মধ্যযুগীয় বর্বতার সাক্ষী থাকলো থাকলো বাঁকুড়ার জঙ্গল মহল। ‘ডাইনী’ অপবাদে বৃদ্ধ আদিবাসী দম্পতিকে মারধোর করে গ্রাম ছাড়া করার অভিযোগ উঠলো গ্রামবাসীদের একাংশের বিরুদ্ধে।

0
365

নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঁকুড়াঃ সূত্রের খবর, সারেঙ্গার নেতুরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ডাকাই গ্রামের বাসিন্দা সরলা হেমব্রম ও বাউল হেমব্রম। তাঁদের পাঁচ মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। একমাত্র ছেলেও কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন। সম্প্রতি গ্রামের কয়েক জন বৃদ্ধা সরলা হেমব্রমকে ‘ডাইনী’ অপবাদ দেয়।মারধোরের পাশাপাশি তাদের পুড়িয়ে মেরে দেওয়া থেকে গলার নলি কেটে খুনের হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় প্রাণ ভয়ে খাতড়া শহর সংলগ্ন লেদিশোল গ্রামে মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার এবিষয়ে খাতড়ার মহকুমাশাসক ও মহকুমা পুলিশ আধিকারিককে বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছেন বলেও জানা গেছে।

বৃদ্ধা সরলা হেমব্রম, বাউল হেমব্রমরা খাতড়ার লেদিশোলে মেয়ের বাড়িতে দাঁড়িয়ে বলেন, গ্রামের কয়েক জন বেশ কিছু দিন ধরেই আমাকে ‘ডাইনী’ অপবাদ দিচ্ছে। সম্প্রতি একজনের স্বামী মারা গেছে। ঐ মৃত্যুর পিছনে ‘আমি দায়ী’ বলে কোন এক গুণীন জানিয়েছেন। এমনকি গ্রামে কেউ অসুস্থ হলেও তার দায় আমাদের উপর এসে পড়ে। এই অবস্থায় নিয়মিত বাড়িতে এসে হামলা, মারধোরের পাশাপাশি খুনের হুমকিও দেওয়া হতো বলে তিনি অভিযোগ করেন।

ঐ বৃদ্ধ দম্পতির মেয়ে সরোজিনী সরেন বলেন, বেশ কিছু দিন ধরেই ডাইনী অপবাদ দিয়ে মা-বাবাকে অত্যাচার করছিল। প্রথম দিকে বিষয়টি তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। পরে অত্যাচারের মাত্রা বাড়তেই থাকে ও খুনের হুমকি দেওয়া হয়। তাই প্রাণের ভয়ে তার বাড়িতেই ওরা এসে আশ্রয় নিয়েছেন বলে তিনি জানান।

এবিষয়ে জানতে অভিযুক্ত গ্রামবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি। তাই প্রতিক্রিয়া মেলেনি। খাতড়ার এস.ডি.পি.ও কাশীনাথ মিস্ত্রী এপ্রসঙ্গে টেলিফোনে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। সত্যিকারের বিষয়টি কি তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

বাইট:
1) সরলা হেমব্রম (ডাইনী সন্দেহে ঘরছাড়া)
2) বাউল হেমব্রম (ঘর ছাড়া)
3) সরোজিনী সরেন (মেয়ে)