আবদুল হাই বাঁকুড়াঃ ১২ বছরের স্কুল পড়ুয়া নিজের হাতেই দেবী দুর্গার মূর্তি তৈরী করে পূজোর আয়োজন করছে বাঁকুড়া জেলার পাত্রসায়ের সিংহ পাড়ার সায়ন হাজরা।
কিন্তু কিভাবে শুরু এই ছোট্ট শিশুর এই পথ চলার? তা জানতে আমাদের পিছিয়ে যেতে হবে করোনা আবহে লক ডাউনের দিন গুলিতে। স্কুল বন্ধ, বাড়ি থেকে বাইরে যাওয়া নিষেধ। ফলে হাতে অফুরন্ত সময়। আর সেই সময়কে কাজে লাগিয়ে ছোট্ট হাতে খেলার ছলে শুরু হয়েছিল মাটি দিয়ে মূর্তি গড়া। কারণ বাড়িতে বেশ বড়ো করে দুর্গাপূজা হয়, হয় লক্ষ্মী, কালী, সরস্বতী পূজাও। একদম ছোটো থেকেই বাড়িতে মৃৎ শিল্পীর প্রতিমা তৈরী করা দেখেই এই বিষয়ে আগ্রহী হয়ে ওঠে সে-ও। ফলে আর থামা নেই। শুরু হয়ে যায় দেবী প্রতিমা তৈরীর খেলা।
পাত্রসায়ের বামিরা গুরুদাস ইন্সটিটিউশন এর পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র সায়ন এখন পড়াশোনার সাথে সাথে ছবি আঁকা আর বাজনা বাজাতেও সমান দক্ষ। আর সঙ্গে প্রতিমা গড়ার নেশা তো আছেই।
ছোট্ট সায়নের তৈরি মা দুর্গা, গণেশ, কার্তিক, লক্ষ্মী, সরস্বতী, বিশ্বকর্মা ইতিমধ্যে সাড়া ফেলে দিয়েছে এলাকায়। মাটি, খড়, রঙ, তুলি সব নিজেই জোগাড় করে নেয়। তারপর বানিয়ে ফেলে নিজের মনের মতো প্রতিমা। কখনো কখনো তার সময় জ্ঞান থাকে না, টানা ২ – ৩ ঘন্টা একনাগাড়ে বসে বানিয়ে ফেলে, এমনটাই জানানো হয়েছে পরিবার সূত্রে। তারপর ভালো করে শুকিয়ে তাতে খড়ি দেওয়া শেষে রঙের প্রলেপ। নিজের পকেটমানি থেকে কিনে আনে প্রতিমার জন্য চুল, অলংকার। নিজের মনের মতো করে সাজিয়ে নেয়, কারোর সাহায্য ছাড়া।
একেবারে প্রথমদিকে ছেলের এই কাজে সম্মতি ছিলনা বাড়ির লোকের। কিন্তু সায়নের এই প্রতিভা আর নেশা সায়নকে দাবিয়ে রাখতে পারে নি। এখন বাড়ির সবাই ভীষণ উৎসাহ দেয়। সায়নের এই প্রতিমা পৌঁছে যায় তার বন্ধুদের ও আত্মীয় বাড়িতেও।