রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের প্রশিক্ষণে উপকৃত প্রাণিপালক পপি বিশ্বাস।

0
3358

নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা:- নদীয়া জেলার রানাঘাট-১ ব্লক সর্বদাই জেলার অন্যতম অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। গৃহ ভিত্তিক ছোট ছোট শিল্পের পাশাপাশি কৃষি ও পশুপালন এই ব্লকের মানুষের মুখ্য জীবিকা। পরিসংখ্যান থেকে জানা জন্য মোট শ্রমশক্তির প্রায় এক তৃতীয়াংশ কৃষি ও কৃষি সম্পর্কিত কাজের সাথে যুক্ত।
এই ব্লকের বারাসাত পঞ্চায়েতের অধীন ভাদুড়ী পুকুরপাড়া গ্রামের স্ব-নির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যা পপি বিশ্বাস আজ রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের প্রশিক্ষণে সাধারণ গৃহবধূ থেকে একজন সফল পশুপালক। পপির বাপের বাড়ি ভীমপুর গ্রামে। তাঁরা তিন ভাই বোন। কষ্টের সংসারে বিদ্যালয় শিক্ষার পর আর পড়াশোনা করতে পারেন নি, বিয়ে হয় কৃষক পরিবারে ভাদুরি পুকুর পাড়া গ্রামে। বিয়ের পর জীবিকা নির্বাহের তাগিদে স্বামীর সাথে কৃষিকাজের পাশাপাশি গাভী ও ছাগল পালন করতে থেকেন। কিন্তু প্রথাগত পদ্ধতিতে প্রাণী পালন করার জন্য দুধের পরিমান খুব বেশি হতো না। স্বাভাবিকভাবেই শ্রম বিনিয়োগের তুলনায় লাভের পরিমান বেশ কম ছিল।
ঘটনাচক্রে, গত বছর গ্রামেরই একজন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যার কাছ থেকে পপি রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের হেল্পলাইন নম্বর ১৮০০ ৪১৯ ৮৮০০ এবং অন্যান্য জীবিকা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের খবর জানতে পারেন এবং পরিচয় ঘটে ফাউন্ডেশনের কর্মী সুজয় ব্যানার্জির সাথে। এরপর সুজয় বাবুর উদ্যোগে পপি ফাউন্ডেশনের পশুপালন সংক্রান্ত বিভিন্ন ট্রেনিংয়ে অংশগ্রহণ করেন এবং বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে আধুনিক পদ্ধতিতে প্রাণী পালনের বিষয়গুলি করায়ত্ত করেন। এর পাশাপাশি কোনো সমস্যা হলেই হেল্পলাইন থেকেও বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করে শুরু করেন আধুনিক ও ব্যয়সাশ্রয়ী পদ্ধতিতে ছাগল ও গাম্ভী পালন। বিশেষ করে গোয়াল ঘর পরিচর্যা, জৈব সুরক্ষা, সময়মতো টিকাকরণ, চিকিৎসা, প্রাণীর সবুজ খাবার ও বীমার বিষয়গুলি রপ্ত করে ফেলেন। ফলস্বরূপ, আগের থেকে রোজগার অনেকটাই বেড়েছে পপির, সুনিশ্চিত করতে পেরেছেন প্রাণীর সুস্বাস্থ্য।
আত্মবিশ্বাসী পপি শুধু নিজেই এই পরিষেবা পেয়ে থেকে থাকেন নি, গ্রামের অন্যান্য স্ব-নির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যেও রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের পরিষেবার কথা জানিয়েছেন। তাঁর কথায় “” অনেক ক্ষেত্রেই প্রাণী অসুস্থ হলে আমরা স্থানীয় ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ আনি, অনেক ক্ষেত্রেই তা কাজে লাগে না। তাছাড়া গ্রামে যারা প্রাণী চিকিৎসা করে তারাও অনেক টাকা নেয়, যেটা ব্যয়বহুল। কিন্তু রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের হেল্পলাইন ও ট্রেনিং থেকে এখন আমরা নিখরচায় এই পরিষেবা পাচ্ছি “” । এভাবেই গ্রাম বাংলার কৃষক পরিবারের পাশে থেকে গ্রামীণ অর্থনীতি শক্তিশালী করার কাজে নিয়োজিত রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন।