কালিয়াগঞ্জের বয়রা কালীমন্দির ইতিহাস।

0
303

উত্তর দিনাজপুর, রাধারানী হালদারঃ-১৯৬২ সালে কালিয়াগঞ্জে (Kaliyaganj) তৈরি হয় দেবীর নতুন মন্দির যা আজ বয়রা কালীমন্দির (Kali puja) নামে বিখ্যাত। টিনের চালার আর বাঁশের বেড়ার মন্দির থেকে আজ বিশালাকার মন্দির তৈরি হয়েছে।
বহুকাল আগের কথা।
কথিত আছে শ্রীমতি নদী দিয়েনৌকা আর বজরা নিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে এই শহরে বানিজ্য করতে আসতেন বনিকেরা। বিশ্রাম নিতেন এই বয়রা গাছের তলায়। পাশাপাশি এখানেই বেদি তৈরি করে ডাকাতরা মায়ের পুজো দিয়ে দক্ষিণের জেলাগুলোতে যেত ডাকাতি করতে।
কালিয়াগঞ্জের (Kaliyaganj) শ্রীমতী নদীর ধারে বয়রা গাছের নিচের বেদিতে ফুল বেলপাতা দেখতে পেয়েছিলেন স্থানীয় জেলেরা। চারিদিকে ছড়িয়ে ছিল ধূপ-ধুনোর গন্ধ। তখনই তাঁরা ঠাওর করতে পেরেছিলেন, কেউ বা কারা সেখানে কালীর (Kali puja) আরাধনা করেছেন রাতভর। সে কথা গিয়ে গ্রামবাসীদের জানিয়েছিলেন জেলেরাই। এর পর গ্রামবাসীরা নিজেদের উদ্যোগে সেই বয়রা গাছের নিচের বেদিতে শুরু করেছিলেন কালীর পুজো। সেই থেকেই বয়রা কালীপুজোর শুরু।

গ্রামের ঐতিহ্যবাহী এই পুজোকে ঘিরে ফি বছর বহু ভক্ত সমাগম হয় কালিয়াগঞ্জে। টিনের চালা আর বাঁশের বেড়ার মন্দির থেকে আজ বিশালাকার মন্দির তৈরি হয়েছে। মৃন্ময়ীর মূর্তির বদলে বসেছে মায়ের অষ্টধাতুর মূর্তি।
23 শে চৈত্র মা বয়রা কালীর অষ্টধাতুর মূর্তি প্রতিষ্ঠা দিবস হিসাবে পালন করা হয়।
বছরে চার বার লাইট ও ফুল দিয়ে সাজানো হয়। পহেলা বেশাখ,কার্তিক মাসের অমাবস্যা দিপাবলি কালীপুজো, 23 শে চৈত্র ও পয়লা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ দিন।
দীপাবলির রাতে দেবীর সারা অঙ্গজুড়ে থাকে সোনার অলঙ্কার। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে মন্দির কর্তৃপক্ষ এবং ভক্তদের বিশ্বাস, এখানে মা বয়রা কালীমাতার কাছে মানত করলে তা ফলে যায়। ফলে মানত পূরণ করতেই হাজার হাজার ভক্ত আসেন প্রতিবছর। কালিয়াগঞ্জের রাজনন্দিনীর এই পুজোতে শোল, বোয়াল-সহ পাঁচ রকমের মাছ ও পাঁচ রকমের সবজি দিয়ে মায়ের ভোগ হয়।
অষ্টধাতু মূর্তির পূজা দেখার জন্য কালিয়াগঞ্জ নয় বাইরের জেলা থেকে এবং দূর দূরান্ত মানুষরা পূজা দেওবার জন্য ভিড় জমায়।