ক্যানিং মহাকুমায় জনসংযোগ কর্মসূচির সূচনা।

0
264

সুভাষ চন্দ্র দাশ,ক্যানিং – জেলাসদর আলিপুরে যেতে কাউকে ৮ ঘন্টা কাউকে কিংবা ১০ ঘন্টা পথ অতিক্রম করতে হয়। পেরোতে হয় দুটি বা তিনটি এমনকি চারটি নদী। তারপর ট্রেন চেপে জেলাশাসকের অফিসে গিয়ে জানাতে হয় অভিযোগ। এর ফলে জেলার মানুষের যেমন সময় নষ্ট করে দুর্ভোগ পোহাতে হয় তেমনি খরচা হয় বেশ কিছু টাকা পয়সাও।আর সেই কারণে সরকারি কাজের জন্য আর কোন অভিযোগ নিয়ে জেলা সদর বা মহকুমা শাসকের অফিসে আসতে হবে না অভিযোগকারীর। জেলাশাসক এবং মহকুমা শাসকরাই এবার পৌঁছাবেন উপভোক্তাদের কাছে। তাই  শুক্রবার জনসংযোগ প্রকল্পের সূচনা হলো দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং মহকুমায়।

শুক্রবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং মহকুমা শাসকের অফিসে এই প্রকল্পের মূল অনুষ্ঠানটি হয়। জেলার কাকদ্বীপ ডায়মন্ডহারবার বারুইপুর ও আলিপুর সদরেও প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। প্রতিটি জায়গায় জেলাশাসক অতিরিক্ত জেলা শাসক মহকুমা শাসক বিধায়ক এবং অন্যান্য জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

এই প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়েছে জনসংযোগ অভিযোগ নিষ্পত্তি করণ । শুধু তাই নয় এই প্রকল্পের সমস্ত মানুষকে অভিযোগ জানানোর জন্য একটি পোর্টালের ও উদ্বোধন করা হয়। জেলার প্রত্যন্ত দুর্গম এলাকা থেকেও অভিযোগ নিয়ে  যেমন বহু অভিযোগকারী আসেন ,তেমনি শহর এলাকার অভিযোগকারীরা এদিন উপস্থিত ছিলেন। মূলত জল, বিদ্যুৎ, জাতিগত শংসাপত্র, এবং ব্যাংকের সমস্যায় বেশি নিষ্পত্তি করা হয় এই শিবির থেকে। জেলাশাসক পি উলাগানাথান  বলেন, আমাদের জেলাতে এই প্রথম এরকম কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করা হলো। অভিযোগ জানানোর জন্য কষ্ট করে গ্রামের মানুষ কে আর জেলাশাসকের অফিসে যেতে হবে না। মূলত নিজে এলাকাতেই গিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকরা সমস্যার সমাধান করে দেবেন। দশ দিন পর পর বিভিন্ন ব্লকে ব্লকে এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। মানুষের সাধারণ সমস্যাগুলো খুব দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে এই জনসংযোগের মাধ্যমে। এর ফলে প্রশাসনের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক আরো নিবিড় হবে।

শুক্রবার ২৪ পরগনা জেলার ডায়মন্ডহারবার মহাকুমায় ৩২ টি, কাকদ্বীপের ২৭ টি, বারুইপুরে ২৩ টি, আলিপুরে ৫২ টি অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়। ক্যানিংয়ে উপস্থিত থেকে বহু মানুষের সমস্যার সমাধান করেন জেলা শাসক।এমনকি বেশ কিছু মানুষের হাতে জাতিগত শংসাপত্র, স্বাস্থ্য সাথী কার্ড, রূপশ্রী প্রকল্পের সুবিধা ও অন্যান্য সরকারি প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হয়। এই প্রকল্পে অভিযোগ জানানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রশংসাপত্র,স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তুলে দেওয়া হয় উপভোক্তা কারীদের হাতে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা হল সমগ্র দেশের মধ্যে অন্যতম একটি বড় জেলা। একজন জেলাশাসকের পক্ষে সারা জেলা ঘুরে কাজ করা যথেষ্ট কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তাই জেলার সমস্ত মহাকুমা শাসকদেরকে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সমস্যা সমাধানের জন্য উদ্যোগী হতে বলেন জেলাশাসক। বিডিওদেরকেও সমস্যা সমাধানের জন্য সচেষ্ট হতে বলেন।

এদিন এই প্রকল্পের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক পি উলাগানাথান, অতিরিক্ত জেলা শাসক শঙ্খ সাঁতরা, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মুক্তি সাধন মাইতি, জেলা তথ্য সংস্কৃতি আধিকারিক অনন্যা মজুমদার,ক্যানিংয়ের মহকুমা শাসক আজহার জিয়া,ক্যানিং মহকুমা পুলিশ আধিকারীক দিবাকর দাস, ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক শওকত মোল্লা, ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক পরেশ রামদাস, এবং গোসাবার বিধায়ক সুব্রত মন্ডল,ক্যানিং ১ ও ২ এর বিডিও শুভঙ্কর দাস,প্রণব কুমার মন্ডল,বাসন্তীর বিডিও সৌগত সাহা,গোসাবার বিডিও বিশ্বনাথ চৌধুরী সহ বিভিন্ন ব্লকের স্বাস্থ্য,ব্যাংক ও বিদ্যুৎ দপ্তরের আধিকারিকরা।