সাপের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্কিত সুন্দরবন সহ শহরতলি লাগোয়া মানুষ।

0
1103

সুভাষ চন্দ্র দাশ,ক্যানিং –ক্যানিং মহকুমা সহ সমগ্র সুন্দরবন এলাকায় সাপের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় আতঙ্কিত এলাকার মানুষ। শুক্রবার,ঘড়ির কাঁটা নয়ের ঘরে। একে একে করে তিন তিন জন সাপের কামড় খেয়ে চিকিৎসার জন্য এলেন ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে।প্রথম জন বছর ১০ বয়সের সাহানারা মোল্লা।জীবনতলা থানার দাহারানিয়ায় বাড়ি।এদিন রাতে বাড়ির উঠানেই বসেছিল। আচমকা তার পায়ে সাপে ছোবল মারে।মুহূর্তে চিকিৎসার জন্য ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসে।
দ্বিতীয়জন বছর পাচ বয়সের প্রিয়া মাহাতো।বারুইপুর থানার অন্তর্গত পিয়ালী ষ্টেশন সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা। পরিবারের অন্যান্য শিশুদের সাথে মাঠের মধ্যে খেলছিল। আচমকা তাকে সাপে কামড় দেয়। সাপের কামড় খেয়ে চিৎকার করে কান্নাকাটি শুরু করলে পরিবারে সদস্যরা দৌড়ে আসে। সেই সময় একটি চন্দ্রবোড়া সাপ দ্রুত পালিয়ে গা ঢাকা দেয়। তবে সেই সাপের ছবি মোবাইল বন্দি করে তড়িঘড়ি ওই শিশু কে নিয়ে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে আসে চিকিৎসার জন্য।অন্যদিকে বাসন্তী থানার অন্তর্গত চড়াবিদ্যা গ্রামের বছর ছয় বয়সের মাহমুদ মোল্লা। এদিন রাতে টিউশন পড়ে বাড়িতে ফিরছিল।রাতের অন্ধকারে আচমকা তাকে সাপে ছোবল মারে।বাড়িতে গিয়ে ওই শিশু তার পরিবার কে জানালে তড়িঘড়ি তাকে চিকিৎসার জন্য ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসে।
উল্লেখ্য অন্যান্য বছরের তুলনা চলতি বছর সাপের কামড়ের সংখ্যা দ্রুত গতিতে বেড়ে চলেছে।পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত ২০২১ সালে ১১০ জন সাপের কামড় খেয়ে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে এসেছিলেন চিকিৎসার জন্য। বিগত বছরের পরিসংখ্যান ছাপিয়ে চলতি বছর এযাবৎ প্রায় শতাধিক মানুষ সাপের কামড় খেয়ে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন চিকিৎসার জন্য।
ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের এক চিকিৎসকের কথায় ‘গড়ে প্রতিদিনই দু-একজন করে সাপের কামড় খাওয়া লোকজন চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসছে। যা উদ্বেগজনক।”
চলতি বছরে অত্যধিক হারে সাপে কামড়ানো ঘটনা প্রসঙ্গে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালের সর্পবিশেষঞ্জ চিকিৎসক সমরেন্দ্র নাথ রায় জানিয়েছেন ‘বিগত ২০২১ সালে ১১০ জন সাপে কামড়ানো রোগী চিকিৎসার জন্য ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে এসেছিলেন।সংখ্যা চলতি বছরে অনেকাংশ বেড়ে গিয়েছে। বিশেষ করে চন্দ্রবোড়া,এবং কেউটে সাপের প্রচুর উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায়, সাপের কামড়ের ঘটনা অত্যধিক হারে বেড়ে গিয়েছে। প্রতিদিনই সাপে কামড়ানো রোগীরা ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে আসছেন চিকিৎসার জন্য।এছাড়াও আমদের কে সচেতন ভাবে চলাফেরা করতে হবে। তাহলে সাপে কামড়ানোর মতো ঘটনা কমবে।প্রথমত আমাদের কে সচেতন ভাবে পথ চলতে হবে।ঘাসের উপর কিংবা নোংরা আবর্জনা থাকলে সেখানে সাবধানে কাজ করতে হবে। এছাড়াও বাড়ির আশেপাশে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা জরুরী,প্রয়োজন চুন ও ব্লিচিং মিশিয়ে বাড়ির চারিদিকে ছড়িয়ে দিতে হবে।রাতে অবশ্যই টর্চ ব্যবহার করা এবং মুসারি টাঙিয়ে ঘুমানো উচিৎ। সাবধানতার পর সাপে যদি কামড় দেয় তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসার সরকারী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া জরুরী। কারণ সাপে কামড়ানো প্রতিষেধক এভিএস একমাত্র সরকারী স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই পাওয়া যায়। “