বেনারসে রাজ আমলে নির্মিত কালি মন্দিরের জমিতে বঙ্গভবন নির্মাণের বিরোধিতায় আন্দোলন কোচবিহারে।

মনিরুল হক, কোচবিহারঃ বেনারসে কোচবিহার রাজাদের স্থাপত্য কালি মন্দিরের জমিতে রাজ্য সরকারের বঙ্গভবন নির্মাণের বিরোধিতা করে জেলা শাসকের কাছে স্মারকলিপি দিল বিশ্ব রাজবংশী উন্নয়ন মঞ্চ। আজ কোচবিহার জেলা শাসকের দফতরে হাজির হয়ে ওই সংগঠনের কর্মকর্তারা বেনারসে কোচবিহার কালি মন্দিরের জমিতে বঙ্গভবন নির্মাণের বিরোধিতার স্লোগান তুলে প্রতিবাদ জানায়। পরে কোচবিহার জেলা শাসক পবন কাদিয়ানের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তাঁদের দাবিপত্র পাঠায়।
রাজ আমলে বেনারসে কালি মন্দির স্থাপন করেছিলেন কোচবিহারের রাজারা। বর্তমানে ওই কালি মন্দির দেবত্বর ট্রাস্ট বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়ে আসছে। অভিযোগ, সঠিক দেখভালের অভাবে দীর্ঘদিন থেকেই ওই কালি মন্দিরের জমির কিছু অংশ বেআইনি ভাবে দখল করে আখড়া তৈরি করা হয়েছে। বাম আমল থেকেই ওই দখল হয়ে যাওয়া জমি উদ্ধারে রাজ্য সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করুক বলে কোচবিহারের বাসিন্দারা দাবি জানিয়ে আসছেন। ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর ওই জমি উদ্ধার করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। এবার সেই জমি উদ্ধার করার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার উদ্যোগী হয়েছে। সেখানে বঙ্গভবন নির্মাণ করা হবে বলেও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে।
কিন্তু বঙ্গভবন নির্মাণ করার ঘোষণা হওয়ার সাথে সাথে কোচবিহারে বিরোধী রাজনৈতিক দল ছাড়াও বেশ সংগঠন এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সম্প্রতি বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামী সামাজিক মাধ্যমে কোচবিহার রাজাদের নির্মিত বেনারসের কালি মন্দির সংস্কারের নামে ধ্বংস করছে বলে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। পাশাপাশি এদিন বিশ্ব রাজবংশী উন্নয়ন মঞ্চ রীতিমত স্মারকলিপি দিয়ে এর প্রতিবাদ করে। ওই সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অসীম রায় বলেন, “বেনারসের কালি মন্দির কোচবিহারের রাজারা নির্মাণ করেছিলেন। ওই কালি মন্দিরের সাথে কোচবিহারের মানুষের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। তাই সেখানে ভবন নির্মাণ হোক, কিন্তু সেটা কোচবিহারের রাজাদের নামে নামকরণ করা হোক। পাশাপাশি ওই ভবনে কোচবিহার বা উত্তরবঙ্গের মানুষের জন্য কমপক্ষে ৭০ শতাংশ রুম বরাদ্দ করা হোক। বাকি অন্যদের জন্য রাখা হোক। এছাড়াও ওই ভবনটি সহ কালীমন্দিরের দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হোক দেবত্বর ট্রাস্ট বোর্ডকেই।”
এছাড়াও এদিন শীতলখুচিতে কামতেশ্বর রাজার গড় থেকে মাটি কেটে নেওয়ার খবর করতে গিয়ে নিগৃহীত সাংবাদিকের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, “যারা সাংবাদিকের উপর আক্রমণ করেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি ঐতিহাসিক নিদর্শন ওই গড় রক্ষার জন্য জেলা প্রশাসন যাতে যথাযথ ব্যবস্থা করে করে তাঁর দাবিও জানাচ্ছি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *