হাসপাতাল আছে,বেড আছে,কিন্তু নেই ডাক্তার, তাই একাধিক দাবি নিয়ে গোবরা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে গ্রামবাসীরা।
পূর্ব মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা:- হাসপাতাল আছে ডাক্তার নেই বেড ,আছে রোগী কিন্তু ভর্তি নেই”। তবে রোগী কে দেখছেন,রোগী দেখছেন ফার্মাসিস্ট, তারই প্রতিবাদে শুক্রবার প্রতিবাদে অবস্থান- বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের,পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রামনগর ১ ব্লকের গোবরা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা । দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে গোবরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডাক্তার না থাকায় ভুক্তভোগী হচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা ।দিনে দুপুরে ডাক্তার না পেয়ে সেখান থেকে দশ কিলোমিটার দূরে দীঘা রাজ্য সাধারণ হাসপাতাল যেতে হচ্ছে চিকিৎসার জন্য,আবার কেউ বা বালিসাই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করছেন তাদের রোগীদের চিকিৎসার লক্ষ্যে । আর নিতান্তই ডাক্তার না পেয়ে ফার্মাসিস্ট কে রোগী দেখাতে হচ্ছে বহু সাধারণ মানুষকে ও সেই সঙ্গে নিজেরাও দেখাচ্ছেন। এমনই অভিযোগ গ্রামবাসীদের। তাই ক্ষোভে ফুসছেন গোবরা এলাকার বাসিন্দারা । গ্রামবাসীরা হাসপাতালের সামনে ব্যানার লাগিয়ে অবস্থান বিক্ষোভ করলেন । গ্রামবাসীরা,তাদের দাবি অবিলম্বে গোবরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডাক্তার নিয়োগ করতে হবে। এই সম্বন্ধে গ্রামবাসীরা জানান,বেশ কিছুদিন আগে এক গৃহবধূকে এই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় ডেলিভারি চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ডাক্তার না থাকায় মারা যান ওই গৃহবধূ । পাশে একটি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক রয়েছেন যদিও বা সেখানে রোগীর সংখ্যা অনেকটাই কম হয় তবে গোবরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতিদিন প্রায় একশোর বেশি রোগী দেখাতে আসেন,সেই সময় যদি কোন শ্বাসকষ্ট বা বড় কোন অসুখ দেখা দেয় সেখান থেকে তারা ১০ কিলোমিটার দূরে দীঘা রাজ্য সাধারণ হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় রোগী বা আত্মীয় পরিজনদের। তাই গ্রামবাসীদের কথায়, “হাসপাতাল আছে ডাক্তার নেই,বেড আছে কিন্তু কোন রোগীকে ভর্তি রাখা হয় না”, যদিও এই সম্বন্ধে রোগী দেখাতে আসা সুবল দাস বলেন, কিছুদিন আগে আমার বাড়ির বৌমা মারা যান এখানে ডাক্তার নেই বলে। আজ আমি নিজে দেখাতে এসেছি ডাক্তার না পেয়ে ফার্মাসিস্ট কে দেখাতে হচ্ছে । এই দিন হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল হাসপাতালের পাশের অংশ ঝোপ জঙ্গলে ভর্তি, রোগীরা দাঁড়িয়ে আছেন আর রোগ দেখছেন একজন ফার্মাসিস্ট। এই গোবরা এলাকার ফার্মাসিস্ট সুভাষ জানা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ডাক্তার নেই তাই এলাকার মানুষের প্রয়োজনে যতটা পারি আমি চিরকুট লিখে ওষুধ দেয়ার ব্যবস্থা করি। সেখানে একটা প্রশ্ন উঠছে- কি করে একজন ফার্মাসিস্ট রোগ নির্ণয় না করেই ওষুধ দিয়ে দেন? এলাকার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অমিত কুমার ঘোষ বলেন, আমাদের ব্লকের চারটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে চারটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কোন এলোপ্যাথিক ডাক্তার নিয়োগ নেই। তবে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক রয়েছেন তবে ডাক্তার নিয়োগ না হলে আমাদের কিছু করার নেই। যতটা পারি আমরা ফার্মাসিস্টকে দিয়ে কাজ চালানোর চেষ্টা করি ।গ্রামবাসীরা আরও অভিযোগ করেন, এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান ব্লক প্রতিনিধিকেও জানানো হয়েছে,তবে এখনও পর্যন্ত কোনো কাজ হয়নি । গোবরা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতি কেউ নজর দেননি। রামনগর ১ ব্লকের বিডিও বিষ্ণুপদ রায় বলেন,ডাক্তার যে নেই আমরা বারবার জানিয়েছি । রামনগর চারটি গ্রামীণ হাসপাতালে কোন এ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসার ডাক্তার নেই গ্রামের মানুষদের সমস্যার দেখার জন্যজন্য একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক রয়েছেন কয়েকজন ফার্মাসিস্ট রয়েছেন তারাই দেখভাল করছেন।
স্থানীয় নেতৃত্বদের কথায়, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী গ্রামীণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উপর জোর দিচ্ছেন সেখানে এহেনো পরিস্থিতি দেখে কার্যত অবাক হয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা । তাদের দাবি কবে আসবে এই হাসপাতালে চিকিৎসক, পরিষেবা পাবেন এলাকার মানুষেরা। তাই তারা অপেক্ষায় দিন গুনছেন।