মালদা, নিজস্ব সংবাদদাতা:-জেসিপি দিয়ে চলছে 100 দিনের খাল খননের কাজ ।এমনই গুরুতর অভিযোগ তৃণমূল পরিচালিত এনায়েতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এর বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে কাজ করছে প্রধান বলে কাজ রুখে দিলেন তৃণমূলেরই কয়েকজন সদস্য। বিরোধিতার মুখে পড়ে প্রধানের আজব দাবি এটি 100 দিনের কাজ নয়, মানুষের দানের টাকায় চলছে জেসিবি দিয়ে খাল খননের কাজ। কিন্তু কে বা কারা টাকা দান করেছেন ,সেই টাকার পরিমাণ ই বা কত সেই নিয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি এনায়েতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানসহ কোন আধিকারিক খাল খননের জন্য দানে পাওয়া টাকার কোনরকম নথিপত্র দেখাতে পারেননি কেউই ।শুধুমাত্র নিজস্ব মুনাফার জন্য গুটিকয়েক মুষ্টিমেয় সদস্যদের নিয়ে বেআইনিভাবে কাজ করছেন বর্তমান প্রধান মনিরা খাতুন বলে অভিযোগ তোলেন খোদ তৃণমূলের প্রাক্তন প্রধান আবু কালাম আজাদ।
জানা গেছে এনায়েতপুর মিরাগ্রামের শেখ এজাবুলের জমি থেকে ছোট দরগা পর্যন্ত ক্যানেল সংস্করণের 100 দিনের কাজের প্রকল্প নেয় এনায়েতপুর গ্রাম পঞ্চা।যার স্কিন কোড 3209007004/IC/GIS/713062 ।মোট বরাদ্দ 24 লক্ষ 6 হাজার 81 টাকা ।এই খাল খনন কাজে 10 হাজার 614 টি শ্রম দিবস হওয়ার কথা । সমস্ত বিবরণ দিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় বোর্ড ও টাঙানো হয় ।কিন্তু অভিযোগ সোমবার সকালবেলা ১০০ দিনের খাল খনন কাজে গ্রামের সাধারণ শ্রমিককে ব্যবহার না করে জেসিপি দিয়ে খাল খনন করার শুরু করে এনায়েতপুর গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। কাজের তদারকিতে হাজির ওই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী মীর আবদুল মান্নান ও এনায়েতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান এর স্বামী তথা এলাকার তৃণমূল নেতা তাফাজ্জুল হোসেন। কিন্তু এই কাজকে বেআইনি বলে কাজ রুখে দেন সদ্য অনাস্থার মাধ্যমে প্রধান পদ থেকে বরখাস্ত আবু কালাম আজাদ ।এনায়েত পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান আবু কালাম আজাদ কয়েকশো ১০০ দিনের কাজের শ্রমিককে নিয়ে হাজির হন ঘটনাস্থলে। তিনি দাবি তোলেন কেন সাধারণ মানুষ দিয়ে কাজের বদলে জেসিবি দিয়ে কাজ চলছে। এই বিষয়ে কাজের তদারকিতে থাকা মীর আবদুল মান্নান জানান, লোকের দানের টাকায় কাজ চলছে ।কিন্তু কে টাকা দান করেছেন বা কত টাকা দিয়েছেন তা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ তিনি। তবে লোকের দানের টাকার কাজে কেন তারা তদারকি করছেন। সেই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তাদের দাবি তারা কোন কাজের তদারকি করছেন না ।কাজ হচ্ছে জানতে পেরে সাধারণ মানুষের মতো কাজ দেখতে এসেছেন।
উল্লেখ্য গত দেড় মাস আগে অনাস্থার মাধ্যমে তৃণমূলের প্রাক্তন প্রধান আবু কালাম আজাদকে বরখাস্ত করেন সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরা। নতুন প্রধান নির্বাচিত হন তৃণমূলের মনিরা খাতুন ।প্রাক্তন প্রধান আবু কালাম আজাদ এবিষয়ে কটাক্ষ করে বলেন ,বর্তমান পঞ্চায়েত বোর্ড জগাখিচুরির বোর্ড ।এই বোর্ড গঠন হয়েছে সাধারণ মানুষের জন্য নয় ,প্রধানসহ সদস্যদের কামাই এর জন্য। এই কাজে ১০হাজার ৬১৪টি শ্রম দিবস উৎপন্ন হবে অর্থাৎ কয়েক হাজার শ্রমিক ১০০ দিনের কাজ পাবে। তিনি অভিযোগ করে বলেন খাল খনন কাজে সাধারণ মানুষকে 100 দিনের কাজ না দিয়ে করে জে সি বি এফ মাধ্যমে কাজ করে প্রচুর প্রচুর মুনাফা করতে চেয়েছেন প্রধান ।জেসিবি এর মাধ্যমে কাজ করিয়ে নিজেদের পেটুয়া শ্রমিকদের একাউন্টে টাকা ঢুকিয়ে মোটা অংকের টাকা আত্মসাতের পরিকল্পনা করেছেন বলে তার অভিযোগ।
কিন্তু সমস্ত অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি প্রধান মনিরা খাতুনের। এনায়েতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান এর স্বামী তথা তৃণমূল নেতা তাফাজ্জুল হোসেন জানান, খাল খননের কাজ টি গত কর্ম বছরে ধরা হয়েছিল। কিন্তু কাজের জিওটেক করতে দেখা যায় এলাকাটি এনায়েত পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কোন মৌজায় পরেনা ।এই জায়গাটি চৌকি মিরজাদপূর অঞ্চলের অন্তর্গত ।শেষমেষ এই প্রকল্পে কাজ না করার সিদ্ধান্ত নেয় পঞ্চায়েত । পঞ্চায়েতের মধ্যমে কাজ না হওয়ায় এলাকার কৃষকরা চাঁদা তুলে রাস্তা সংস্কারের কাজ করছে।
তৃণমূলের প্রাক্তন প্রধান আবু কালাম আজাদ অভিযোগ করে বলেন, গত কয়েকদিন আগে জেসিপি দিয়ে খাল খননের কাজের জন্য একটি গোপন মিটিং হয় সদস্যদের নিয়ে। সেই মিটিং-এ আমিও হাজির ছিলাম। জেসিবি দিয়ে খাল খননের জন্য প্রত্যেক সদস্যের কাছ থেকে অগ্রিম কুড়ি হাজার টাকা দাবি করেন প্রধান ।কাজের পর শ্রমিকদের একাউন্টের টাকা থেকে মুনাফাসহ প্রত্যেক সদস্যকে টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলে জানানো হয় । সেই গোপন মিটিং এ আমি সাফ জানিয়ে দিয়েছিলাম জেসিবি দিয়ে ১০০ দিনের কাজ মেনে নেওয়া হবে না ।প্রাক্তন প্রধান দাবি করেন, ব্লক ও জেলা প্রশাসনের একাংশের মদতে বেআইনি ভাবে কাজ করছে প্রধান।
এবিষয়ে মানিকচকের বিডিও জয় আমেদ জানান, এখনো পর্যন্ত এরকম কোন লিখিত অভিযোগ আমি হাতে পায়নি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।