নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদাঃ- ফের কংগ্রেসে ভাঙ্গন। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলো প্রায় শতাধিক কংগ্রেস কর্মী। মমতা ব্যানার্জির উন্নয়ন দেখেই যোগদান বলে দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের। যদিও এই যোগদান কে ভিত্তিহীন বলে পাল্টা দাবি কংগ্রেসের। সাথে দুর্নীতি ইস্যুতে শাসকদলকে এক হাত নিয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে ফের কংগ্রেসে ভাঙ্গন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে।হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত মালিওর ১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মালদা জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খানের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দিলেন প্রায় শতাধিক কংগ্রেস কর্মী। আর এই যোগদান নিয়ে তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপানোতোর। এদিনের এই যোগদান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খান, হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নং ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি তবারক হোসেন চৌধুরী, গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি মমতা ব্যানার্জির উন্নয়নের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে কংগ্রেস কর্মীরা কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেছে। কংগ্রেস আমলে সঠিক ভাবে কোন উন্নয়ন হয়নি। কিন্তু তৃণমূল পঞ্চায়েতে আসার পর উন্নয়ন হয়েছে। বর্তমানে কংগ্রেসের উপস্থিতি তেমন ভাবে টের পাওয়া যায় না। তাই এই যোগদান। কিন্তু এই যোগদান কে ভিত্তিহীন বলে পাল্টা দাবি করেছে কংগ্রেস। কংগ্রেস নেতৃত্বের মতে এক দুজন হয়তো যোগদান করেছে। ভুল ভাঙলে তারাও ফিরে আসবে।পাশাপাশি দুর্নীতি ইস্যুতে তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করেছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি বলেন তৃণমূলের উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দুর্নীতিতে ভর্তি। তোলাবাজি ছাড়া আর কোন কিছুর উন্নয়ন হয়নি। ফলে এই যোগদান নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক তরজা। উল্লেখ্য এই হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকা এক সময় ছিল কংগ্রেসের গড়। কিন্তু বিগত পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকেই এই এলাকায় ব্যাপক হারে শক্তি বৃদ্ধি করে তৃণমূল। ভাঙ্গন ধরে কংগ্রেসে। গত বিধানসভা ভোটেও এখানে প্রথম বারের মতো জয় লাভ করেছে শাসকদল। ফলে আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে এই এলাকায় তৃণমূল ভালো ফল করার স্বপ্ন দেখছে। তাই সংগঠন বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে চলছে যোগদান কর্মসূচি। কিন্তু অপরদিকে কংগ্রেস দুর্নীতি ইস্যুতে শাসকদলকে আক্রমণ করছে। তারা চাইছে পঞ্চায়েত ভোটে নিজেদের উপস্থিতির প্রমাণ দিতে।
জেলা তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খান বলেন, আজ শতাধিক কংগ্রেস কর্মী তৃণমূলে যোগ দিল উন্নয়ন দেখে। কংগ্রেস আমলে রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে কোন কিছুর উন্নয়ন হয়নি। তৃণমূল আসার পর উন্নয়ন দেখছে মানুষ। তাই সকলেই তৃণমূলে যোগ দিচ্ছে। বিধানসভা ভোটে এই এলাকা থেকে খুব ভালো ফলাফল হয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটেও হবে।
কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি আবদুস শোভান বলেন, তৃণমূলের আমলে বাংলায় বিপর্যয় হয়েছে। তৃণমূলের উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দুর্নীতি-গ্রস্ত। বড় বড় নেতারা “গরু চুরি” “চাকরি চুরির” দায়ে জেল খাটছে। এদিকে তৃণমূলের ছোট নেতারা গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। মানুষ সব দেখছে। আর কংগ্রেস ছেড়ে হয়তো এক দুজন যোগ দিতে পারে। ভুল ভাঙলে তারাও ফিরে আসবে।”
সমগ্র মালদা জেলায় দীর্ঘদিন ধরে ছিল কংগ্রেসের আধিপত্য। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরেও সেই আধিপত্য ধরে রেখেছিল কংগ্রেস। কিন্তু বিগত পঞ্চায়েত ভোট থেকেই জেলায় কংগ্রেসের ভাঙ্গন শুরু হয়। গত বিধানসভা ভোটে মালদা থেকে শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে কংগ্রেসকে। অপরদিকে খুব ভালো ফলাফল করেছে শাসকদল। এখন আগামী পঞ্চায়েত ভোটে জেলায় কংগ্রেস আদেও নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে পারবে কিনা সেটাই প্রশ্নের বিষয়। অপরদিকে দুর্নীতি ইস্যুর প্রভাব শাসকদলের ভোটব্যাংকে পড়ে কিনা সেই দিকেও তাকিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।