মনিরুল হক, কোচবিহার: গলায় মোবাইল চার্জারের তার পেঁচিয়ে যুবক খুনের মূল অভিযুক্ত গ্রেপ্তার। গতকাল সকালে মাথাভাঙা থানার বেলতলা এলাকায় রাজ্য সড়কের পাশে শীতলখুচির নলগ্রাম এলাকার বাসিন্দা মনসুর আলি নামে ওই যুবকের দেহ উদ্ধার হয়। তদন্তে নেমে দেহ উদ্ধারের ১০ ঘণ্টার মধ্যে ওই খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে খুন হওয়া যুবকের মোটর সাইকেল এবং মোবাইল ফোন। গ্রেপ্তার হওয়া ওই যুবকের নাম জহিরুল মিয়াঁ। তাঁর বাড়িও শীতলখুচির নলগ্রাম এলাকায়। এদিন তাঁকে মাথাভাঙা আদালতে তোলার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে খুন হয়ে যাওয়া যুবক মুনসুর আলি তাঁর গোঁসাইয়ের হাটে থাকা দোকান বন্ধ করে মোটর সাইকেলে বাড়ির দিকে রওনা হয়। কিন্তু সেই রাতে সে আর বাড়ি ফেরে নি। বুধবার সকালে মাথাভাঙ্গার বেলতলা এলাকার রাজ্য সড়কের পাশ থেকে হাত-পা বাঁধা, গলায় মোবাইলের চার্জার দিয়ে পেঁচিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় মনসুর আলির দেহ উদ্ধার হয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। মাথাভাঙা থানার পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়ে দিয়েই খুনের কিনারা করতে তদন্ত শুরু করে। এর মধ্যেই পুলিশের কাছে তথ্য আসে মনসুরের মোটর সাইকেল এবং মোবাইল ফোন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু তাই নয়, দেহ উদ্ধারের হওয়ার সামান্য আগে মনসুরের মোবাইল থেকেই তাঁর পরিবারের এক সদস্যের কাছে ৮ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবি করা হয়। এরপরে পুলিশ মনসুরের মোবাইল লোকেশন টার্গেট করে তদন্ত শুরু করে। এরপরেই কোচবিহার কোতোয়ালি থানা এলাকায় মনসুরের মোবাইল টাওয়ার খুঁজে পায় পুলিশ। আর সেই সুত্র ধরেই তাঁকে গতকাল রাতেই গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হয় পুলিশ। তবে পুলিশের প্রাথমিক ধারনা, এই খুনের পিছনে শুধু গ্রেপ্তার হওয়া যুবক জহিরুল মিয়াঁ একা নয়, আরও কয়েকজন যুক্ত থাকতে পারে, পাশাপাশি শুধুমাত্র মোবাইল এবং বাইক ছিনতাই করার জন্যই কি ওই খুন না এর পিছনে আরও অন্য কোন উদ্দেশ্য রয়েছে, তা নিয়েও পুলিশ তদন্ত করছে। এদিন আদালতে তোলার পর জহিরুলকে পুলিশে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে বলেও জানা গিয়েছে।
মাথাভাঙ্গা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত ভার্মা জানান, নলগ্রামের যুবক খুনে ঘটনার তদন্তে নেমে কোচবিহার কোতোয়ালি থেকে জহিরুল মিয়া (২০) নামে নলগ্রামের এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে মনসুরের বাইক ও মোবাইল ফোন।কী উদ্দেশ্য নিয়ে খুন করা হয়েছে আর কে কে জড়িত আছে তা জানতে পুলিশ ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। খুনের দশ ঘণ্টার মধ্যে মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে সমর্থ্য হওয়ায় মাথাভাঙা পুলিশের বড়সড় সাফল্য বলে মনে করা হচ্ছে।