মনিরুল হক, কোচবিহারঃ বাঁধের দুধার এবং নদীর চর এলাকা থেকে নতুন দখলদারদের হটাতে তৎপর হল মাথাভাঙা পুরসভা, সেচ দফতর এবং মহকুমা প্রশাসন। আজ পুরসভার চেয়ারম্যান লক্ষপতি প্রামাণিক, ভাইস চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ সাহা, মহকুমা শাসক অচিন্ত্য কুমার হাজরা এবং সেচ বিভাগের মাথাভাঙ্গার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার কেশব রঞ্জন রায়ের নেতৃত্বে মানসাই ও সুটুঙ্গা নদীর বাঁধ ও চর এলাকা পরিদর্শন করা হয়। নতুন করে যারা নদী বাঁধের দুধার এবং চর এলাকা বেআইনি ভাবে দখল করেছে তাঁদের আগামী ৭ দিনের মধ্যে দখলমুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে দীর্ঘদিন ধরে যারা ওই সব এলাকায় রয়েছেন, তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে সরানো হবে না বলে প্রশাসনের পক্ষে স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি চর এলাকায় পার্ক তৈরি করার সিধান্ত নিয়েছে পুরসভা ও মহকুমা প্রশাসন।
বিগত কয়েক বছর ধরে উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে মাথাভাঙ্গা শহরের দুপাশে থাকা দুই নদী মানসাই ও সুটুঙ্গার বাঁধ ও চর দখলের প্রক্রিয়া। অভিনব কায়দায় লাগাতার চলছে বাঁধ দখল। অভিযোগ, এই কাণ্ডে জড়িত স্থানীয় বেশ কিছু জমি মাফিয়া। বেআইনি জবর দখল ও নির্মাণ ঠেকাতে প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে সম্প্রতি মাথাভাঙ্গা শহরের প্রবীণ নাগরিক চিকিৎসক সনাতন ঘোষ পুরসভার চেয়ারম্যান সহ মহকুমা প্রশাসনের কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়ে ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করেন। অবশেষে এদিন মাথাভাঙ্গা শহরের মানসাই ও সুটুঙ্গা নদী চর এলাকায় দখলদারিদের রুখতে সরজমিনে পরিদর্শনে যান পুরসভা, মহকুমা প্রশাসন এবং সেচ দফতরের কর্তারা।
পুরসভার চেয়ারম্যান লক্ষপতি প্রামাণিক বলেন, “যারা দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন, তাঁদের পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ করা হবে না। এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সিধান্ত। তবে নতুন করে যাতে আর বেদখল না হয়, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। সেচ দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার বলেন, বর্ষা এসে গিয়েছে। নদী বাঁধ গুলো কি অবস্থা রয়েছে, “সেটা যেমন দেখা হল। তেমনি বাঁধের দুপাশে আশ্রয় নিয়ে বসবাস যারা করছেন, তাঁরা কোন ভাবে বাঁধের ক্ষতি করছেন কিনা, সেটাও দেখা হল।”
মাথাভাঙ্গা মহকুমা শাসক অচিন্ত্য কুমার হাজরা বলেন, “সেচ দফতরের আধিকারিক যৌথভাবে পরিদর্শন করার এই প্রস্তাব দিয়েছিল। আর নতুন করে যাতে দখল না হয়, সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। পাশপাশি একটি পার্ক তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যাতে পরিবেষ ধ্বংস না সবুজ রক্ষা হয়। এছাড়াও শহরের প্রবীণ নাগরিকরা এসে এখানে বসতে পারেন, সেই জন্যই ওই পার্কের প্রস্তাব।”এদিনের প্রশাসনিক অভিযানে খুশি ডাঃ সনাতন ঘোষ। তিনি বলেন, “জবরদখল মুক্ত করতে প্রশাসন উদ্যোগী হয়েছে এবং মাথাভাঙ্গা শহরের নদী এবং বাঁধ দখলমুক্ত হলেই আমি খুশি।”