আবদুল হাই, বাঁকুড়াঃ- বর্তমানে জীবন্ত অভিশাপ রূপে বিরাজ করছে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশানের অধীনস্ত মেজিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
90 দশকের শেষের দিকে বাঁকুড়ার মেজিয়া তে যখন দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশানের তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয় তখন মিজিয়া সহ আশেপাশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ সংস্থার আগমনকে আর্শীবাদ রূপে গ্রহন করেছিল গ্রামবাসীরা এর অন্যতম কারন ছিল হাজার হাজার মানুষের কর্ম সংস্থান।
সময় যত গেছে ততোই বিস্তীর্ণ অঞ্চলে মানুষের মনে সৃষ্টি হয়েছে আতঙ্ক। বর্তমানে এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রকে অভিশাপ রূপেই গন্য করে আশেপাশের বহু গ্রামের মানুষ । এমনটা ভাবার পিছনে কারণ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নির্গত ছাই। দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নির্গত ছাই ঢেকে দিয়েছে মেজিয়ার পার্শ্ববর্তী বিস্তীর্ণ এলাকার একরের পর একর চাষ যোগ্য জমি,জলাশয়।
বিষাক্ত ছাই এ বয়ে এনেছে অনেক রোগ-ব্যাধি।
মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের আগে পর্যন্ত এমনটা ছিল না পাশ্ববর্তী বাঁকদহ,জামগাড়ি,রাধাকৃষ্ণপুর সহ আরো ১৪টি গ্রামের প্রাকৃতিক অবস্থা, সেই সময় চাষাবাদ খুব ভালোই হতো, কৃষিনির্ভর এই গ্রামগুলোতে মানুষ চাষাবাদ করে ভালোই দিন যাপন করত কিন্তু বছর যতই গড়িয়েছে ততোই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্গত ছাঁই যেন বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের মুখের গ্রাস ধীরে ধীরে কেড়ে নিতে চাইছে । শুধু কৃষিকাজে ব্যাপক ক্ষতি নয় গ্রামের গৃহবধুরা জানাচ্ছেন রান্না করার সময় সেই ছাই তাদের রান্নার সামগ্রির ওপর এসে পড়ে অনাসৃষ্টি করছে।
বছরের পর বছর উড়ন্ত ছাই ঢাকা কালো মেঘ ঠেলে স্কুল কলেজে যেতে হয় ছাত্র-ছাত্রীদের তার জেরে ছাত্র-ছাত্রীদের শরীরে বাসা বাঁধছে একাধিক রোগ,,
এমনকি পানীয় জলেও মিশছে সেই ছাই।
বারে বারে একাধিক জায়গায় অনুনয়-বিনয়, অভিযোগ জানিয়েও মেলেনি কোনো সুরাহা।
স্থানীয়দের কেউ কেউ বলছেন ডিসিসি যখন স্থাপন হয় 210 মেগা ইউনিট করে তিনটে ইউনিট হবার কথা ছিল,কিন্তু এখন ডিভিসি 2500 মেগা ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করেছে,ফলে বাড়তি ছাই বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়ার উপক্রম করেছে।
সবমিলে শিল্পাঞ্চলের পার্শবর্তী এলাকার পরিস্থিতি দিন দিন ভয়ঙ্কর থেকে ভয়ংকরতম দিকে আগাচ্ছে।
গ্রামবাসীরা বারংবার দারস্থ হয়েছে সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিচু মহল থেকে উঁচু মহলে তবুও সমস্যার সমাধান বা সমাধান সূত্র বের হয়নি ।
মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার প্রবীর চঁদ জানান, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের চিহ্নিত করে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করবো।
এখন এলাকায় এই প্রশ্ন উঠছে একি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের চুপ করিয়ে রাখতে কর্তৃপক্ষ শুধু আশার বাণী শুনিয়ে দায় এড়িয়ে যেতে চাইছেন নাকি কি সত্যি হবে সমস্যার সমাধান ?
কি হবে এতোগুলো গ্রামের ভবিষ্যত আগামী দিনে !
এসব প্রশ্নের উত্তর পেতে তাকিয়ে থাকতে হবে সেই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের মুখের দিকেই।
কর্তৃপক্ষ কি সত্যি কিছু ভাবছেন ?