নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদাঃ- সরকারি জমি দখল করে অবৈধভাবে মার্কেট কমপ্লেক্স নির্মাণের অভিযোগ।ভূমি সংস্কার দফতর ব্যবস্থা না নেওয়ায় আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে ভূমি রক্ষা কমিটি। মালদহের চাচঁলের সন্তোষপুর এলাকার ঘটনা।গ্রাম পঞ্চায়েত দফতরের পিছনের সরকারি জমিতে কীভাবে দখল করে নির্মাণ চলছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এমনকি আদালতের নির্মাণ বন্ধে স্থগিতাদেশ দিলেও তা মানা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ।তবুও জোরকদমে চলছে মার্কেট কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজ,তা শেষ পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে।
এনিয়ে ভূমি সংস্কার দফতর ও পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। ভূমি সংস্কার দফতরের দাবি, ওই জমি পঞ্চায়েত সমিতির অধীনে। যদিও দায় এড়াতে ভূমি সংস্কার দফতর মিথ্যে বলছে বলে পঞ্চায়েত সমিতি দাবি করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সন্তোষপুর গ্রামটি মতিহারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে রয়েছে। তার পিছনেই রয়েছে ১৬৫ নং খাঁনপুর হুলাসপুর মৌজার ০১ নং খতিয়ানের ৬৮১ নং দাগের উপর ৩২ শতক খাস জমি।সেখানেই স্থানীয় আটজন জমি মাফিয়া তা দখল করে দোকানঘর তৈরির কাজ করেছেন। সেই দোকান চড়া দামে বিক্রির জন্য আগাম মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।
অভিযোগকারী মতিহার অঞ্চলের ভূমি রক্ষা কমিটির সম্পাদক রাজ্জাক আলী বলেন,ওই সরকারি জায়গাই ছিল এক বিশালকার প্রাচীনতম বটবৃক্ষ।সেই বটবৃক্ষ বনদফতরকে না জানিয়ে রাতের অন্ধকারে কেটে সেখানে অবৈধভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে মার্কেট কমপ্লেক্স,বলে অভিযোগ করেন তিনি।।এনিয়ে ভূমিরক্ষা কমিটির তরফে কাজ বন্ধ করতে চাইলে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।আমি প্রশাসনিক মহলে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।পাশাপাশি চাঁচল মহকুমা আদালতের দারস্থ হয়েছি।আমরা চাই সরকারি জায়গা দখলমুক্ত হোক।
মামলাকারী ভূমি রক্ষা কমিটির আইনজীবী মোহাম্মদ খাইরুল এনাম জানিয়েছেন,আদালত আদেশ দিয়েছেন ওই জমিতে নতুন করে কিছু করা যাবেনা।এখনো পর্যন্ত কাজ বন্ধের নির্দেশ আছে।কিন্তু গায়ের জোড়ে তারা চালিয়ে যাচ্ছে।
যদিও এই বিষয় নিয়ে চাঁচল-১ ব্লকের ভূমি সংস্কারক আধিকারিক অরিজিৎ দাস জানান,ওই ১ নং খতিয়ানের খাসজমির নথিতে পাওয়া গেছে জায়গাটি পঞ্চায়েত সমিতির তত্ত্ববধানে রয়েছে দুইদশক ধরে।সন্তুোষপুর হাট বলে উল্লেখ রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।এ বিষয়টি পঞ্চায়েত সমিতিকে হস্তক্ষেপ করা হয়েছে এবং আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
যদিও এই বিষয়টি ভূমি সংস্কার দপ্তরের দিকে আঙুল তুলেছিলেন চাঁচল-১ নং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি।সভাপতি ওবাইদুল্লাহ আহমেদ চৌধুরী দাবি করে বলেন,নিজেদের দায় এড়াতে ভূমি সংস্কার দফতর মিথ্যে বলছে।পঞ্চায়েত সমিতির চোখে কাল ফিতে বেধে ও অন্ধকারের রেখে ভূমি সংস্কারের আধিকারিকেররা সরকারি জায়গা দখল দিতে মদত করছেন বলে অভিযোগ করলেন তিনি।এতেই শুধু থামলেন না।আরোও ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বললেন যদি পঞ্চায়েত সমিতির তত্ত্বাবধানে জায়গাটি রয়েছে,তাহলে পঞ্চায়েত সমিতিকে লিখিত রিপোর্ট এখনো কেন দেওয়া হয়নি ভূমি সংস্কারের তরফে।এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে ভূমি সংস্কার দফতর ও পঞ্চায়েত সমিতির তীব্র বাকবিতণ্ডা।
যদিও দুই দফতরের টানপোড়নের মধ্যে দখল হয়ে যাচ্ছে সরকারি জমি।নির্মাণ করা হচ্ছে মার্কেট কমপ্লেক্স।যদিও গোটা ঘটনাটি আদালতের বিচারাধীন থাকা সত্যেও কিভাবে অবৈধ নির্মাণ চালিয়ে যাচ্ছেন ওই এলাকার মাফিয়ারা,তা নিয়ে রীতিমতো উদ্বেগ প্রকাশ করছে মামলাকারী ভূমি রক্ষা কমিটি।
যদিও এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যম মার্কেট কমপ্লেক্স নির্মিতস্থানে গেলে কেউ কোনো মন্তব্য করতে চাননি।তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,ওই জাইগায় চটি পেতে সপ্তাহের মঙ্গলবার বাজার বসত।