সততার নজির,ফেলে যাওয়া টাকা ফেরত পেলেন ক্রেতা।

0
258

সুভাষ চন্দ্র দাশ,ক্যানিং – শনিবার রাতে অনন্য নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন এক ব্যবসায়ী।মুল্যবান কাগজপত্র সহ নগদ ১১ হাজার টাকা পেয়ে ফেরত দিলেন ক্রেতা কে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে শনিবার বিকালে ক্যানিং বাজারের বাজার করতে গিয়েছিলেন স্থানীয় ইটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের গোলাবাড়ি কাছারীঘাট এলাকার বাসিন্দা আব্দুর হাকিম।
তিনি ক্যানিং বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন একটি দোকান থেকে ১৫০ টাকার বাজার করেন। দোকানদার শুভজিত ঘোষ কে টাকা দিয়ে বেরিয়ে যায়। ক্যানিং বাসষ্ট্যান্ড থেকে অটোয় চেপে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয় ওই ক্রেতা।
ইতিমধ্যে জনবহুল ক্যানিং বাজারে ওই দোকানে দীর্ঘক্ষণ একটি ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখে সন্দেহ হয় দোকানের মালিকের। তিনি অপর এক ক্রেতা ফারুক আহমেদ সরদাররে সাথে ঘটনার কথা জানায়।কয়েকজন ক্রেতা ইতিমধ্যে দোকানে ভীড় জমিয়ে ব্যাগটি থানায় জমা করার পরামর্শ দেয়।সেসব কথায় কান না দিয়ে দোকানের মালিক শুভজিত ঘোষ ও অপর এক ক্রেতা ফারুক আহমেদ সরদার ব্যাগটি খুলে দেখেন। ব্যাগ খুলতেই তাদের চক্ষু চড়কগাছ। থরে থরে ৫০০ টাকার নোট বেরিয়ে আসে ব্যাগ থেকে। এছাড়াও ব্যাঙ্কের বই,আধার কার্ড সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। কি করবেন ভেবে উঠতে পারছিলেন না। পরে ব্যাগ হাতড়াতে বেরিয়ে আসে একটি ফোন নম্বর। সেই নম্বরে যোগাযোগ করেন দোকানের মালিক।ফোন পেতেই সম্বিত ফেরে, ব্যাগ ফেলে যাওয়া ওই ক্রেতার। তিনি তখন প্রায় বাড়ির কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন। ফোন পেয়ে টাকার ব্যাগের কথা মনে পড়ে।হন্তদন্ত হয়ে দ্রুততার সাথে একটি অটো চেপে তড়িঘড়ি ক্যানিং বাসষ্ট্যান্ডে চলে আসেন। দোকানদারের সাথে কথা বলেন। উপযুক্ত প্রমাণ পেতেই দোকানদার ওই ক্রেতার হাতে টাকার ব্যাগ সহ প্রয়োজনীয় মূল্যবান নথীপত্র তুলেদেয়।
হারিয়ে যাওয়া টাকা ফেরত পেতে পারেন বিশ্বাসই হচ্ছিলো না ক্রেতা আব্দুর হাকিমের। তিনি দোকানদার কে কৃতঞ্জাতা জানিয়ে বলেন ‘বর্তমান সময়ে এতোগুলো টাকা হারিয়ে যাওয়ার পরও যে ফেরত পাবো, তা কল্পনাতে ছিলোনা।মূল্যবোধের বাজারে এখনও যে সহৃদয় মানুষ সততা হারিয়ে ফেলেনি,তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ক্যানিংয়ের ব্যবসায়ী শুভজিত ঘোষ।
হারিয়ে যাওয়া টাকা পেয়ে প্রকৃত মালিকের হাতে তুলে দিতে পেরে খুশি ওই ব্যবসায়ী। তিনি বলেন সততা না থাকলে ব্যবসা করা যায়না।
অন্যদিকে সেই সময় বাজার করতে এসেছিলেন ক্যানিংয়ের মাতলা ২ পঞ্চায়েত প্রধান উত্তম দাস ও জেলা পরিষদ সদস্য সুশীল সরদার। তাঁরা দোকানদারের এমন সততার কথা জানতে পেরে প্রশংসা করেছেন।