সুভাষ চন্দ্র দাশ,ক্যানিং – এক গৃহবধু কে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠলো খোদ স্বামী ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাতে ক্যানিং থানার অন্তর্গত গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের আমতলা গ্রামে।ইতিমধ্যে ওই গৃহবধুর পরিবারের লোকজন ক্যানিং থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তার স্বা ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে ক্যানিং থানার পুলিশ। যদিও ঘটনায় জড়িতদের টিকি পর্যন্ত ছুঁইতে পারেনি পুলিশ।স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে বিগত প্রায় পাঁচ বছর আগে ক্যানিংয়ের দাঁড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে রোনিয়া গ্রামের বাসিন্দা হালিমা সেখ এর সাথে মুসলীম ধর্মীয় নিয়ম মেনে বিয়ে একই থানা এলাকার গোপালপুর পঞ্চায়েতের ধর্মতলার বাসিন্দা পেশায় অটোচালক চঞ্চুর ওরফে সাহাজামাল লস্করের।
অভিযোগ বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য চাপ দিতো শ্বশুর বাড়ির লোকজন।দম্পতির ৩ ও ১ বছরের দুই ছেলে মেয়ে রয়েছে।অভিযোগ বিয়ের বছর তিন পর থেকেই যৌতুকের দাবী করে অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে থাকে।ইতিমধ্যে কয়েকজন মহিলার সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে ওঠে সাহাজামালের।এমন গোাপন তথ্য জেনে ফেলে সাহাজামালের স্ত্রী হালিমা।এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রতিনিয়ত ঝগড়া অশান্তি তৈরী হতো।বুধবার দুপুরে ও তার ব্যতিক্রম হয়নি।অভিযোগ এদিন প্রথমে হালিমা নামে ওই গৃহবধু কে বেধড়ক মারধর করে তার স্বামী সাহাজামাল। পরে তাকে ধারালো দা দিয়ে গলায় ও মাথায় আঘাত করে বলে অভিযোগ।এমন কি ওই গুহবধু কে খুন করে ফেলার জন্য তার গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে গায়ে আগুন ধরানোর চেষ্টা হয়।প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে কোন প্রকারে ওই গৃহবধু তার স্বামী কে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে পুকুরে পড়ে যায়। সেই সময় ওই বধুর স্বামী মৃত্যু নিশ্চিত করতে বধুকে পুকুরের জলে চোবাতে থাকে।প্রতিবেশীরা দেখতে পেলে পালিয়ে যায় বধুর স্বামী।তারা ওই গৃহবধুর দাঁড়িয়ার রোনিয়া গ্রামের বাপের বাড়িতে খবর দেয়।বাপের বাড়ির লোকজন ঘটনার কথা স্থানীয় ক্যানিংয়ের ‘তালদি এসসি,এসটি,ওবিসি এন্ড মাইনোরিটি ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’ র মহিলাদের কে জানায়। মহিলা সমিতির সম্পাদিকা
রুপালি মন্ডল,কল্পনা মন্ডল,গীতা মন্ডল,সোমা সরকার,লাভলি হালদার,প্রিয়াঙ্কা মন্ডল,রুম্পা দে সহ আক্রান্ত গৃহবধুর বাপের বাড়ির লোকজন তড়িঘড়ি ধর্মতলা গ্রামে হাজীর হয়।ততক্ষণে অভিযুক্ত মা ছেলে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে গিয়েছে।মহিলা সমিতির মহিলারা তড়িঘড়ি আক্রান্ত গৃহবধুকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে সেখানে গুরুতর আশাঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে ওই গৃহবধু।
গৃহবধু দাদা হাসান সেখ ও মামা সাহাবুদ্দিন মোল্লা দের দাবী ‘হালিমা তার স্বামীর অবৈধ সম্পর্কের কথা জানতে পারায় তার উপর অকথ্য অত্যাচার শুরু করেছিল স্বামী ও শাশুড়ি। এদিন স্বামী সাহাজামাল খুন করার ষড়যন্ত্র করে বেধড়ক মারধর করে। দেহের সমস্ত জায়গায় ক্ষতবিক্ষত হয়। পরে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে। কোন প্রকারে সেখান থেকে পালিয়ে যেতেই পুকুরে পড়ে যায় হালিমা। সেখানে পুকুরে নেমে চুবিয়ে মারার চেষ্টা করে।প্রতিবেশীরা দেখতে পেলে পালিয়ে যায়।যে ভাবে অত্যাচার করে খুন করার চক্রান্ত করেছিল,তাতে করে ওর চরম শাস্তির দাবী জানাচ্ছি। ’
অন্যদিকে উদ্ধার কর্তা তালদি মহিলা সমিতির সম্পাদিকা রুপালি মন্ডল জানিয়েছেন ‘বর্তমানে নারীদের প্রতি অমানুষিক অত্যাচারের মাত্রা যে ভাবে বেড়ে চলছে তার উদাহরণ ধর্মতলার ঘটনা।আমরা ওই গৃহবধুর স্বামীর দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানাচ্ছি। যাতে করে আগামী দিনে নারীদের প্রতি পৈশাচিক অত্যাচার আর না হয়।’
Leave a Reply