নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদা: মালদাহের হরিশ্চন্দ্রপুরের পর এবারে আরো এক গ্রাম পঞ্চায়েতের দুর্নীতির তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ। মালদা জেলা শাসককে তদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের।
ইংলিশ বাজার ব্লকের অন্তর্গত ফুলবাড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রহিমা বিবির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, পুখুর খনন, রাস্তা তৈরি সহ একাধিক প্রকল্পে প্রায় ১২ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগ তুলে চলতি বছরে কলকাতা হাইকোর্টে একটি ১২মামলা দায়ের করেন পঞ্চায়েতের নির্দল সদস্য আরসি বিবির স্বামী আবদুল আরেফ। আর তার এই অভিযোগের ভিত্তিতে মহামান্য কলকাতা হাইকোর্ট ১৬ আগস্ট ২০২২ তারিখে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেন । তিনি অভিযোগ করেন, এনআরইজিএস প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি করেছেন তৃণমূল প্রধান। ভুয়ো স্কীম তৈরি করে একাধিক প্রকল্পের টাকা তুলেছেন। ফুলবাড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কাজ করা হয়েছে রতুয়া ২ নম্বর ব্লকের পুখুরিয়া এলাকায়। যা সম্পূর্ণ বেআইনি। তার পাশাপাশি ২০০ মিটারের মধ্যে একাধিক কমিউনিটি টয়লেট, জলাধার,প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা থেকে শুরু করে একাধিক প্রকল্পে লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি করেছেন তৃণমূল প্রধান। এই দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা করা হয়। সম্প্রতি
মহামান্য আদালত মালদা জেলা শাসককে ফুলবাড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা চাই এর সঠিক তদন্ত হোক।
অন্যদিকে এই বিষয়ে ফুলবাড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তাদের নামে স্কিম এসেছে। সেই স্কিমের কাজ না করেই টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। অথচ তারা জানেন না। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে ঘর দেওয়ার ফম ফিলাপ থেকে শুরু করে ঘর দেওয়ার নাম নাম করে দশ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে। অথচ এখনো পর্যন্ত তারা ঘর পাননি। রাস্তা হয়নি অথচ রাস্তার বরাদ্দ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে মানিকচকের গত বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী তথা মালদা জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক গৌড়চন্দ্র মন্ডল জানান, যেখানে তৃণমূল সেখানেই দুর্নীতি। তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েত গুলিতে দুর্নীতির আখড়া তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করছে তৃণমূল প্রধানরা। ফুলবাড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে সেই রকমই কোটি কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কলকাতা হাইকোর্ট সেই দুর্নীতি তদন্তের জন্য জেলা শাসকের নির্দেশ দিয়েছেন। তৃণমূল সরকার সাধারণ মানুষের জন্য নয়।
এই বিষয়ে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা কৃষ্ণেন্দু নারায়ন চৌধুরী জানান, মহামান্য আদালত দুর্নীতি তদন্তের জন্য জেলা শাসককে নির্দেশ দিয়েছেন। তদন্ত হোক। কোনটা সত্যি কোনটা মিথ্যা। তবে আমার মনে হয় সঠিক তদন্ত হলে দুধ কা দুধ পানি কা পানি হয়ে যাবে।
অন্যদিকে এই বিষয়ে ফুলবাড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের সাথে যোগাযোগ করা হলো তিনি কিছু বলতে চাননি। এই বিষয়ে প্রধানের স্বামী জাহিদুল সেখ জানান মৌখিক ভাবে জানান মানুষের জন্য কাজ করেছি। বিরোধীরা চক্রান্ত করে হাইকোর্টে মামলা করেছে উন্নয়ন বন্ধ করে রাখার জন্য।