মনিরুল হক, কোচবিহারঃ মেঘলা আবহাওয়ায় আলুর ধসা রোগের প্রকোপ বাড়ছিল। তার উপর শুক্রবার রাত থেকে অকাল বৃষ্টিতে আলুর খেতে জল জমে যাওয়ায় কার্যত দিশেহারা মাথাভাঙার আলু চাষিরা। মাথাভাঙা মহকুমা জুড়ে সাড়ে আট হেক্টর জমিতে আলু চাষ ও প্রায় আনুমানিক দশ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে বলে জানা যায়।
কৃষি দফতর সূত্রে খবর, আবহাওয়ার পরিবর্তন না হলে চলতি মরসুমে আলু চাষে ব্যাপক ক্ষতির সম্ভবনা রয়েছে। তবে এখনও হাতে সময় রয়েছে বলেও আশ্বস্ত করছেন কৃষি দফতরের আধিকারিকরা।
স্থানীয় ও কৃষি দফতর সূত্রে খবর, জেলায় ক’দিন ধরেই আবহাওয়া মেঘলা। রোদের দেখা নেই। তাতে সমস্যা বাড়ছিলই। শুক্রবার রাত থেকে জেলা জুড়ে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিতে চাষিদের দুশ্চিন্তা আরও বাড়ে। মাথাভাঙা মহকুমার ফুলবাড়ি, ঘোকসাডাঙা, মাটিয়ারকুঠি, নয়ারহাট, গোপালপুর শীতলখুচি এলাকায় আলু চাষ হয়। শনিবারের বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিতে অনেক জায়গায় আলুর খেতে জল জমে রয়েছে।
এই অবস্থায় মাথাভাঙ্গা পচাগর এলাকার ডাংকবা এলাকার বাসিন্দা আমজাদ হোসেন বলেন, প্রায় ১০০ বিঘা জমি ভারী বৃষ্টিপাতে বিভিন্ন ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ নিয়ে এই সমস্ত আবাদ করেছি এখন যদি সমস্ত ক্ষতি হয়ে যায় তাহলে ভবিষ্যতে যে কী হবে ভাবতেই পারছি না। এ বিষয়ে সরকার যদি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে ভীষণ উপকৃত হব।
এবিষয়ে মাথাভাঙা মহকুমা কৃষি আধিকারিক শ্যামল কান্তি সাহা বলেন, “ভুট্টা চাষের ক্ষেত্রে এই বৃষ্টিটা ভালো তবে কম বয়সী আলু চাষের ক্ষেত্রে অসুবিধা না থাকলেও বৃষ্টির ফলে খেতে জল জমে যাওয়ায় আলু, টমেটো, লঙ্কা পচে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। তবে আবহাওয়া পরিষ্কার হয়ে গেলে চাষিদের চিন্তার কিছু নেই।”
অন্যদিকে স্থানীয় আলু চাষি শম্ভু মন্ডল জানান, কীটনাশক স্প্রে করা হয়েছে। কিন্তু, এদিনের বৃষ্টিতে সেই কীটনাশক ধুয়েমুছে সাফ। জমিতে জলও জমে গিয়েছে। এ বছর ফলন যে কী হবে কে জানে।
এবিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মত,আলু চাষে যে সেচের একদম প্রয়োজন নেই, তা নয়। তবে জমিতে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি জল জমে থাকলে আলু গাছ তা সহ্য করতে পারে না। জমি থেকে দ্রুত জল সরিয়ে না দিলে গাছের গোড়ায় জল জমে পচন শুরু হবে। গাছের ক্ষতি হলে তার প্রভাব পড়বে উৎপাদনেও।
উল্লেখ্য,গত দুইদিনের ভারী বৃষ্টি এবং ঝড়ো হাওয়া তে মাথাভাঙার বেশকিছু কৃষি উৎপাদিত ফসল নষ্টের মুখে। বিশেষ করে তামাক, ভুট্টা, আলু প্রভৃতি র জমিতে প্রচুর জল জমে জামাতের ফসলের ক্ষতি হচ্ছে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন। শুধু মাথাভাঙ্গায় নয় দিনহাটা, তুফানগঞ্জ, সিতাই, শীতলখুঁচিতে ওই অকাল বৃষ্টিতে তামাক, ভুট্টা, আলু ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষকরা।