মনিরুল হক, কোচবিহারঃ ভোট বড় বালাই। বিকল হয়ে থাকা পথবাতি ঠিক করতে এক প্রার্থী নিজেই মই বেয়ে উঠে পড়লেন বিদ্যুতের খুঁটির উপড়ে। আজ কোচবিহার পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোষ পাড়া সংলগ্ন এলাকায় এমন ঘটনা ঘটতে দেখা গিয়েছে। ওই ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী অভিজিৎ দে ভৌমিক(হিপ্পি) মই বেয়ে বিদ্যুতের খুঁটির উপড়ে উঠে বিকল হয়ে পথ বাতি ঠিক করে দিয়েছেন। হিপ্পি নিজেই জানিয়েছেন, ওই পথবাতিটি বেশ কিছুদিন ধরেই বিকল হয়ে পড়ে ছিল। এটা জানতে পাড়ার পর মই বেয়ে উপড়ে উঠে তিনি নিজেই ওই পথ বাতি ঠিক করে দিয়েছেন।
আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে চর্চা। কোচবিহার পুরসভায় দীর্ঘ সময় ধরে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায়। পুর বোর্ডের মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়ার পর প্রশাসক হিসেবে তৃণমূল নেতাদেরই দায়িত্বে বসানো হয়েছিল। কিন্তু পুরসভা যে সঠিক ভাবে পরিষেবা দিতে পারে নি, তাঁর নজির ওই পথ বাতি বলে বিরোধীদের অভিযোগ।
বিজেপি নেতা বিরাজ বোসের কথায়, “তৃণমূল যে পুর পরিষেবা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তা তাঁদের দলের প্রার্থী আজ চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন। না হলে পুরসভার যে কর্মীদের কাজ পথবাতির রক্ষণাবেক্ষণ করা, তাঁদের বদলে কেন শাসক দলের প্রার্থীকে ওই কাজ করতে হল? মানুষ সব বুঝে গেছে, তাই এবার আর তাঁদের জিততে হবে না।”
১৬ নম্বর ওয়ার্ডে দীর্ঘ দিন ধরে কাউন্সিলার হয়ে আসছেন তপন ঘোষ। এক সময় বামেদের সাথে থালেও পরবর্তীতে তিনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। শেষ দিকের কোচবিহার পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীতেও তিনি ছিলেন। কিন্তু এবার তৃণমূল তাঁকে সেখানে টিকিট না দেওয়ায় তিনি নির্দলের প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন। ফলে ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেস তপন ঘোষকে বহিষ্কার করেছে। তৃণমূল শিবিরের দাবি, পুর পরিষেবা দিতে যদি ব্যর্থতার কথা বলা হয়, তাহলে সেটা বিদায়ী কাউন্সিলারের উপড়ে দায় বর্তায়। কারণ তাকেই ওই এলাকার কোথায় বাসিন্দাদের কি প্রয়োজন সেটা তাঁরই জানার কথা।
অন্যদিকে তাঁদের বর্তমান প্রার্থী নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের দাবি, অভিজিৎ দে ভৌমিকের কাজ করার কায়দাই এরকম। এর আগে ২০ নম্বর ওয়ার্ডে তিনি বাসিন্দাদের পরিষেবা নিয়ে খোঁজ খবর রাখতেন। তখন তাঁকে ড্রেনে নেমে নিকাশি নালা পরিষ্কার করতে দেখা গিয়েছে। তিনি ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলার হলে বাসিন্দারা যে পরিষেবা পাবে, তা এদিনই অভিজিৎ বাবু বুঝিয়ে দিয়েছেন।
এনিয়ে বিদায়ী কাউন্সিলার তথা নির্দল প্রার্থী তপন ঘোষ বলেন, “ব্যর্থতা আমার নয়, তৃণমূল বোর্ডের। আমি এই ওয়ার্ডে কিভাবে মানুষের পাশে থাকি, সেটা এই এলাকার মানুষ জানে। আজ তৃণমূল প্রার্থী যেটা করল, সেটা নাটক। লোক দেখানো। এসব করে এই ওয়ার্ডে জিততে হবে না।”