মঙ্গলচণ্ডী পুজো দেওয়ার আগে ফুলহর নদীতে স্নান করতে গিয়ে তলিয়ে গেল দুই নাবালিকা।

0
228

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদাঃ– মঙ্গলচণ্ডী পুজো দেওয়ার আগে ফুলহর নদীতে স্নান করতে গিয়ে তলিয়ে গেল দুই নাবালিকা। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে রতুয়ার নাককাট্টি ব্রিজের নীচে।ঘটনার খবর পেয়ে প্রথমে স্থানীয়রা নৌকা ও জাল নিয়ে নদীতে তল্লাশি চালিয়েও ব্যর্থ হন।প্রায় ৫ ঘন্টা পর বেলা দুটো নাগাদ ঘটনা স্থলে এসে পৌঁছায় উদ্ধারকারী দল ও ডুবুরি।এরপর স্পিড বোর্ড নিয়ে শুরু হয় তল্লাশি অভিযান।তবে খবর লেখা পর্যন্ত দুই নাবালিকার মধ্যে একটিও দেহ উদ্ধার করতে পারেনি উদ্ধারকারী দল।

নিখোঁজ দুই নাবালিকার নাম পূজা মণ্ডল (১৩) ও সুপ্রিয়া মণ্ডল (১৪)।তারা সম্পর্কে আত্মীয়। দু’জনের বাড়ি রতুয়া-১ ব্লকের বিলাইমারি অঞ্চলের ঝাকসুটোলা গ্রামে। পূজার বাবা আনন্দ মণ্ডল এবং সুপ্রিয়ার বাবা প্রফুল্ল মণ্ডল পেশায় রাজমিস্ত্রি। কর্মসূত্রে তাঁরা বর্তমানে দিল্লিতে রয়েছেন।পূজাও একসময় দিল্লিতে মা-বাবার কাছে থাকত।সে সেখানকারই একটি স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন বছর খানেক আগে গ্রামের বাড়িতে চলে আসে।সে জানায়,আর দিল্লিতে নয়,সে গ্রামের বাড়িতে থেকেই পড়াশোনা করবে।তাকে স্থানীয় কোনও স্কুলে ভর্তি করার চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন পরিবারের সদস্যরা।তবে সুপ্রিয়া স্থানীয় কাটাহা দিয়ারা হাইস্কুলেই অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। দুই পরিবার গ্রামে একই পাড়ায় থাকে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলচণ্ডী পুজোর জন্য এদিন পূজা ও সুপ্রিয়া উপোস করেছিল। সকালে গ্রামের আরও কিছু মেয়ের সঙ্গে তারা বাড়ির কাছে ফুলহর নদীতে স্নান করতে যায়।স্নান সেরে পুজো দিতে যাওয়ার কথা ছিল তাদের।নদীতে এখন বিশেষ জল না থাকলেও রয়েছে চোরা স্রোত। নদীতে নেমে সেই স্রোতে তলিয়ে যেতে থাকে সুপ্রিয়া। সেই দৃশ্য দেখে পূজা তাকে বাঁচাতে জলে এগিয়ে গেলে সে’ও স্রোতের মধ্যে পড়ে যায়। একসময় তারা দু’জনেই জলে তলিয়ে যায়।সেই সময় ঘাটে আরও কয়েকজন মেয়ে থাকলেও ভয়ে তারা কেউ তাদের বাঁচাতে এগিয়ে যেতে পারেনি। তাদের চিৎকারেই স্থানীয় মানুষজন ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।

দুই নাবালিকার আত্মীয় অসীম মণ্ডল বলেন, ‘আজ ওরা দু’জনেই মঙ্গলচণ্ডীর পুজো দেবে বলে ঠিক করেছিল। তাই সকাল সকাল দু’জন নদীতে স্নান করতে আসে। ওদের সঙ্গে গ্রামের আরও ৫-৭ জন মেয়ে ছিল। স্নান করার সময় সুপ্রিয়া নদীতে তলিয়ে যেতে থাকে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে পূজাও জলে ডুবে যায়। তখন ঘাটে কয়েকজন মেয়ে থাকলেও তারা দু’জনকে বাঁচাতে পারেনি। আমরা ওদের খোঁজে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু এখনও তাদের কোনও চিহ্ন দেখতে পাইনি। ঘটনাস্থলে পুলিশ আর প্রশাসনের উদ্ধারকারী দল এসেছে।’

পূজার এক দাদা মনোজ মণ্ডল বলেন, ‘পূজা দিল্লিতে পড়াশোনা করত। ওর ওখানে পড়তে ভালো লাগছিল না। তাই বছর খানেক আগে সে গ্রামের বাড়ি চলে আসে। আমরা তাকে এলাকারই কোনও স্কুলে ভর্তির চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম। তার মধ্যেই আজ এই ঘটনা ঘটে গেল। পূজা খুব ভালো সাঁতার না জানলেও নদীতে স্নান করতে পারত। পূজার বাবা-মা দিল্লিতে রয়েছে তাদের খবর দেওয়া হয়েছে।