বাঁকুড়া-মুকুটমনিপুর, আব্দুল হাই:- জঙ্গলমহল মানেই ছোট বড় বহু পাহাড়ের মেলবন্ধন আর সবুজ বনানী ঘেরা প্রকৃতির দৃষ্টিনন্দন জীবন্ত দৃশ্যের পরিমণ্ডলে হাজার হাজার পাখির কলতানে মুখরিত প্রাণ চঞ্চল হাতছানি।
আবার কখনো সারি সারি গাছের বুক চিরে অথবা জঙ্গলের বুক চিরে দূর দূরান্তে চলে যাওয়া কালো পিচের রাস্তা জঙ্গলমহল কে আরো যেন সুন্দর করে তুলেছে।
প্রকৃতির এই দৃষ্টিনন্দন মুগ্ধতা বাঁকুড়ার পর্যটন কেন্দ্রগুলি কে আরো আকর্ষণীয় করে তুলেছে পর্যটকদের কাছে ফলে রাজ্য সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রচুর পর্যটক ছুটে আসেন জঙ্গলমহলের পর্যটন কেন্দ্র গুলিতে।
জঙ্গলমহলের পর্যটন কেন্দ্র গুলির মধ্যে পর্যটকদের মূল আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু মুকুটমণিপুর জলাধার যা ভারতবর্ষের দ্বিতীয় বৃহত্তম মাটির বাঁধ।
জঙ্গলমহলের মানুষ এবং ভ্রমণ পিপাসু মানুষ মুকুটমণিপুর কে বাঁকুড়ার রানী নামে ডাকতেই পছন্দ করেন এবং এই নামে যথেষ্ট খ্যাতিও আছে ভারতবর্ষের পর্যটক মানচিত্রে।
বর্ষা এলেই জলধারের রূপ যৌবন যেন হৃদয় হরণ করে প্রত্যেকটি ভ্রমণ পিপাসু মানুষের কিন্তু এবছর একেবারে ভিন্ন ছবি ধরা পড়ল আমাদের ক্যামেরায়। বৃষ্টিপাত পর্যাপ্ত না হওয়ার জেরে মুকুটমণিপুর ডেম এর বিভিন্ন অংশ শুকনো ডাঙায় পরিণত হয়েছে যা বিভিন্ন গবাদি পশুর চারণ ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন বিগত কয়েক দশকে মুকুটমণিপুর জলাধারের এই অবস্থা দেখা যায়নি। এই জলাধারের জলের উপরে নির্ভর করে আশেপাশের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে চলে কৃষিকাজ,এই জল হীনতার জেরে ভাটা পড়েছে কৃষিকাজেও এমনটাই দাবি স্থানীয় কৃষকদের।স্থানীয় কয়েকজন জানান,কম বৃষ্টিপাতের জেরেই এই করুন অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়েছে তাদের। পরিমিত বৃষ্টিপাতের ফলে যেখানে কৃষিকাজে নিযুক্ত থাকেন এই জলাধারের আশেপাশের মানুষজন কিন্তু বৃষ্টিপাতের কম হবার জেরে চাষাবাদ ভালো না হওয়ায়,পশুচারণ কেই বিকল্প পেশা হিসেবে বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে অনেকে।
এ বিষয়ে মুকুটমনিপুর ডেভেলপমেন্ট অথারিটির ভাইস চেয়ারম্যান মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু জানান,”কৃষকদের কথা ভেবে আমরা জল কিছুটা ছেড়েছি, এখন চাষের জন্য ১০দিন মতো সময় আছে তাতেও যদি দেখা যায় বৃষ্টিপাত হল না তখন কৃষকদের জন্য আমরা উপযুক্ত ব্যাবস্থা নেবো, পাশাপাশি যাতে পর্যটকদের কোনো ভাটা না পড়ে সেই দিকটাও খেয়াল রাখবো”।চেনা ছন্দে দেখা গেলোনা বাঁকুড়ার এই ঐতিহ্যবাহী জলাধারকে,তবে খুব শীঘ্রই আবারো চেনা ছন্দে ফিরে আসবে মুকুটমনিপুর জলাধার এই আশাতেই বুক বাঁধছেন স্থানীয়রা।