একসঙ্গে পিতৃ-মাতৃহীণ হয়ে চরম সংকটের মধ্যে পড়েছে একই পরিবারের তিন শিশু সন্তান।

0
273

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদাঃ- পারিবারিক কলহে মা খুন হয়ে গেছে এক মাস আগে। আর মাকে খুন করার অপরাধে বাবা গেছে শ্রীঘরে । একসঙ্গে পিতৃ-মাতৃহীণ হয়ে চরম সংকটের মধ্যে পড়েছে একই পরিবারের তিন শিশু সন্তান।

হতভাগ্য হীন এই তিন সন্তান হলো চাঁদনী মন্ডল হাসি মন্ডল ও খুশি মন্ডল। এই তিন সন্তানকে নিয়ে হাবুডুবু খাচ্ছে তাদের দাদু-দিদা শ্যামফুল মন্ডল ও নির্মলা মন্ডল ।এই তিন শিশুর ভবিষ্যৎ নিয়ে রীতিমতো চিন্তিত হরিটোলা ও কাঠালবাড়ি গ্রামের মানুষেরা।

ঘটনার বিবরণে জানা গেছে কাঠালবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা স্যামফুল মন্ডলের মেয়ে লিপিকা মন্ডলের বিয়ে হয় দামোদরটোলার পিন্টু মণ্ডল এর সাথে। তাদের ছোট্ট ছোট্ট তিনটি সন্তান রয়েছে। সন্তান জন্মের পর থেকেই ওই পরিবারের পারিবারিক কলহ বেড়ে যায়। পরিবারিক গৃহবধূ লিপিকা মন্ডল এর উপর স্বামী শ্বশুর শ্বশুর বাড়ির অত্যাচার দিন দিন বাড়তেই থাকে।
গত ২ মার্চ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা গায়ে আগুন লাগিয়ে লিপিকাকে খুন করার চেষ্টা করে। তাকে মালদা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হলে গত ৮ই মার্চ মারা যায় লিপিকা মন্ডল। অভিযোগ উঠে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাকে অত্যাচার করে পুড়িয়ে মেরেছে। গৃহবধূ অত্যাচার ও খুনের অপরাধে লিপিকার স্বামী পিন্টু মণ্ডল কে পুলিশ গ্রেফতার করে। আর তার পর থেকে হঠাৎই পিতৃ-মাতৃহীন হয়ে যায় তিন শিশু চাঁদনী হাসি ও খুশি। বাধ্য হয়ে দাদু স্যামফুল মন্ডল তিন শিশুকে নিয়ে তাদের কাঠালবাড়ি গ্রামে নিয়ে আসে। স্যামফুলের এর অভাবের সংসারে তিন শিশুর খরচের ব্যয়ভার বহন করা কঠিন হয়ে পড়লে। বাধ্য হয়ে দাদু দাদন খাটতে ভিন রাজ্যে চলে যায়।
এই অবস্থায় তিন শিশুকে নিয়ে কি হবে দিনযাপন করবেন তা নিয়ে চিন্তায় তার দাদুর বাড়ির লোকজন। তিন সন্তানের দাদু শ্যামফুল মন্ডল জানিয়েছেন ,” ওরা সবাই মিলে আমার মেয়েকে খুন করেছিল। পুলিশ ওর বাবাকে এরেস্ট করার পর আমরা বাধ্য হয়ে তিন সন্তানকে নিয়ে আসি। আমরাও গরিব মানুষ তিন সন্তানের পিছনে বহু খরচ আছে। তাদের কথা মাথায় রেখে বাধ্য হয়ে দারুণ কাটতে বাইরে চলে এসেছি। আমি চাই এই তিন সন্তানের দায়িত্ব নিক সরকার।”

তিন শিশুর দিদা নির্মলা মন্ডল জানিয়েছেন ,
” আমরা নিজেরাই কি খাব তা নিয়ে চিন্তিত। তিনটা শিশুকে ঠিকমতো পেট ভরে খাওয়াতে পারছি না। এদের কথা ভেবেই আমার স্বামী ভিন রাজ্যে কাজ করতে গেছে। এই তিনটা শিশুর কথা ভেবে কোন সহৃদয় ব্যক্তি এগিয়ে আসলে খুব ভালো হয়।”
হতভাগ্য এই তিন শিশুকে দেখে চিন্তিত গোটা গ্রামবাসী। গ্রামের বাসিন্দা প্রবীর মালাকার হতভাগ্য এ তিনটি শিশুর কথা ভেবে গোটা গ্রামবাসীকে এগিয়ে আসার জন্য আবেদন জানিয়েছেন।।