মালদা, নিজস্ব সংবাদদাতা:- সরকারি নয়নজুলি ভরাট করে লক্ষাধিক টাকায় বিক্রি করে বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ,হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী, সরকারি জমি ভরাট করার পিছনে ব্লক তৃণমূল নেতাদের প্রত্যক্ষ মদতের অভিযোগ, খোঁচা বিজেপির। এবারে সরকারি জমিতে মাটি ভরাট করে বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ উঠল সরাসরি শাসক গোষ্ঠীর কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে। এমনকি এই বেআইনি কাজের পিছনে এলাকারই ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের এক প্রভাবশালী নেতার মদত রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এমনকি আরো অভিযোগ এলাকার ভূমি সংস্কার আধিকারিকের মধ্য দিয়ে একের পর এক সরকারি নয়নজুলি এই ভাবে ভরাট হয়ে যাচ্ছে এবং তাতে অবৈধভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে। ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের চণ্ডীপুর গ্রামে। অবৈধভাবে মাটি ভরাটের ঘটনায় এলাকারই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকা জুড়ে। এই ঘটনায় হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক বিডিও, আইসি সহ একাধিক প্রশাসনিক আধিকারিকের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে বলে খবর।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের চন্ডিপুর এলাকায় তুলসিহাটা যাওয়ার রাজ্য সড়কের ধারে শ্রী চন্দ্রপুর এলাকায় একটি সরকারি জলাশয় রয়েছে। এই জলাশয়ের কিছু অংশ পাট্টা হিসাবে এলাকারই বাসিন্দা মহাদেব দাসের নামে আছে। মহাদেব দাসের পরিবার এলাকার তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত। তারা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মহাদেব দাসের পাট্টা জমি আনোয়ার আলী বলে এক তৃণমূল কর্মী কে বিক্রি করে দিয়েছে। আনোয়ার আলী এলাকারই এক প্রভাবশালী তৃণমূলের ব্লক নেতার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। জলাশয় মাটি দিয়ে ভরাট করে তার উপরে অবৈধ নির্মাণ শুরু করেছিল। আনোয়ার আলীর এই কাজে বাধা দেন এলাকারই তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা। আর বাধা দিতে গিয়ে এলাকারই তৃণমূলের দুই কর্মী সমর্থক গোষ্ঠী প্রকাশ্য সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকা জুড়ে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার অভিযোগ জানানো হয়েছে বিডিও, আইসি সহ একাধিক আধিকারিকদের কাছে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় হরিশ্চন্দ্রপুর থানার বিশাল পুলিশবাহিনী। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অবৈধ মাটি ভরাটের কাজও বন্ধ করেছে। বন্ধ করা হয়েছে অবৈধ নির্মাণ।
এই ঘটনার তীব্র কটাক্ষ করেছে এলাকার বিজেপি নেতৃত্ব। জেলা বিজেপি সম্পাদক কিষান কেডিয়া খোঁচা দিয়ে বলেন রাজ্য-জুড়ে তৃণমূল নেতৃত্বের মধ্যে একের পর এক দুর্নীতি হয়ে চলেছে। এটা নতুন কিছু নয়। একের পর এক সরকারি সম্পত্তি লুট চলছে।মানুষ সবই দেখছি। নির্বাচনে মানুষ এর জবাব দেবে। অন্যদিকে রশিদাবাদ গ্রাম-পঞ্চায়েত উপ-প্রধান বিউটি খাতুনের স্বামী আব্দুল কাদের বলেন সরকারি নয়নঞ্জলী দখল করে বিক্রি করে দিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকায়। গ্রামবাসীরা মার্চ পিটিশন করেছে প্রশাসনকে। যারা বিক্রি করেছে এবং যারা কিনেছে তারা নাকি এখন তৃণমূল। আমাদের দলের কিছু তৃণমূল নেতা এদেরকে মদত দিচ্ছে। একটা গন্ডগোল হয়েছিল গ্রামবাসীদের সঙ্গে। পুলিশ এসেছিল আপাতত কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। আমরাও পঞ্চায়েতের তরফে পরিদর্শনে যাব দেখতে। দলের কেউ হোক না কেন, অন্যায় করলে দল পাশে দাঁড়াবে না সাফাই তৃণমূল নেতৃত্বের। গোটা ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে তৃণমূল- বিজেপির রাজনৈতিক বাক বিতন্ডা।