নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদাঃ– দল ছাড়তেই অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের। নিজেদের মধ্যে মিষ্টিমুখ করে দলত্যাগী অঞ্চল সভাপতির কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। সাথে তোলা হলো একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ। যদিও এই সমগ্র ঘটনা নিয়ে ফের এলাকার বিধায়কের দিকে আঙুল তুললেন দলত্যাগী অঞ্চল সভাপতি। তীব্র কটাক্ষ বিজেপির। তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপানোতোর। দুই দিন আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে এবং জেলা সভাপতি কে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে দল ছেড়েছেন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের তুলসীহাটার তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মনোজ রাম। আর এদিন মনোজ রামের বিরুদ্ধে তৃণমূল নেতা দিল রোজের নেতৃত্বে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ওই অঞ্চলের তৃণমূলের শতাধিক নেতা-কর্মীরা। তুলসীহাটার বোড়ল বাজারে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। নিজেদের মধ্যে মিষ্টি-মুখ করে নেতা-কর্মী সমর্থকরা। কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয় মনোজ রামের। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করেন দীর্ঘদিন ধরেই মনোজ রাম বিজেপির সঙ্গে আতাত করে চলতেন। এমনকি তিনি এলাকা থেকে চাকরি এবং ঘর দেওয়ার নাম করে টাকা তুলেছেন। চাঁচল বিধানসভার বিধায়ক নিহাররঞ্জন ঘোষ তার এই কর্মের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। তাই বিধায়কের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে তিনি দল ছেড়েছেন। আর এই নিয়েই ক্ষুব্ধ ওই এলাকার তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। এমনকি তাদের হুঁশিয়ারি তাদের বিধায়কের নামে কটুক্তি করা হলে তারা ছেড়ে কথা বলবে না। এদিকে এই সমগ্র ঘটনা নিয়ে বিধায়ককে দায়ী করেছেন মনোজ রাম। বিধায়কের অঙ্গুলিলেহনে নেতা-কর্মীরা এরকম করছে বলে তার দাবি। সাথে আরেকবার তিনি দলের অভ্যন্তরের দুর্নীতি এবং এক নায়ক তন্ত্র নিয়ে তোপ দেগেছেন। ইংরেজবাজার পৌরসভার দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনেও তিনি খোঁচা দিয়েছেন বিধায়ককে। এদিকে এই ঘটনাকে তীব্র কটাক্ষ করেছে এলাকার বিজেপি নেতৃত্ব। দলত্যাগী তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি সঠিক কথা বলছেন বলে দাবি জেলা বিজেপির। আর গোটা ঘটনাকে ঘিরে তুঙ্গে উঠেছে তৃণমূল -বিজেপির রাজনৈতিক তরজা।
বিক্ষোভকারী তৃণমূল নেতা দিল রোজ বলেন, আমাদের অঞ্চল সভাপতি নিজেই দুর্নীতি করেছেন। বিজেপির সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রাখতেন। এদিকে বিধায়কের নামে মিথ্যা দোষারোপ করছেন। সেই জন্য আমরা আজ বিক্ষোভ প্রদর্শন করছি। আর ওনার দল ছাড়া আনন্দে মিষ্টি মুখ করে কুশপুতুল দাহ করলাম।
তুলসীহাটা অঞ্চলের তৃণমূলের সদস্য মানিক দাস বলেন, আমাদের বিধায়কের নামে মিথ্যা দোষারোপ করলে আমরা মানবো না। আর ওনার দল ছাড়াতে আমাদের দলে কোন রকম প্রভাব পড়বে না। উনি দল ছাড়তেই পারেন কিন্তু উনি আমাদের বিধায়ককে নিয়ে মিথ্যাচার করছেন।
দলত্যাগী মনোজ রাম বিধায়ক কে খোঁচা দিয়ে বলেন,যেহেতু আমি সব সত্যি কথার সামনে এনে দল ছেড়েছি তাই আমার ওপর রাগ। বিধায়ক এই সব করাচ্ছে। তাতে আমার কিছু যায় আসে না। যেটা সত্যি আমি সেটাই বলেছি।
বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য কিষাণ কেডিয়া বলেন, মনোজ রাম সত্যি কথাই বলেছেন। চাঁচল বিধানসভায় একজন পরিযায়ী বিধায়ককে আনা হয়েছে। তিনি মানুষের জন্য কোন কাজ করেন না। আর টাকার বিনিময়ে পদবন্টন তৃণমূলে নতুন কোন ঘটনা নয়।
তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি দলত্যাগ নিয়ে কয়েক দিন ধরেই সরগরম মালদার রাজনীতি। কারণ উনি একাধিক বিস্ফোরক অভিযোগ এনে দল ছেড়েছেন। তাই পঞ্চায়েত ভোটের আগে স্বাভাবিক ভাবে এই ঘটনায় অস্বস্তিতে ফেলছে শাসকদলকে। যদিও বাস্তবে এর প্রভাব কতটা পড়বে সেটা দেখার বিষয়।