিমার টাকা দিয়ে দিচ্ছে, সেখানে কৃষকদের একাউন্ট থেকে কেন টাকা কাটা হবে, কৃষকরা যাতে ওই টাকা ফেরত পায়, তার জন্য এই আন্দোলন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।”
স্থানীয় আরও দুই কৃষক অভিযোগ করে বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন বিনামূল্যে শস্য বিমা করে দেওয়ার। আমরা ২০২১ এর আবেদন করেছিলাম, তখন টাকা কেটে নেওয়া হয়। এবার ২০২২ এর আবেদন পত্র জমা দেওয়ার পরেই আমাদের একাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে। আমরা স্থানীয় কৃষি আধিকারিকদের সাথেও কথা বলেছি। তাঁরাও জানিয়েছেন কৃষকদের টাকা কাটার কোন নিয়ম নেই। তাই ব্যঙ্ক কর্তৃপক্ষ টাকা না ফিরিয়ে দেওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলতে থাকবে।”
ব্যাঙ্ক ম্যানেজার দেবব্রত ভট্টাচার্য বলেন, “বাংলা শস্য বিমা প্রকল্পে এবার যে গাইড লাইন দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে উইলিং, নন উইলিংয়ের একটি বিষয় রয়েছে। যাদের একাউন্টে টাকা ছিল, তাঁদের টাকাই কাটা হয়েছে। যাদের নেই, তাঁদের কাটা হয় নি। লোণের সাথেও এর কোন সম্পর্ক নেই।”