নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঁকুড়াঃ রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা মুখ্যমন্ত্রীর হাতের বাইরে চলে গেছে। কোনো অপরাধের বিচার সঙ্গে সঙ্গে না হওয়ার জন্যেই এমন পরিনতি। যারা আজ এমন নোংরা কাজ করছে তারা জানে আমাদের কোনো শাস্তি হবে না। ফলে যা খুশি তাই করছে। যারা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে নিজেদের নিরাপদ মনে করে তাদের এই অবস্থা হলে গ্রাম বাংলার অবস্থা কী? এই ঘটনায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও উচ্চ থেকে উচ্চতর শাস্তি দেওয়া উচিৎ। বাঁকুড়া শহরে একটি বেসরকারি লজে প্রধানমন্ত্রীর আট বছরের সুশাসন ও গরীব কল্যাণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে জোড়া খুনের ঘটনায় এই প্রতিক্রিয়া দিলেন সাংসদ তথা বিজেপি মহিলা নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়।
সম্প্রতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, দলের অন্দরে কিছু গদ্দার রয়েছে। তারাই ভেতরের খবর বাইরে বের করে দিচ্ছে। এদিন সেই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্য সভাপতি যা বলেছেন আগে অনেকেই তা বলেছেন। যারা দলের অন্দরের খবর বাইরে বের করে দিচ্ছে তাদের একে একে নাম সামনে আসতে শুরু করেছে। তৃনমূলের মাইনে করা যারা বিজেপিতে ঢুকে এই দলকে ভাংবার চেষ্টা করছে তাদের চিহ্নিত করে তাদের আসল চরিত্র সামনে আনা হবে”।
অর্জুন সিং এর পর লকেট চট্টোপাধ্যায় কী দল বদলে জোড়া ফুল শিবিরে যোগ দেবেন। বেশ কিছুদিন ধরে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে এমন জল্পনা ঘুরে বেড়াচ্ছে। এদিন সেই জল্পনা নিয়ে লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, “শেষ এক বছর ধরে এই জল্পনা চলছে। আমার ধারণা এটা তৃনমূলের একটা স্ট্র্যাটেজি। আমি দীর্ঘ আট বছর ধরে দলে আছি। ২০১৫ থেকে আমার সাথে বিভিন্ন জায়গায় দলের কর্মীদের আন্তরিক সম্পর্ক তৈরী হয়েছে। তারা চায় সেই সম্পর্ক ভেঙে যাক। আমার প্রতি অবিশ্বাস তৈরী হোক এটা তারা চায়। তৃনমূলের এজেন্ট হিসাবে বিজেপির দলে কিছু কিছু লোক রয়েছে তারাও এই ধরনের জল্পনা তৈরী করছে। তাদের খুঁজে বের করা হচ্ছ”।
ব্যারাকপুরে সুকান্ত মজুমদারের সভার আগে জেলা সভাপতি বদলের দাবিতে বিজেপির পোস্টার প্রসঙ্গে লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কারা পোস্টার দিচ্ছে জানিনা। তৃনমূলের পক্ষ থেকে এসব করা হচ্ছে। বাইরে থেকে কে কী পোস্টার লাগালো তাতে কিছু যায় আসেনা। আমাদের দল তার নিজস্ব নিয়মে চলবে”।
শিক্ষার পাশাপাশি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও দুর্নীতির অভিযান প্রসঙ্গে লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, “শুধু শিক্ষা ক্ষেত্র নয় সমস্ত ক্ষেত্রে দুর্নীতি সামনে আসছে। দুর্নীতি ঢাকতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে রাজ্যপালকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সেই পদে বসেছেন। শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য বাংলা এখন দুর্নীতিতে ডুবে রয়েছে। তা ঢাকার জন্য চেষ্টা চলছে”।
কোচবিহারে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর ডাক না পাওয়া নিয়ে লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, ” এটা আই ওয়াশ। পরেশ অধিকারীকে না ডেকে দেখানো হচ্ছে যারা দুর্নীতিতে যুক্ত তাদের দূরে দূরে রাখি। শিক্ষামন্ত্রীকে কলেজগুলিতে ভিজিটার হিসাবে রাখা হচ্ছে না। স্বচ্ছ ভাবমূর্তি তুলে ধরে পিছনে অস্বচ্ছ কাজ চলছে। এস এস সি দুর্নীতির টাকা শুধু নেতা মন্ত্রীরা নয় সেই টাকা কালীঘাট পর্যন্ত গেছে এটা সবাই জানে”।