সুভাষ চন্দ্র দাশ, ক্যানিং :- স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠলো খোদ স্বামী সহ শ্বশুর বাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে।ঘটনাটি ঘটেছে বাসন্তী থানার অন্তর্গত রামচন্দ্র খালি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬ নম্বর সোনাখালির মঞ্চুর মোড় এলাকায়।মৃত গৃহবধুর নাম তবাসুম খাতুন বিবি(২৩)। পুলিশ অভিযোগ পেয়েই মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
স্থানীয় সুত্রে জানাগিয়েছে গত প্রায় পাঁচ বছর আগে বাসন্তী থানার ৬ নম্বর সোনাখালির বাসিন্দা যুবক সরিফুল মোল্লা।জীবনতলা থানার অন্তর্গত বাঁশড়া গ্রামপঞ্চায়েতের ঘুঁটিয়ারী শরীফের হালদার পাড়া এলাকায় ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন।পেশায় রাজমিস্ত্রী সরিফুলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে হালদার পাড়া এলাকার মহিলা তবাসুম এর সাথে। এরপর দুই পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ে হয়।দম্পতির বছর দেড়েক বয়সের এক পুত্র সন্তান রয়েছে।
বিয়ের পর থেকে তবাসুম বাসন্তীর ৬ নম্বর সোনাখালির মঞ্চুর মোড় এলাকায় তার শ্বশুর বাড়িতে থাকছিল। অভিযোগ বিয়ের যৌতুক ও পণের দাবীতে প্রতিনিয়ত স্বামী সহ শ্বশুর মুছা মোল্লা ও শাশুড়ি ফরিদা মোল্লারা শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করতো ওই গৃহবধুর উপর।শ্বশুর বাড়ির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে একমাত্র পুত্র সন্তানকে নিয়ে ২০২০ সালে লকডাউন শুরুর কয়েকদিন আগেই ওই গৃহবধু হালদার পাড়ায় তার বাপের বাড়িতে চলে আসে।দীর্ঘপ্রায় দুবছর বাপের বাড়িতে ওই গৃহবধু থাকার পর চলতি বছর জানুয়ারী মাসের প্রথম সপ্তাহে পারিবারিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ওই গৃহবধু আবার শ্বশুর বাড়িতে যায়।অভিযোগ আগের থেকে এবার আরো বেশি মাত্রায় অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকে।বৃহষ্পতিবার সকালে আবারো অশান্তি শুরু হয় ওই দম্পতির মধ্যে।অভিযোগ সেই সময় ওই গৃহবধু কে বেধড়ক মারধর করে তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে তার স্বামী।পরে প্রমাণ লোপাটের জন্য তার মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে পালিয়ে যায়।পরক্ষণে এমন ঘটনা নজরে পড়ে গৃহবধুর ননদ মাফুজা মোল্লার।মাফুজা পাড়া প্রতিবেশীদের হাঁকডাক করে ডেকে আনে। পরে ওই গৃহবধু কে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করে।ঘটনার বিষয়ে লোক জানাজানি হতেই খবর যায় পুলিশের কাছে। বাসন্তী থানার পুলিশ খবর পেয়ে বৃহষ্পতিবার রাতেই ওই বধুর দেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।মৃত্যুর কারণ জানতে দেহটি ময়না তদন্তে পাঠায়।অন্যদিকে মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে শুক্রবার সকালে বাসন্তী থানায় হাজীর হয় বধুর বাবা আজাদ সেখ,মা আমেদা বিবি ও প্রতিবেশী ফিরোজ আলম। তারা ঘটনার বিবরণ জানিয়ে বাসন্তী থানায় ওই গৃহবধুর স্বামী সরিফুল মোল্লা,শ্বশুর মুছা মোল্লা ও শাশুড়ি ফরিদা মোল্লা বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।অভিযোগের ভিত্তিতে বাসন্তী থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তদের টিকি পর্যন্ত ছুঁতে পারেনি। মৃত গৃহবধুর মা অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবী করে জানিয়েছেন ‘আমার মেয়েকে যে ভারে মেরেছে তেমন ভাবে বদলা চাই’।