এক বিধবা মহিলাকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার কনস্টেবল।

0
324

ঝাড়গ্রাম, নিজস্ব সংবাদদাতা:- এক বিধবা মহিলাকে খুনের অভিযোগে ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ প্রতাব নস্কর নামের কনস্টেবলকে গ্রফতার করে । মৃত মহিলার নাম শ্রাবন্তী চক্রবর্তী (৩২)। বাড়ি ঝাড়গ্রাম থানার রঘুনাথপুর এলাকায়। রবিবার সন্ধ্যায় ওই যুবতীর মামা তরুণ দে ঝাড়গ্রাম থানায় কনস্টেবলে প্রতাপ নস্করের বিরুদ্ধে তাঁর ভাগ্নীকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন । তারপরে গ্রেফতার হয় ওই কনস্টেবল ।
শ্রাবন্তীর সঙ্গে ঝাড়গ্রাম শহরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বাপী চক্রবর্তীর বিয়ে হয়। তাঁর এক নাবালিকা মেয়ে ও এক নাবালক ছেলে রয়েছে। কয়েক বছর আগে শ্রাবন্তীর স্বামীর মৃত্যু হয়। তারপর থেকে সংসার চালাতে তিনি ফ্লিপকার্ডের ডেলিভারির কাজ করতেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাপের বাড়িতে একা থাকতেন শ্রাবন্তী। মৃতার পরিবারের অভিযোগ, বেশ কিছু মাস ধরে ঝাড়গ্রাম থানার কনস্টেবল প্রতাপ নস্করের সঙ্গে শ্রাবন্তীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। প্রতাপ শ্রাবন্তীর বাড়িতে নিয়মিত যাওয়া আসা করত। শনিবার রাতেও ওই কনস্টেবল শ্রাবন্তীর বাড়িতে গিয়েছিল। তাদের মধ্যে ঝগড়া শুনতে পেয়েছিলেন পাড়া প্রতিবেশীরা। শনিবার রাত ১টা নাগাদ এক অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তি শ্রাবন্তীকে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসক শ্রাবন্তীকে মৃত ঘোষণা করতেই সেই ব্যক্তি পালিয়ে যান বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে শ্রাবন্তীর মামা তরুণ দে রবিবার সকালে হাসপাতালের যায় । পুলিস মৃতদেহটি ফরেনসিক ময়নাতদন্তের জন্য ঝাড়গ্রাম থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় । মৃত শ্রাবন্তী চক্রবর্তী মামার অভিযোগের ভিত্তিতে ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ রবিবার সন্ধ্যায় গ্রেফতার করে ঝাড়গ্রাম থানার কনস্টেবল প্রতাপ নস্করকে । সোমবার প্রতাপ নস্করকে ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হলে ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের জন্য আবেদন করে আদালতে । ঝাড়গ্রাম আদালতের বিচারক কনস্টেবল প্রতাপ নস্করের তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশদেন ।

সরকারি আইনজীবী অনিল মন্ডল বলেন, “ঝাড়গ্রাম থানায় কর্তব্যরত কনস্টেবল প্রতাপ নস্করের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, ঝাড়গ্রাম শহরের রঘুনাথপুরের বাসিন্দা শ্রাবন্তী চক্রবর্তী উনার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে একটা ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল । শ্রাবন্তী চক্রবর্তীর মামা তরুণ দে অভিযোগ করেছেন প্রতাপ নস্কর শ্রাবন্তীর উপর প্রায়ই শারীরিক নির্যাতন করতেন । গত ২০ তারিখ শ্রাবন্তীর মামা খবর পান শ্রাবন্তীকে মৃত অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে । পরবর্তীকালে শ্রাবন্তীর মামা তরুণ দে জানতে পারে শ্রাবন্তীকে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল । তরুণ দে এর দৃঢ় বিশ্বাস প্রতাপ নস্কর শ্রাবন্তীকে হত্যা করেছে । এই অভিযোগে ঝাড়গ্রাম থানার কনস্টেবল প্রতাপ নস্করকে ৩০২ ধারায় ঝাড়গ্রাম থানার পুলিশ এরেস্ট করে ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলে । পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজত চাওয়া হয়েছিল বিচারক তিন দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করে” ।

ঝাড়গ্রাম থানার ধৃত কনস্টেবল প্রতাপ নস্করের আইনজীবী মলয় ভদ্র বলেন, “আমার মক্কেল প্রতাপ নস্কর ঝাড়গ্রাম থানায় কনস্টেবল পদে কাজ করেন । একটি মেয়ের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সেই মৃত্যুর সঙ্গে আমার মক্কেল প্রতাপ নস্করের কোন যোগাযোগ নেই । এফআইআর দেখে সত্যি সত্যি বোঝা যাচ্ছে না এটা খুনের ঘটনা কিনা । আমার মক্কেল নির্দোষ তাকে এই কেসে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে “।