স্ত্রী পুত্রদের দীর্ঘদিন অমানবিক শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচারিত হওয়ার পর প্রাণনাশের আশঙ্কায় পুলিশ স্বামীর বিরুদ্ধে শান্তিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করলেন গৃহবধূ।

0
350

নদীয়া, নিজস্ব সংবাদদাতা :- নারী সুরক্ষা যাদের হাতে রক্ষা পায় সেই পুলিশ প্রশাসনের এক কর্মী যখন অত্যাচারী হয়ে ওঠে তার স্ত্রী পুত্রের বিরুদ্ধে, এবং তার বিরুদ্ধে স্ত্রীর প্রতিবাদ যখন থানা এবং সোশ্যাল মিডিয়া পর্যন্ত পৌঁছায় তখন প্রাণ হানীর আশঙ্কা তো থেকেই যায়!
এরকমই এক অমানবিক ঘটনা ঘটে নদী আর শান্তিপুর বাইগাছি পাড়ার ওস্তাগার পাড়া লেনে।
সেখানকার অধিবাসী অধিক মিত্র পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কলকাতায় কর্তব্যরত । তার স্ত্রী মৌমিতা চক্রবর্তী মিত্র গত জন্মাষ্টমীর পরের দিন শান্তিপুর থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে ঘটনার বিবরণ দিয়ে একটি ডায়েরি করেন। মৃত্যুর আশঙ্কা প্রকাশ করে
সোশ্যাল মিডিয়ায় সাহায্য প্রার্থনা করেন। বিবরনে জানা যায়, জন্মাষ্টমীর দিন পাশের দুটিবাড়ি পরে দুই ছেলেকে নিয়ে নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে যান তিনি। সে সময় বৃষ্টি আসে, পুলিশ স্বামী অভীক মিত্র কিছুক্ষণের জন্য বৃষ্টিতে ভেজেন ঘরে তালা মারা থাকার কারণে। আর তাতেই রণক্ষেত্র পরিস্থিতি তৈরি হয়। স্ত্রীর চুলের মুঠি ধরে প্রথমে, কিলচড় মরার পর, পায়ের জুতো খুলে বেধড়কভাবে মারতে থাকেন বাঁ গালে। বড় ছেলে মাকে বাঁচাতে আসলে, তাকেও গলা টিপে ধরা হয়। প্রতিবেশী একদম প্রতি এবং অপর এক যুবকের হস্তক্ষেপে কোনরকমে প্রাণে বাঁচেন সে সময়। এরপর আবারো ঘরে ঢুকে বৃদ্ধ লোক মারধর করেন বলেই অভিযোগ স্ত্রী মৌমিতা চক্রবর্তী মিত্র র। এরপর প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় কিছুটা সংজ্ঞাহীন অবস্থায় , শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হন তিনি। কিছুটা সুস্থ হলে পরের দিন শান্তিপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
বর্ধমান জেলার মৌমিতা দেবীর বিবাহ হয়েছিলো পনেরো বছর আগে নিজেদের যোগাযোগই তবে তা অনুষ্ঠান করে। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মৌমিতা দেবীর একমাত্র অভিভাবিকা বিধবা মা তপতি চক্রবর্তী গতকাল এসে পৌঁছান মেয়ের বাড়িতে। তিনি বলেন , রীতিমতন পণের দাবি মিটিয়ে সে সময়, বিবাহ দেওয়া হয়েছিলো, তবে বিবাহে বহির্ভূত একাধিক মহিলার সাথে সম্পর্ক জানা যায় বছর তিনেক বাদ থেকে। আর সেই থেকেই অশান্তির সুত্রপাত। এখনো পাড়ার এক মহিলার সাথে রীতি মতন সম্পর্ক রয়েছে। তবে পুলিশ প্রশাসন থেকে সুশীল সমাজের কাছে তপতী চক্রবর্তীর একটাই দাবি মেয়ের জীবনের।
মৌমিতা দেবী অবশ্য বলেন, ছেলেদের খরচ এবং তার খাওয়া খরচ স্বামীই বহন করেন। বাকি যাবতীয় তিনি সেলাই করে এবং তার মার পেনশনের টাকা দিয়েই চলে। এই মুহূর্তে বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার কোন প্রশ্নই ওঠে না, ঘটনার দিন ননদ রত্না গোমস কে তিনি ফোন করে জানান, তিনি বলেন যেটা ভালো বুঝবে সেটাই করার জন্য। একই ছাদের তলায় থাকলেও বেশ কয়েক বছর ধরে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক নেই। তবে সরকারি চাকরি, বাঁচানোর জন্য এবং ছেলেদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে এখনো বধূ নির্যাতন এবং হত্যার চেষ্টা সংক্রান্ত কোনো মামলা করিনি এখনো পর্যন্ত। কিন্তু আমাকে মেরে ফেলা হবে এমনটাই আশঙ্কা করছি আমি। তাই জীবন হানী র আশঙ্কা করছি দুই ছেলে সহ নিজের।
তবে এ ব্যাপারে অভিকবাবুর বর্তমান মোবাইল নাম্বার দিতে পারেননি পরিবার এবং প্রতিবেশী কেউই, তিনি শান্তিপুরে থাকলেও আমরা একাধিকবার বাড়িতে গিয়েও যোগাযোগ করতে পারিনি তার সাথে।