দীর্ঘ ৪ বছরের আইনি লড়াইয়ে সাফল্য,অবশেষে মন্ত্রীকন্যা অঙ্কিতার জায়গায় বিদ্যালয়ে যোগ দিলেন ববিতা।

0
239

মনিরুল হক, কোচবিহার: মন্ত্রীকন্যার চোখে চোখে চোখ রেখে লড়াইয়ে জয়ী হওয়ার পর অবশেষে পদক হিসেবে মেখলিগঞ্জ ইন্দিরা বালিকা বিদ্যালয়ে যোগ দিলেন ববিতা সরকার। সোমবার তিনি সকাল ১০ টা নাগাদ বিদ্যালয়ে আসেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রঞ্জনা রায় বসুনিয়া এবং স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতি অমিতাভ বর্ধন চৌধুরী উপস্থিতিতে এদিন বিদ্যালয়ে যোগদেন তিনি।
রাতারাতি শিক্ষক নিয়োগের প্যানেল থেকে মুছে গিয়েছিল ববিতা সরকারের নাম। তাঁর জায়গায় চলে এসেছিল এক সময়ের দাপুটে ফরোয়ার্ড ব্লকের নেতা তথা রাজ্যের বর্তমান শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর নাম। ২০১৮ সালের ২৪ নভেম্বর অঙ্কিতা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা হয়ে যোগ দিয়েছিলেন মেখলিগঞ্জের ইন্দিরা গার্লস হাই স্কুলে। চাকরি না পেয়ে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হয়েছিলেন প্যানেলের শীর্ষে থাকা ববিতা। দীর্ঘ প্রায় চার বছর মামলা চলার পর অবশেষে অঙ্কিতার নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করে সেই জায়গায় ববিতাকে নিয়োগ পত্র দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। নিয়োগপত্র হাতে পেয়েই সোমবার মেখলিগঞ্জের ইন্দিরা গার্লস হাই স্কুলে কাজে যোগ দিলেন তিনি। প্রাপ্য চাকরি ফিরে পেয়ে খুশি ববিতা সরকার।
সোমবার মেখলিগঞ্জের ইন্দিরা গার্লস হাই স্কুলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা পদে যোগ দিলেন ববিতা সরকার। ছোটো গ্রামীণ শহরের এই স্কুলের নাম রাজ্যে এতদিন অপরিচিত ছিল। এই স্কুলেই ২০১৮ সালে পরেশ চন্দ্র অধিকারী তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে সেই বছর ২৪ নভেম্বর তাঁর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকার পদে নিযুক্ত হন। এভাবে ৪১ মাস চলে যাওয়ার পর ফের শিরোনামে আসে অঙ্কিতা অধিকারী ও ইন্দিরা গার্লস হাইস্কুল। গত ১৭ মে হাইকোর্টের নির্দেশে অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরির তদন্তের ভার যায় সিবিআই এর হাতে। পাশাপাশি তার বাবা রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী পরেশ চন্দ্র অধিকারীকে সিবিআই তলব করে। অভিযোগ ছিল ২০১৭ সালের নভেম্বরে এসএসসি পরীক্ষার দ্বিতীয় মেধাতালিকায় নাম উঠে আসে অঙ্কিতার। প্রথম মেধাতালিকায় প্রথম কুড়িতে নাম না থাকা অঙ্কিতাকে দ্বিতীয় তালিকার একেবারে শীর্ষে নিয়ে আসা হয় অবৈধ ভাবে। অভিযোগ অঙ্কিতার নাম মেধাতালিকায় অবৈধভাবে ঢুকে যাওয়ায় ববিতা সরকার চাকরির সুযোগ হারান। এরপরই ববিতা কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে। সেই মামলায় অবশেষে জয়ী হন ববিতা। সিবিআই তদন্তে প্রমাণিত হয় অঙ্কিতা অধিকারীর নিয়োগ ছিল অবৈধ। পরবর্তীতে গত ২০ মে কলকাতা হাইকোর্ট রায় দেন অঙ্কিতাকে স্কুলের চাকরি থেকে বরখাস্ত করার। পাশাপাশি নির্দেশ দেওয়া হয় পুরো বেতন ফিরিয়ে দেওয়ার। গত ২৪ জুন এই সংক্রান্ত ফের এক নির্দেশিকা জারি করে কোলকাতা হাইকোর্ট। সেখানে বলা হয় অঙ্কিতার জায়গায় ববিতাকে চাকরি দিতে হবে। অঙ্কিতার ফিরিয়ে দেওয়া টাকাও ববিতাকে কে দিতে হবে। সেই নির্দেশ মতো অঙ্কিতার ফিরিয়ে দেওয়া প্রথম কিস্তির ৮ লক্ষাধিক টাকা দেওয়া হয় ববিতাকে। সঙ্গে দেওয়া হয় মেখলিগঞ্জের ইন্দিরা গার্লস হাই স্কুলে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা পদের নিয়োগপত্র।