আবদুল হাই, বাঁকুড়াঃ বাঁকুড়া শহর থেকে কিলোমিটারের পর সোনাতপল গ্রাম ৷ অনেকেরই হয়তো জানা নেই, এই গ্রামে রয়েছে খুব প্রাচীন একটি জৈন মন্দির ৷ রেখা দেউল নামে পরিচিত এই সূর্য মন্দির মল্লরাজাদের রাজত্বকালের আগে তৈরি হয়েছিল নাকি তাঁদের পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরি হয় তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে ৷ স্থাপত্য শৈলীটি লম্বায় বক্ররেখার মতো যা দেউল নামে পরিচিত ৷ প্রায় 60 ফুট লম্বা, চারদিক চতুর্ভুজের মতো বেষ্টনী, পুরানো সরু ইটের দিয়ে তৈরি ৷ ইটের পর ইট সাজানো থাকার ফলে মন্দিরের চেহারাকে আরও আর্কষণীয় করে তুলেছে । মন্দিরের একটি বড় চূড়াটি অর্ধগোলাকার ৷ এই ধরনের দেউল রয়েছে এখনও তৎকালীন রাঢ়বঙ্গের কয়েকটি জায়গায় রয়েছে ৷ বর্ধমানে রয়েছে সাতদেউলা, বাঁকুড়ার সোনাতপলের এই রেখা দেউল এবং দেউলঘাট রয়েছে পুরুলিয়ায় ৷ বেশিরভাগটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে তবে এখনও রেখা দেউলের গায়ে দেখা যায় সূক্ষ্ম কাজ ৷
এই মন্দিরের কবে তৈরি হয়েছিল তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে ৷ কেউ কেউ বলেন, এই মন্দির বিষ্ণুপুরের মল্লরাজাদের তত্ত্বাবধানে গড়ে ওঠে ৷ আবার কেউ বা বলেন এই মন্দির জৈনদের পৃষ্ঠপোষকতায় স্বাধীনভাবে গড়ে উঠেছিল ।হাজারো বছরের প্রাচীন এই সূর্য মন্দির এখন সংস্কারের অপেক্ষায় । স্থানীয়দের দাবি, এত পুরানো একটা মন্দির ভেঙে পড়ছে সংস্কারের অভাবে ৷ এখানে যাতায়াতের রাস্তা পর্যন্ত নেই ৷ একখানা সরু রাস্তা থাকলেও বর্ষাকালে তা পুরোপুরি বেহাল হয়ে পড়ে ৷ মন্দির চত্বর আগাছায় পরিপূর্ণ ৷ মন্দির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একজন গ্রামবাসী নিযুক্ত থাকলেও তাঁর একার পক্ষে এই স্থাপত্যে রক্ষণাবেক্ষণ সম্ভব নয় ৷ এলাকাবাসী বারবার বিভিন্ন মহলে এই প্রাচীন মন্দিরের সংরক্ষণের কথা জানালেও কোনও কাজ হয়নি । তাঁদের দাবি, এই রেখা দেউল খুব সহজেই ভ্রমণ পিপাসু মানুষের জন্য একটা পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে যদি সরকার তার ব্য়বস্থা করে ৷ তাহলেই গ্রামের মানুষের রুজি রোজকারের একটা ক্ষেত্রও তৈরি হয়ে পারে।