পূর্ব মেদিনীপুর, নিজস্ব সংবাদদাতা:- কোলকাতার বেহালা দাস হোটেল থেকে নিখোঁজ হওয়া দুই হোটেল কর্মীর অবশেষে দেহ ফিরে পেল পরিবারের সদস্যরা। দুই কর্মীর পৃথক পৃথক দেহ উদ্ধারকে ঘিরে কার্যত খুনের অভিযোগ জোরালো হচ্ছে? হোটেল মালিকের পরিবারের সদস্যরা পুলিশকর্মী থাকার কারণে কার্যত তদন্তের প্রমাণ লোপাটের আশঙ্কা করছেন দুই পরিবারের সদস্যরা। প্রথম দিন থেকেই পুলিশি হয়রানির অভিযোগ তুলে সবর হয়েছেন দুই মৃত ব্যাক্তির পরিবার। দুই পরিবারের বক্তব্যগে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য? শনিবার সকালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি সেন্টাল বাসস্ট্যাণ্ড সংলগ্ন এলাকায় অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করে কাঁথি থানার পুলিশ। বুধবার কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের মর্গে মৃতদেহটি ময়না তদন্তের পর জানা গেছে মৃত ব্যক্তির নাম অরুণ নায়ক, যার বয়স আনুমানিক ৬৬ বছর। তার বাড়ী রামনগর থানার মনিকাবাসান গ্রামে। দুই পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আপাতত তদন্ত শুরু করেছে জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। কলকাতা বেহালা এককি হোটেল থেকে দুই কর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা রীতিমতো একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে? যদিও বাসের করে বাড়ী ফেরেন তাহলে কাঁথি সেন্ট্রাল বাসস্ট্যাণ্ড থেকে এতটা দূরে গেলেন কি করে? তারপরে রামনগরের চৌদ্দমাইল কাছে খালের পাড়ে গেল কেন? সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে তদন্তকারীরা! সূএের খবর, গত ৫ দিন আগে রামনগর থানার মনিকাবাসান গ্রামের হোটেলের রান্নার ঠাকুর অরুণ নায়ক পরিবারের সদস্যরা শরীর অসুস্থতার কারণে কলকাতার হোটেল থেকে বাড়ি ফিরছিল। একদিন পর রান্নার কাজের সহযোগী রামনগরের কলাপুঞ্জা গ্রামের জয়দেব জানা বাড়ী ফিরছিল। দুজনই নিখোঁজ হয়ে যায়। এরপর দুই পরিবারের লোকেরা খোঁজাখুঁজি করলেও কোথাও খুঁজে পায়নি। এরপর কোলকাতার বেহেলা নিউ আলিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। শনিবার সকালে কাঁথি সেন্টাল বাসস্ট্যাণ্ড সংলগ্ন এলাকায় অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ৫ দিন কেটে গেলেও কোন পরওচয় উদ্ধার না হওয়ার আরও রহস্য ঘনীভূত হতে থাকে। মঙ্গলবার সকালে আছে চাঞ্চল্যকর মোড়? হোটেলের রান্নার সহযোগীর রামনগরের চৌদ্দমাইল কাছে জয়দেব জানা (৩৬) দেহ উদ্ধার হয়। তারপরে নড়েচড়ে পুলিশ। হাসপাতালের মর্গে থাকা ছবি দেখে দেহটি শনাক্ত করে পরিবারের সদস্যরা।
হোটেলে দুই কর্মীর দেহ উদ্ধারের ঘটনায় কার্যত হোটেল মালিকের বিরুদ্ধে খুনের যোগসাজশের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন দুই পরিবারের সদস্যরা। মৃত অরুণ নায়কের ভাই গোপাল নায়ক বলেন ” দীর্ঘদিন ধরে ওই হোটেলে কাজ করতো। হোটেলে দুই কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় রীতিমতন সন্দেহ রয়েছে? হয়তো হোটেলের মধ্যে কোনো দুর্নীতি প্রকাশ্যে দেখে ফেলে ছিলেন দুজন? সেই কারণে হয়তো দুজনকে সরিয়ে দিয়েছে মালিক? দুজনের মৃত্যু কোনমতে স্বাভাবিক নয়? তিনি আরও বলেন ” আমাদেরকে নিখোঁজ ডায়েরি করতে দেয়নি। হোটেল মালিকের জামাই কলকাতা পুলিশের কর্মরত! জামাই কলকাতা পুলিশের সুপারিশে ক্রমে তারাই অভিযোগ করেন। আমাদের শুধুমাএ ফোন নং নিয়েছে। জামাই কোলকাতার পুলিশের সুপারিশ ছাড়া কোন অভিযোগ নেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেন পুলিশ কর্মীরা। হোটেল মালিকই দুটো খুন করিছে বলে অনুমান করছি। জামাই পুলিশ থাকার কারণে তদন্তে প্রভাবিত হওয়ার আশাঙ্খা প্রকাশ করছি “।
মৃত অরুণ নায়কের ছেলে রাজীব নায়ক বলেন ” আমার বাবাকে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনায় মালিকের যুক্ত। ঘটনার পর থেকে মালিক আমাদেরকে কোন ভাবে সহযোগিতা করেন নি “।
কাঁথি মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সোমনাথ সাহা বলেন ” ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ময়না তদন্তের রিপোর্টে পরিষ্কার হবে। যদিও দুই কর্মীর একসঙ্গে মৃত্যুর ঘটনায় যথেষ্ট ভাবাচ্ছে “।